স্মার্ট হচ্ছে কলকাতার ফেরি সার্ভিস। মেট্রোর কায়দায় এ বার টোকেন চালুর ভাবনা রাজ্যের সরকারি জলপথ পরিবহণ বা ফেরি সার্ভিসে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেকের মধ্যেই পরীক্ষামূলক ভাবে দু’টি জেটি থেকে এই পরিষেবা চালু করার কথা ভাবা হয়েছে। সফল হলে ধাপে ধাপে হুগলি নদীর উপরে যাবতীয় জলপথ পরিবহণেই টোকেন পরিষেবা চালুর কথা ভাবা হচ্ছে।
প্রাথমিক ভাবে ঠিক করা হয়েছে, হাওড়া থেকে মিলেনিয়াম পার্ক এবং শিপিং জেটির মধ্যে যে ফেরি পরিষেবা চালু রয়েছে, আগামী মাসখানেকের মধ্যে তাতে পরীক্ষামূলক ভাবে টোকেন ব্যবস্থা চালু করা হবে। ঠিক করা হয়েছে যে, জেটিতে যেখানে টিকিট কাটা হয়, সেখান থেকে টিকিটের বদলে টোকেন দেওয়া হবে। এর পরে গ্যাংওয়ে থেকে জেটিতে যাওয়ার পথে টোকেন জমা দেওয়ার মেশিন বসানো থাকবে। ঠিক যে ভাবে মেট্রো স্টেশনে ঢোকার বা বেরনোর মুখে টোকেন জমা দেওযার মেশিন রাখা থাকে।
কেন এই ব্যবস্থা?
এ প্রসঙ্গে পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, মূলত টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে স্বচ্ছ্বতা আনতেই এই টোকেন ব্যবস্থা চালু করার কথা ভাবা হয়েছে। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ফেরি সার্ভিসে টিকিট বারবার ব্যবহার করা এবং টিকিট কাটার ক্ষেত্রে নজরদারি ব্যবস্থার যথেষ্ট অভাব ছিল। টোকেন ব্যবস্থা চালু হলে এ ধরনের সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।’’
কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় হুগলি নদীর উপরে ফেরি সার্ভিস মূলত পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগমের অধীনে। বর্তমানে কলকাতার তিনটি নিগম একসঙ্গে মিশে যাওয়ার পরে জলপথ পরিবহণও চলে এসেছে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের (ডব্লিউবিটিসি) অধীনে। দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, কলকাতা, হাওড়া এবং হুগলি জেলায় যে সব ফেরি চলাচল করে, তার বেশ কিছুটা সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলে। বাকিটা চালায় বেসরকারি লঞ্চ-মালিকদের নিয়ে গঠিত হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। দফতরের ওই কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক পরীক্ষা সফল হলে সমবায়ের ক্ষেত্রেও এ ধরনের টোকেন ব্যবহার চালুর কথা ভাবা হয়েছে।’’
তবে কেবলমাত্র টোকেন ব্যবস্থা চালু করেই এই বিষয়টি থেমে থাকবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন পরিবহণ-কর্তারা। এর পরে মেট্রো রেলের ধাঁচে স্মার্ট কার্ডও চালু করা হবে ফেরি সার্ভিসে। সরকারি বাসেও স্মার্ট কার্ড ব্যবস্থা এ বার চালু হওয়ার পথে। তার সঙ্গে সমন্বয় করেই ফেরি সার্ভিসের ক্ষেত্রেও স্মার্ট কার্ড ব্যবস্থা চালু করা হবে। ডব্লিউবিএসটিসি-র এক কর্তা বলেন, ‘‘নিগম থেকে এক জন যাত্রী মাত্র একটি স্মার্ট কার্ড কিনে তাতে টাকা ভরে নেবেন। এর পরে ওই একটি কার্ড দিয়েই সংশ্লিষ্ট ওই যাত্রী বাসে এবং লঞ্চে যাতায়াত করতে পারবেন।’’ জলপথ পরিবহণে নগদ লেনদেনও কমবে বলে দাবি করেন ওই কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy