ফাইল চিত্র।
চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের তরফে সতর্কীকরণে ক্ষান্তি নেই। তা সত্ত্বেও ভোটপুজো থেকে বড়দিন— বিধি ভাঙার কোনও সুযোগই ছাড়েনি জনতার একটি বড় অংশ। ‘ফল’-ও মিলছে, যেমন মিলেছিল দুর্গাপুজো থেকে জগদ্ধাত্রী পুজো পর্যন্ত মহোৎসবে লাগামছাড়া মাতনের পরে। গত কয়েক দিন ধরে রাজ্যে দৈনিক করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৪০০ থেকে ৫০০-র ঘরে ঘোরাফেরা করলেও মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন জানাচ্ছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে কার্যত দ্বিগুণ হয়েছে। সংখ্যাটি এক ধাক্কায় পৌঁছে গিয়েছে ৭০০-র ঘরে (৭৫২ জন)। তা থেকেই প্রশ্ন উঠছে, সংক্রমণ কি আবার ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে?
দিন তিনেক পরেই বর্ষবরণ। বর্ষশেষের নিশিযাপন আর ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম দিনটি উদ্যাপনের তাগিদে কলকাতা ৩১ ডিসেম্বরের রাত থেকে শৃঙ্খলা ভেঙে, অতিমারি বিধি উড়িয়ে ওমিক্রনকে স্বাগত জানাতে হামলে পড়বে কি না, তা নিয়েও মহা উদ্বেগে আছেন চিকিৎসকেরা। আশঙ্কার কারণ হিসেবে তাঁদের বক্তব্য, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া বা সমাজমাধ্যম-সহ সর্বত্র প্রকাশিত বড়দিনে পার্ক স্ট্রিটের জনস্রোত এবং এক শ্রেণির মানুষের উন্মাদনাই তো দেখিয়ে দিয়েছে, কোভিড বিধি কী ভাবে ফুৎকারে উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব!
ওমিক্রন পশ্চিমবঙ্গ-সহ সারা দেশে থাবা বসাতে থাকায় বার বার বিধি মানার কথা বলে স্বাস্থ্য শিবির মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু বছর শেষের উৎসবে প্রশাসন রাশ আলগা করার কারণেই এক শ্রেণির মানুষের বেপরোয়া আচরণের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে মানুষের আত্মিক সচেতনতা ও বোধের উপরেই ভরসা রাখতে চাইছেন চিকিৎসকদের একাংশ। নতুন বছরের আনন্দ ষোলো আনা অনুভব-উপভোগ করেও পথে নেমে ভিড় করে উচ্ছ্বাস প্রকাশে লাগাম টানারই আবেদন জানাচ্ছেন তাঁরা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পাঁচ জন। আর কারও খোঁজ মেলেনি, যাঁকে ওমিক্রনে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা যায়। ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যুবকের আজ, বুধবার পুনরায় কোভিড পরীক্ষা করা হবে। সেই পরীক্ষার রিপোর্টও যদি নেগেটিভ আসে, তা হলে তাঁকে ছুটি দেওয়া হবে বলেই সূত্রের খবর।
কোভিড টিকাকরণের নতুন পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, সেই বিষয়ে এ দিন সব রাজ্যের সঙ্গে বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। নিজস্ব ব্যবস্থাপনা প্রস্তুত রাখার প্রস্তুতি শুরু করেছে পশ্চিমবঙ্গও। স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, স্কুলগুলির সঙ্গে আলোচনা করেই ১৫-১৮ বছর বয়সিদের তালিকা তৈরি করা হবে। কলেজের মতোই স্কুলের কাছাকাছি হাসপাতালের সঙ্গে সেগুলিকে যুক্ত করা হবে টিকাকরণের জন্য। আবার স্কুলে গিয়েও দেওয়া হতে পারে টিকা। কিংবা যে-সব কেন্দ্রে দু’টি ডোজ় এবং দু’রকমের টিকাই দেওয়া হচ্ছে, সেখানে ওই বয়সিদের জন্য এবং বয়স্কদের জন্য নির্দিষ্ট লাইন বা স্লট বুক করার বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। কয়েক দিনের মধ্যে এই সব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy