প্রতীকী ছবি।
তার বয়স যখন ১১, তখন থেকেই তিন ‘তুতো’ দাদা তার উপরে নিয়মিত যৌন নির্যাতন চালাত। অভিযোগ এমনই। আরও অভিযোগ, মেয়েটির মা-বাবা কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পরে পালা করে দাদারা তাকে ধর্ষণও করত।। পাশাপাশি চলত জোর করে পর্নোগ্রাফি দেখানো এবং মারধর। এতেই শেষ নয়, কাউকে কিছু জানালে বোনকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিত তিন দাদা। মা-বাবা কাউকে কোনও দিন কিছু বলতে পারেনি ওই কিশোরী। লাগাতার ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত চলেছে এই নির্যাতন। শেষে ২৪ বছরে পৌঁছে এক বান্ধবীকে সব জানানোর পরে তিনি ওই তরুণীকে পুলিশের দ্বারস্থ হতে বলেন। শনিবার সেই বান্ধবীকে নিয়ে রিজেন্ট পার্ক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। তার ভিত্তিতে রবিবার তরুণীর তিন দাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগে তরুণী জানিয়েছেন, তিনি ছোট থেকেই যৌথ পরিবারে মানুষ। মা-বাবা তাঁকে বাড়িতে রেখে কাজে বেরিয়ে যেতেন। তিনি থাকতেন খুড়তুতো ও জেঠতুতো দাদাদের সঙ্গে। ২০০৭ সালে যখন তাঁর বয়স ১১, তখন বাড়ি ফাঁকা পেলেই দাদারা তাঁর উপরে যৌন নির্যাতন চালাত। চলত মারধর, পর্নোগ্রাফি দেখানোও। এমনকি বিষয়টি যাতে বড়দের কানে না পৌঁছয়, তার জন্য তাঁকে তিন দাদা মেরে ফেলারও হুমকি দিত বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তরুণী। এ ভাবেই টানা সাত বছর চলেছিল অত্যাচার। তরুণীর আরও অভিযোগ, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে নিগ্রহ বন্ধ হলেও পুরনো কথা কাউকে জানালে ফল ভাল হবে না বলেও জানিয়ে রেখেছিল দাদারা।
সম্প্রতি তরুণীর বান্ধবী পুরো ঘটনা জেনে তাঁকে থানায় যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে ভয় আর লজ্জা কাটিয়ে বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না ওই তরুণী। শেষে শনিবার তিনি রিজেন্ট পার্ক থানার দ্বারস্থ হন। অভিযোগ জমা নিয়ে রবিবার গ্রেফতার করা হয় তিন অভিযুক্তকে। ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয় নির্যাতিতা তরুণীর। এ দিনই ধৃতদের আদালতে তোলা হলে এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আজ, সোমবার তিন জনকে ফের পকসো আদালতে হাজির করা হবে।
অন্য দিকে, রিজেন্ট পার্ক থানা এলাকাতেই এক কিশোরীকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে তার জেঠুর বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রের খবর, বছর পনেরোর ওই কিশোরী অভিযোগে জানিয়েছে, তার বাবা পক্ষাঘাতে শয্যাশায়ী। কাকা-জেঠুর উপরেই সে এবং তার মা নির্ভরশীল। অভিযোগ, সম্প্রতি ওই কিশোরীর শরীরে একাধিক বার অশালীন ভাবে হাত দেয় তার জেঠু। এর পরেই তার এক দিদিকে পুরো বিষয়টি জানায় কিশোরী। তিনি সাহস জোগালে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, শুধু এ বারই নয়। এর আগেও একাধিক বার ভাইঝিকে যৌন হেনস্থা করেছে ওই ব্যক্তি। কিন্তু লোকলজ্জার ভয়ে কিশোরীর মা কাউকে ঘটনাটি জানাতে বারণ করেছিলেন। শুক্রবার ফের একই ঘটনা ঘটায় কিশোরীর ওই দিদি জোর করে তাকে থানায় নিয়ে যায়।
এমন ঘটনা অস্বাভাবিক নয় বলেই দাবি করেছেন রাজ্যের শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘যৌন নিগ্রহ বা হেনস্থার ৯৯ শতাংশই ঘটে থাকে পরিবারের মধ্যে। অনেকে বছরের পর বছর নিগ্রহের শিকার হয়েও স্রেফ পরিবারের সম্মানরক্ষার কথা ভেবে চুপ করে থাকেন। এমন উদাহরণ বাস্তবে প্রচুর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy