বিধাননগর পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
অশান্তির কাঁটা জিইয়ে রেখেই মুলতুবি হয়ে গেল বিধাননগর পুরসভার বোর্ডের বৈঠক।
গত জুলাইয়ে বোর্ডের বৈঠকে কার্যবিবরণীর অংশবিশেষ বাদ পড়েছিল। তা নিয়ে বুধবারের বৈঠকে পুরপ্রতিনিধিদের মধ্যে বাদানুবাদের আশঙ্কা তৈরি হয়। সূত্রের খবর, শেষ মুহূর্তে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যুযুধান পুরপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেন, যাতে বোর্ডের বৈঠকে কোনও বিতর্কিত আলোচনা না হয়। তার পরেও বৈঠক শুরুর আধ ঘণ্টার মধ্যেই তা মুলতুবি হয়ে গেল। সূত্রের খবর, পুরপ্রতিনিধিদের একাংশ কার্যবিবরণী থেকে বক্তব্যের অংশ (প্যারা) বাদ যাওয়ার বিষয়ে পরে কথা বলতে চান। তার পরেই মুলতুবি হয়ে যায় এ দিনের বৈঠক। আগামী ১ অক্টোবর ফের বৈঠক হবে বলে স্থির হয়েছে।
তবে তার আগে ফিরহাদ বিধাননগরের নেতৃত্বদের সঙ্গে কথা বলতে চান বলে খবর। পুরপ্রতিনিধিদের দলাদলি নিয়ে ক্ষুব্ধ পুরমন্ত্রীও। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওঁদের সঙ্গে বসে কথা বলব। ওঁদের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।’’
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনে বিধাননগর পুর এলাকায় তৃণমূলের হারের পরে চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত প্রকাশ্যেই মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান। জুলাই মাসের শেষে বোর্ডের বৈঠকে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি প্রসেনজিৎ নাগ মন্ত্রগুপ্তির শপথভঙ্গের অভিযোগ আনেন সব্যসাচীর বিরুদ্ধে। তাঁকে সমর্থন করেন মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তী-সহ রাজারহাটের একাধিক পুরপ্রতিনিধি। বুধবারের বৈঠকে ওই অভিযোগের উত্তর দেওয়ার কথা ছিল সব্যসাচীর— এমনটাই দাবি অভিযোগকারীদের। কিন্তু বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে শপথভঙ্গের অংশটি বাদ দেওয়াতেই ক্ষুব্ধ হন ওই পুরপ্রতিনিধিরা। বিষয়টি নিয়মবিরুদ্ধ বলে প্রসেনজিৎ চিঠিও দেন চেয়ারম্যান সব্যসাচীকে।
এ নিয়ে বৈঠকে তর্ক-বিতর্ক বাধতে পারে বলে আগেই খবর রটেছিল। সূত্রের খবর, তা কানে যেতেই পুরমন্ত্রী উদ্যোগী হয়ে বিধাননগরের পুর নেতৃত্বকে আলোচনায় ডাকবেন বলে জানান। আজ, বৃহস্পতিবার তা হওয়ার কথা। কিন্তু আগামী বৈঠকেও বক্তব্যের অংশবিশেষ বাদ যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনার দাবিতে অনড় পুরপ্রতিনিধিদের অনেকেই।
উল্লেখ্য, বিধাননগরের মেয়র পদে ইস্তফা দিয়ে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে বিধাননগর কেন্দ্রে বিজেপির টিকিটে রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর বিরুদ্ধে লড়েন সব্যসাচী। যাঁদের রাজনৈতিক সম্পর্ক বরাবরই টানাপড়েনযুক্ত। পরে সব্যসাচী তৃণমূলে ফিরে আসেন। তা নিয়ে বিধাননগরের দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। সব্যসাচী আবার ২০১১-এ নিউ টাউনে তৎকালীন সিপিএমে থাকা তাপস চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে বিধায়ক হন। ২০১৫ সালে তাপসও তৃণমূলে আসেন, বিধাননগরের ডেপুটি মেয়রও হন। বর্তমানে তিনি নিউ টাউনের তৃণমূল বিধায়ক। কিন্তু তাপসের অন্তর্ভুক্তি কখনও মেনে নেননি সব্যসাচী। এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘‘তিন নেতার অনুগামী পুরপ্রতিনিধিদের মধ্যে গোলমাল চলছে। সকলের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy