Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Omicron

Covid 19: আবার বাড়ছে করোনা, কেন সেটাই রহস্য, কূল পেত না ফেলু মিত্তিরের মগজাস্ত্রও

গবেষণাগারে সবার জিন পরীক্ষা করার মতো পরিকাঠামো আছে কি? যদি আক্রান্ত সকলের জিন পরীক্ষা না করা যায়, তাহলে কী ভাবে ওমিক্রন মোকাবিলা সম্ভব?

কেন সংক্রমণ বাড়ল, তা এখনও পর্যন্ত রহস্যই।

কেন সংক্রমণ বাড়ল, তা এখনও পর্যন্ত রহস্যই। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:২৭
Share: Save:

চলে যাওয়ার মুখে গিয়েও কেন আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে করোনা? কলকাতা-সহ বাংলায় ক্রমাগত বাড়ছে সংক্রমণ? মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজ্যে করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত ৭৫০-এরও বেশি মানুষ। যা সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ। ২৪ ঘণ্টা আগে যে সংখ্যা ছিল ৪৩৯। অর্থাৎ, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

কেন, তার কোনও নির্দিষ্ট জবাব চিকিৎসককুল বা সরকারের কাছে নেই। তাঁরা শুধু বলছেন, সংক্রমণ আরও বাড়বে। কেন সংক্রমণ বাড়ল, তা এখনও পর্যন্ত রহস্যই রয়েছে। যার কিনারা সম্ভবত ফেলু মিত্তিরের বিখ্যাত ‘মগজাস্ত্র’-ও করতে পারত না।

তবে কলকাতার সংক্রমণ বৃদ্ধির পিছনে নির্দিষ্ট কারণ না জানা গেলেও কয়েকটি তত্ত্ব রয়েছে। প্রথম, বড়দিনে পার্ক স্ট্রিটে জনসমুদ্র। যা দেখে গোটা দেশ স্তম্ভিত এবং আতঙ্কিত। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ জুড়ে যে ভাবে উৎসবে মেতেছে কলকাতা, তাতে করোনাবিধি পালনের কোনও বালাই ছিল না। সেখান থেকেই সংক্রমণ বেড়ে থাকতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছে। বড়দিনের উদ্‌যাপনে চেনা ছবি দেখা গিয়েছে শহরের অন্যান্য প্রমোদ সরণিতেও।

কিন্তু এর পাল্টা তত্ত্বও রয়েছে। যা বলছে, তেমন হলে তো দুর্গাপুজো এবং দীপাবলির সময়েও সংক্রমণ এমন ভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে পারত। কারণ, ওই উৎসবের সময়েও বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছিল। যেমন করা হয়েছে বড়দিন বা বর্ষশেষের সময়। কিন্তু তখন কাতারে কাতারে মানুষ রাস্তায় নামলেও সংক্রমণ বাড়েনি!

আবার মুম্বই বা রাজধানী দিল্লিতে বড়দিন এবং বর্ষশেষের উৎসবে রাশ টানা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও করোনার সংক্রমণ বাড়ছে! এবং বাড়ছে এমন একটা সময়ে, যখন মুম্বই এবং দিল্লিতে করোনার প্রকোপ অনেকটাই কমে এসেছিল। এর কোনও ব্যাখ্যা চিকিৎসাশাস্ত্রের যুক্তিতে পাওয়া যাচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, উৎসবের মরসুমে বেশকিছু মানুষের বেপরোয়া আচরণের প্রবণতা বেড়েছে। তার জেরেই গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় সংক্রমণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে থাকতে পারে।

নতুন সংক্রমণের পিছনে ওমিক্রন কতটা কাজ করছে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত রাজ্যে ওমিক্রন আক্রান্ত এগারো জন।

রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রের দাবি, কলকাতায় নতুন সংক্রমিতদের মধ্যে সকলেই ডেল্টায় সংক্রমিত। ওমিক্রন নয়। কিন্তু করোনার চিকিৎসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িতরা সেটা খুব সহজে মানতে চাইছেন না। তাঁদের বক্তব্য, যে কোনও করোনা আক্রান্ত ওমিক্রনে সংক্রমিত হয়েছেন কি না জানতে একমাত্র উপায় সংশ্লিষ্ট রোগীর জিন পরীক্ষা (পরিভাষায় ‘জেনোম সিক্যুয়েন্সিং’)। যা একমাত্র কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত গবেষণাগারে হয়। অনেকের প্রশ্ন, কেন্দ্রীয় সরকার কি আদৌ পর্যাপ্ত সংখ্যায় জিন পরীক্ষা করছে? অভিজ্ঞদের দাবি, বাংলায় জিন পরীক্ষার পরিকাঠামো-যুক্ত কল্যাণীর পরীক্ষাগারটি জিন পরীক্ষার জন্য সম্পূর্ণ ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। সেটিতে শুধুমাত্র বিদেশ-প্রত্যাগতদের কেউ করোনার উপসর্গ নিয়ে এলে তাঁর নমুনা পাঠানো হচ্ছে। অনেকের দাবি, কেন্দ্র ইচ্ছাকৃত কম জিন-পরীক্ষা করিয়ে সংক্রমণ-শঙ্কা ধামাচাপা দিতে চাইছে। কারণ, করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলে আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচটি রাজ্যের ভোটে তার প্রভাব পড়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

কিন্তু চলে যাওয়ার মুখে এসে করোনা কেন আবার বাড়তে শুরু করল, তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। করোনার নয়া রূপ ওমিক্রন তার আগের রূপ ডেল্টা বা ডেল্টা প্লাসের চেয়েও বেশি মারণক্ষমতা সম্পন্ন কি না, জানতে এখনও গবেষণা চলছে। কিন্তু ওমিক্রন যে ডেল্টার চেয়ে বহুগুণ বেশি ছোঁয়াচে, তা চিকিৎসকেরা মেনে নিচ্ছেন। সেই কারণেই সংক্রমণ বাড়ছে কি না, তা-ও বিচার্য। আবার যদি তেমনই হয়, তা হলে তো বলতে হয়, ওমিক্রন বিপুলবেগে ছড়িয়ে পড়েছে! সেই তত্ত্বেরও কোনও আনুষ্ঠানিক বা পরিসংখ্যানগত সমর্থন মিলছে না। রহস্য তাই ঘনীভূত। এতটাই যে, ফেলু মিত্তিরের মগজাস্ত্রও থই পেত কি না সন্দেহ।

অন্য বিষয়গুলি:

Omicron Covid 19 christmas New Year
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy