ফাইল ছবি
বন্ধুরা যাতে জোয়ারের টানে ভেসে না যায়, তার জন্য গঙ্গায় নেমে তাদের পাড়ে উঠে আসতে সাহায্য করছিল সে। কিন্তু তার নিজেরই আর পাড়ে ওঠা হল না। গঙ্গায় তলিয়ে গেল ওই কিশোর। তার নাম অঙ্কিত সিংহ (১৬)। বাড়ি হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার ভৈরব দত্ত লেনে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত দফায় দফায় তল্লাশি চালিয়েও ওই কিশোরের সন্ধান মেলেনি।
সোমবার সন্ধ্যায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে উত্তর কলকাতার নিমতলার ভূতনাথ ঘাটে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাড়ার পুজোর জন্য গঙ্গাজল নিতে ওই দিন ১০-১২ জন বন্ধুর সঙ্গে ভূতনাথ ঘাটে এসেছিল অঙ্কিত। সঙ্গে ছিল তার দাদা রোহন। স্থানীয় বাসিন্দাদের পুজোর জন্য জল নেওয়া হয়ে গেলে পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে অঙ্কিতও স্নান করতে নামে। তখন গঙ্গায় জোয়ার চলছিল। অঙ্কিত সাঁতার জানায় তড়িঘড়ি উঠে এলেও তার অন্য বন্ধুরা অনেকে সাঁতার না জানায় গঙ্গা থেকে উঠতে পারছিল না। সে কারণে ওই কিশোর ফের নদীতে নেমে তাদের পাড়ে উঠতে সাহায্য করে।
সেই সময়ে হঠাৎই বন্ধুরা লক্ষ করে, অঙ্কিত নিজে হাবুডুবু খাচ্ছে। আচমকাই সে তলিয়ে যায়। বন্ধুরা চিৎকার শুরু করলে ছুটে আসেন আশপাশের লোকজন। জলে নেমে শুরু হয় অঙ্কিতের খোঁজ। কিন্তু তার সন্ধান মেলেনি। অঙ্কিতের এক বন্ধু বলে, ‘‘সাঁতার জানা সত্ত্বেও ও কী ভাবে তলিয়ে গেল, ভাবতেই পারছি না!’’
গঙ্গায় দীর্ঘদিন ধরে লাইফ সেভারের কাজ করছেন ভোলানাথ পাল। কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর হয়ে ডুবুরির ভূমিকাও পালন করেছেন তিনি। ভোলানাথ বলেন, ‘‘জোয়ার চলাকালীন গঙ্গায় স্নান করতে নামা সব সময়ে বিপজ্জনক।সাঁতার জানা সত্ত্বেও জোয়ারের টানে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। জোয়ার থাকলে গঙ্গায় না নামার জন্য আমরা বারবার সতর্ক করি। তার পরেও অনেকে সচেতন হচ্ছেন না।’’
এ দিকে, ঘটনার খবর জানাজানি হতেই অঙ্কিতের পাড়ায় নেমেছে শোকের ছায়া। মঙ্গলবার ভৈরব দত্ত লেনে তার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ভিড় করেছেন পড়শিরা। তাঁরা জানান, রোহন ও অঙ্কিতের মা-বাবা মারা গিয়েছেন। দুই ভাই থাকে মামা-মামিমার কাছে।সালকিয়া বিক্রম বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ত অঙ্কিত। তার দাদা রোহন বলে, ‘‘ভাই যে হেতু ভাল সাঁতার জানত, তাই জোয়ার আসার পরে সবাইকে সাহায্য করেছিল পাড়ে ওঠার জন্য। শেষে নিজেই জোয়ারের তোড়ে ভেসে গেল আমার চোখের সামনে।’’
অঙ্কিতের মামা টিঙ্কু সিংহ বলেন, ‘‘ঘটনার দিন থেকে আমরা পুলিশের কাছে বার বার আবেদন জানিয়েছি ওকে খোঁজার জন্য। কিন্তু এখনও ভাগ্নের খোঁজ মেলেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy