প্রতীকী ছবি।
গ্রেফতার হওয়া গর্ভদাত্রী মায়ের শিশু কোথায়?
সরকারি আইনজীবীর দাবি, পরীক্ষায় জানা গিয়েছে ওই গর্ভদাত্রী মা (সারোগেট মাদার) বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা নন। তাঁর প্রসবের সময় ছিল দু’ মাস আগে। ফলে প্রশ্ন উঠছে সেই সন্তান এখন কোথায়?
গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা ওই তরুণীকে গ্রেফতার করেছিল নিউ আলিপুর থানার পুলিশ। রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ের বাসিন্দা এক দম্পতি সন্তানের জন্য তাঁরা ওই তরুণীর গর্ভ ভাড়া করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, টাকা নেওয়ার পরে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় উধাও হয়ে যান ওই তরুণী। তাঁর তখন চিকিৎসা চলছিল। এই অবস্থায় তদন্তকারীরা মনে করছেন তরুণীর সন্তান কোথায় তার উপরে তদন্তের অভিমুখ কোন দিকে যাবে তা অনেকটা নির্ভর করছে। তরুণীকে জেরা করেও প্রশ্নের উত্তর পাননি তাঁরা। আদালতের নির্দেশে আপাতত পুলিশি হেফাজতে আছেন ওই তরুণী। ঘটনা নিয়ে পুলিশও মুখে এক রকম কুলুপ এঁটেছে।
শনিবার সরকারি আইনজীবী সৌরীন ঘোষাল বলেন, ‘‘বাচ্চাটিকে নষ্ট করা হল, না কি বিক্রি করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে এই ঘটনায় বড় কোনও চক্র কাজ করছে। দম্পতি যে আট জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁদের প্রত্যেকের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে হবে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের জুলাইয়ে ওই দম্পতি নিউ আলিপুরের একটি আইভিএফ ক্লিনিকে যান। সেখানকার এক মহিলা চিকিৎসকের মাধ্যমে ওই তরুণীর খোঁজ পান ওই দম্পতি। তাঁদের আইনজীবী তীর্থঙ্কর রায় বলেন, ‘‘ওই চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই চুক্তি হয়েছিল ওই তরুণী গর্ভদাত্রী মা হবেন। ওই মহিলা চিকিৎসকের পরামর্শেই আমার মক্কেলরা ভবানীপুরের রমেশ মিত্র রোডের একটি আইভিএফ ক্লিনিকে গিয়েছিলেন। সেখানেই শুরু হয়েছিল সারোগেসি প্রক্রিয়া। ক্লিনিকের মাধ্যমে হরিদেবপুরের একটি হোমে রেখে তরুণীর চিকিৎসা চলছিল।’’
অভিযোগ, গত সেপ্টেম্বরে প্রথম ওই তরুণী সাত দিনের জন্য উধাও হয়ে যান। পরে অবশ্য ফিরেও আসেন। ফের ডিসেম্বরে তিনি পালান। দম্পতির আইনজীবীর অভিযোগ, ‘‘তরুণী পালিয়ে গেলেও তাঁকে ফেরাতে ওই চিকিৎসক-সহ অভিযুক্ত আট জন কোনও ব্যবস্থা নেননি। উল্টে তাঁরা দম্পতিকে অতিরিক্ত দু’লক্ষ টাকার বিনিময়ে একটি শিশু কেনার প্ররোচনা দেন। ওঁরা কেউই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। আমাদের অনুমান, ওই চিকিৎসকের ক্লিনিকে বাচ্চা কেনাবেচার বেআইনি ব্যবসা চলছে।’’
যদিও পাল্টা ওই মহিলা চিকিৎসকের দাবি, ‘‘আমায় ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। আমার তত্ত্বাবধানে কাজ হচ্ছিল ঠিকই। কিন্তু গর্ভদাত্রী মা পালিয়ে গেলে আমার কী করার আছে? ধৃতের কঠোর শাস্তি হোক এটাই চাই।’’
ডিসেম্বরের পরে প্রায় এক মাস ওই সারোগেট মায়ের কোনও হদিস না মেলায় ওই দম্পতি গত জানুয়ারিতে ভবানীপুর থানায় আইভিএফ বিশেষজ্ঞ ওই মহিলা চিকিৎসক-সহ মোট আট জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy