বার-বৃদ্ধি: সল্টলেকের সেই পানশালা। নিজস্ব চিত্র
শনিবার সারা রাত টহল দেওয়া হয়েছে — এটা পুলিশের দাবি। আর সল্টলেকের ওই পাঁচ নম্বর সেক্টরেই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শনিবার সারা রাত ধরে চলেছে একটি পানশালা — এটা বাস্তব।
সল্টলেকের সেই পানশালাতেই শনিবার শেষ রাতে দু’দল মত্ত যুবকের মধ্যে ঝামেলা মারপিট পর্যন্ত গড়ায়। এক যুবককে ধরে বেধড়ক মারধর করা হয়। এবং রবিবার কাক ভোরে তাঁরা সেখান থেকে সুবিধা মতো পালিয়েও যায়। বিষয়টি যখন ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানা পর্যন্ত পৌঁছয়, তখনই পুলিশ জানতে পারে যে, তাদের নাকের ডগায় বসে সারা রাত ধরে মারপিট হয়েছে।
তখনও জানা যায়নি সারারাত মদ বিক্রির কথা। নাইট ক্লাবে পুলিশ পৌঁছনোর পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চায়। সেই ফুটেজ দেখে এবং পানশালার কর্মীদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে সারা রাত সেখানে মদ বিক্রিও হয়েছে।
এই ঘটনায় স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের টহলদারি নিয়ে। বিধাননগর পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, সারা রাত মদ বিক্রির কথা আগে কেন জানা যায়নি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশকর্তাদের নির্দেশে ওই পানশালা ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। খোঁজ চলছে ওই পানশালার মালিকের। গোলমালে যুক্তদের খোঁজেও শুরু হয়েছে তল্লাশি।
রবিবার ঠিক কী ঘটেছিল ওই পানশালায়?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার শেষ রাতে যুবক-যুবতীদের দু’টি দল ওই পানশালায় ঢুকেছিল। দু’টি দলই একে অপরের পূর্ব পরিচিত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে কলকাতার ইলিয়ট লেনের বাসিন্দা জোহেব খান নামে এক যুবকের সঙ্গে এক যুবতী ছিলেন। অভিযোগ, ওই যুবতীর প্রতি কয়েক জন যুবকের কটূক্তি থেকেই গোলমালের সূচনা। পরে তা থেকে হাতাহাতি শুরু হয়। জোহেবকে যথেচ্ছ লাথি, ঘুষির পরে তাঁর মাথায় ফুলের টব দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। তার পরে দু’টি দলই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। আহত জোহেবকে একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পানশালায় যখন এই হাতাহাতি হয়, তখন কর্তৃপক্ষের তরফে কেন পুলিশকে জানানো হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ কর্তাদের কথায়, পানশালাটি বেআইনি ভাবে, পুলিশকে লুকিয়ে সারা রাত ধরে মদ বিক্রি করছিল বলেই গোলমালের খবর চেপে দিতে চেয়েছিল।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, এই পানশালা নিয়ে এর আগেও একাধিক বার নানা রকম অভিযোগ উঠেছে। ওই ক্লাবের কাছেই এক তরুণীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে রাতভর যৌন হেনস্থার ঘটনাও ঘটেছিল। একই পুলিশ প্রশাসন যদি রাজারহাট থেকে বাগুইআটি পানশালার দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তবে সল্টলেকে কেন পারছে না, এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। এটা স্রেফ নজরদারির গাফিলতি কি না, তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন পুলিশকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy