এক দিকে হেলমেট না পরে বেপরোয়া ভাবে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে শহরে দুর্ঘটনায় মৃত্যু মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। আর অন্য দিকে সেই অনিয়মকে কঠোর হাতে দমন করতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হচ্ছে খোদ পুলিশকেই। সোমবার বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ অনিয়ম ঠেকাতে গিয়ে শহরে ফের ট্র্যাফিক সার্জেন্টকে নিগ্রহ করার ঘটনা ঘটল। এ বার ঘটনাস্থল শরৎ বসু রোড। ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম গৌরব মিস্ত্রি। বাড়ি মনোহরপুকুর রোড এলাকায়।
ঠিক কী হয়েছিল এ দিন?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি স্কুটির পিছনে এক যুবককে বসিয়ে হাজরা থেকে আসছিলেন গৌরব। তখন শরৎ বসু রোডে ডিউটি করছিলেন সাউথ-ইস্ট ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট সৌরভ সরকার। হেলমেট ছাড়া স্কুটি চালানোর অভিযোগে গৌরবকে থামান ওই সার্জেন্ট। হেলমেট না পরার কারণ জানতে চাইলে সৌরভবাবুর সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেয় গৌরব। ট্র্যাফিক আইন মেনে জরিমানা করার জন্য রসিদ লিখতে থাকেন ওই সার্জেন্ট। তখনই গৌরব ফোন করে পাড়ার কয়েক জন যুবকদের ডেকে নেয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর পরে গোলমাল আরও বাড়তে থাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, আশপাশের এলাকা থেকে এক দল যুবক এসে জড়ো হয়। বচসা চরমে ওঠে। জরিমানা করার অপরাধে সৌরভবাবুকে ধাক্কাধাক্কি করা হয়। প্রকাশ্যেই নিগ্রহ করা হয়
তাঁকে। ইতিমধ্যে ট্র্যাফিক গার্ডে খবর গেলে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। কিন্তু ততক্ষণে এলাকা থেকে চম্পট দেয় ওই যুবকের দল। খবর দেওয়া হয় টালিগঞ্জ থানায়। দ্রুত ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এর পরেই দুপুরে প্রধান অভিযুক্ত গৌরবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অন্য অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
শহরে ট্র্যাফিক সার্জেন্টের প্রহৃত হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। বহু বার চালক বা আরোহী ট্র্যাফিক আইন লঙ্ঘনের প্রতিবাদ করায় প্রহৃত হতে হয়েছে পুলিশকর্মীদের। লালবাজারের একাংশের বক্তব্য, হেলমেট পরে মোটরবাইক চালানোর পিছনে শুধু আইন মানার বিষয়টি কাজ করে না। প্রত্যেকের নিরাপত্তার জন্যও সেটা খুবই প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘সেফ ড্রাইভ,
সেভ লাইফ’ কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্যও তাই। বড় রাস্তার গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থলগুলিতে নিয়মিত পথ সচেতনার প্রচারও চালায় ট্র্যাফিক পুলিশ। কিন্তু কোনও কিছুকেই পরোয়া করছেন না শহরের বেপরোয়া চালকদের একাংশ। আর তাঁদের বাগ মানাতে গিয়ে দিশেহারা পুলিশও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy