—ফাইল চিত্র।
মর্গের সামনের আলো-আঁধারিতে দাঁড়িয়ে দু’-তিন ফুট দূর থেকে ব্যাগে ভরা দেহটি দেখেছিলেন দুই ভাই। বি আর সিংহ রেল হাসপাতালে হাওড়ার কল্পনা ভকতের সঙ্গে রিজেন্ট পার্কের যে বৃদ্ধার দেহ বদল হয়েছে, তাঁর পরিজনেরাও বুঝে উঠতে পারছেন না ঘটনাটি ঘটল কী ভাবে!
শনাক্তকরণের ভুলের ফলেই মৃতদেহ বদল হয়েছে বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে কলকাতা পুরসভা, নারকেলডাঙা থানা, রেলকর্তা এবং হাওড়ার বৃদ্ধার পরিজনকে। যদিও তা মানতে নারাজ রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা, ওই বৃদ্ধার ছেলেরা। ছোট ছেলে শনিবার বলেন, ‘‘মর্গের সামনে আলো কম ছিল। আমরা যে দিক থেকে দেখছিলাম, মৃতদেহের মুখ তার উল্টো দিকে ঘুরে ছিল।’’ ওই ব্যক্তির দাবি, গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তাঁর মা মারা যান। সে সময়ে ওই বৃদ্ধার মুখ বাঁ দিকে ঘোরানো ছিল। মর্গে মৃতদেহ শনাক্ত করার সময়েও মুখ সে দিকেই ঘুরে থাকায় সন্দেহ হয়নি। তবে মৃতদেহে লাগানো কোনও কাগজ তাঁরা দেখেননি। ওই বৃদ্ধার বড় ছেলে বলছেন, ‘‘মৃতদেহ বার করে গাড়িতে তোলা থেকে শুরু করে সব কাজই করেছেন হাসপাতালের কর্মীরা। তাই নাম লেখা কাগজ রয়েছে কি না, তা খেয়াল করিনি। কাগজে নাম দেখেই নিশ্চয় কর্মীরা দেহ বার করেছিলেন। তা হলে তাঁদের ভুল হল কী করে? আমাদের কোনও কাগজ দেওয়া হয়নি।’’
অন্য দিকে আর এক বৃদ্ধা, হাওড়ার মহেন্দ্র ভট্টাচার্য রোডের কল্পনা ভকতের ছোট জামাই রাজীব দে বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতেই নারকেলডাঙা থানায় বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছি। হাওড়ার স্থানীয় থানাতেও জানাব।’’
দেহ বদল কী ভাবে হল, সেই ধোঁয়াশা কাটাতে ইতিমধ্যেই ওই দুই বৃদ্ধার পরিজনেদের থেকে নথি চেয়ে পাঠিয়েছেন বি আর সিংহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেখানকার মেডিক্যাল ডিরেক্টর দুলালচন্দ্র ভুঁইয়া বলেন, ‘‘চার জনের তদন্ত কমিটিকে মঙ্গলবারের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। দুই বৃদ্ধারই সরকারি পরিচয়পত্র, ছবি পাঠাতে বলা হয়েছে। মর্গে রাখা দেহের সঙ্গে তা মিলিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা।’’
হাসপাতাল সূত্রের খবর, রিজেন্ট পার্কের বৃদ্ধা গত ৩১ জুলাই মারা গেলেও তাঁর কোভিড পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে ৫ অগস্ট। সে দিন রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ মৃতদেহটি পুরসভার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। অন্য দিকে ৩ অগস্ট কল্পনাদেবী মারা যাওয়ার পরে তাঁর কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসে ৬ অগস্ট রাতে। পরের দিন দেহ নেওয়ার জন্য পরিজনদের ডাকা হয়েছিল। তখনই দেহ বদলের কথা প্রকাশ্যে আসে। হাসপাতালের মর্গে এখনও যে দেহটি রয়েছে, সেটি শনাক্ত করতে ডাকা হয়েছে কোভিডে মৃত ওই বৃদ্ধার দুই ছেলেকে। কিন্তু তাঁদের কথায়, ‘‘কোয়রান্টিনে রয়েছি। কী ভাবে সোমবার বাসে-ট্রেনে করে হাসপাতালে যাব জানি না। এখন অহেতুক আমাদের দোষারোপ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy