Advertisement
E-Paper

অভিযোগ পেয়ে নয়, আগুন লাগায় ভাঙা হল অবৈধ নির্মাণ

দু’ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। স্থানীয়দের প্রশ্ন, দু’টি পেট্রল পাম্পের কাছাকাছি বহুতল, অথচ, পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা কেন সেখানে থাকবে না?

An image of the fire accident

এই বহুতলের একতলায় থাকা দোকানের অস্থায়ী সম্প্রসারণ থেকেই সে দিন আগুন লেগে তা ছড়িয়েছিল। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৩ ০৭:০৫
Share
Save

বহুতলের কাছে দু’-দু’টি পেট্রল পাম্প। সেই বহুতলে আগুন লেগে একতলায় থাকা দোকান ও দোতলার গুদাম ভস্মীভূত হয়ে যায় গত রবিবার, ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায়। ক্ষতি হয় তেতলার অংশেরও। আটকে পড়েন বহুতলের বাসিন্দারা। মইয়ের সাহায্যে তাঁদের উদ্ধার করেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। ওই অগ্নিকাণ্ডে কেউ হতাহত না হলেও আতঙ্ক বাড়িয়েছিল জোড়া পেট্রল পাম্প।

দু’ঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। স্থানীয়দের প্রশ্ন, দু’টি পেট্রল পাম্পের কাছাকাছি বহুতল, অথচ, পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা কেন সেখানে থাকবে না? ঘিঞ্জি এলাকায় এত কাছাকাছি একাধিক পেট্রল পাম্প থাকা নিয়েও আপত্তি অনেকের। দমকলের এক কর্তা জানাচ্ছেন, কোথাও বহুতলের আগেই পেট্রল পাম্প তৈরি হয়ে রয়েছে। কোথাও উল্টোটা। পেট্রল পাম্পের ক্ষেত্রে ‘পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি অর্গানাইজ়েশন’ (পেসো)-এর সুপারিশ দেখে দমকল দফতর ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (এনওসি) দেয়। বহুতলের ক্ষেত্রে পেট্রল পাম্পের সঙ্গে সেটির দূরত্ব, অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা-সহ বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে এনওসি দেওয়া হয়।

সূত্রের খবর, ওই এলাকায় পেট্রল পাম্প তৈরি হয়েছিল বহুতলের আগেই। সে ক্ষেত্রে পেট্রল পাম্পের কাছাকাছি জমিতে বহুতল নির্মাণের অনুমতি দেওয়ার সময়ে বিষয়টি কি দেখা হয়েছিল? এর উত্তর মেলেনি দক্ষিণ দমদম পুর প্রশাসনের থেকে। আর দমকল জানাচ্ছে, প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের মতোই এই ঘটনাতেও তদন্ত করা হচ্ছে।

ওই বহুতলের একতলায় থাকা দোকানের অস্থায়ী সম্প্রসারণ থেকেই সে দিন আগুন লেগে তা ছড়িয়েছিল। ওই অস্থায়ী কাঠামো নিয়েও অভিযোগ বিস্তর। এর জন্যই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে হিমশিম খেতে হয় দমকলকর্মীদের। দমকলের দাবি, দোকান কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও উত্তর মেলেনি। আরও অভিযোগ, বহুতলের আপৎকালীন বেরোনোর পথ আটকে ছিল জিনিসের স্তূপ। বহুতলের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থাও প্রায় নিষ্ক্রিয় বলেই দাবি। এমনই অভিযোগ পেয়ে দক্ষিণ দমদম পুর প্রশাসন মঙ্গলবার দোকানের সম্প্রসারিত অংশ ভেঙে দেয়। অর্থাৎ, অনিয়মের কথা পুরসভাও মেনে নিয়েছে।

প্রশ্ন, এই অনিয়ম আগে কেন নজরে আসেনি বা কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি? অথচ বহুতলের ওই দোকান নিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ আগেই জানানো হয়েছিল বলে দাবি করছেন বাসিন্দারা। দমকলমন্ত্রী অবশ্য এমন অভিযোগের প্রাপ্তি স্বীকার করেননি। পুর কর্তৃপক্ষও কিছু জানাতে চাননি।

অভিযোগ, ঘিঞ্জি দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় এমন সমস্যা বহু জায়গাতেই আছে। কিন্তু, পুর প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে না বলেই দাবি। পুরসভার এক আধিকারিকের যুক্তি, অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখার মতো পরিকাঠামো পুরসভার নেই। ফলে অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ছে নির্মাণ। এত কিছুর প্রেক্ষিতে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর দাবি, ‘‘দুর্ঘটনা রোধে ফায়ার অডিট হচ্ছে। অগ্নি-নির্বাপণ বিধি মানা হচ্ছে কি না, তা দেখা হচ্ছে। বাঙুরের ঘটনাতেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Fire Accident Illegal Construction South Dum Dum Municipality

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}