Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Calcutta Medical College and Hospital

চলছে অচলাবস্থা, মেডিক্যালের অনশন মঞ্চে গিয়ে কথা শিক্ষক-চিকিৎসকদের

কলেজ কর্তৃপক্ষ শুক্রবারও জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ছাত্র সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ফলে, কলকাতা মেডিক্যালের এই জট কবে কাটবে, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:০২
Share: Save:

কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি এখনও। অগত্যা অনশনের মাধ্যমেই শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রইলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। অন্য দিকে, কলেজ কর্তৃপক্ষ শুক্রবারও জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ছাত্র সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব নয়। ফলে, কলকাতা মেডিক্যালের এই জট কবে কাটবে, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে।

প্রথমে প্রায় ৩৪ ঘণ্টা ঘেরাও। তার পরে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে পাঁচ জন পড়ুয়া অনশন শুরু করেন অধ্যক্ষের অফিস লাগোয়া বারান্দায়। এ দিনও তা চলেছে। সূত্রের খবর, বিকেল পাঁচটার পরে অধ্যক্ষের অফিসের মূল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে, এখন যে হেতু পড়ুয়াদের অনশন আন্দোলন চলছে, তাই তাঁদের সুরক্ষায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে কলেজের তরফে। অন্য দিকে, নিজেদের গোপনীয়তা বজায় রাখতে বারান্দার দিকে থাকা সিসি ক্যামেরা এ দিন কালো কাপড়ে ঢেকে দিয়েছেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বসে যখন তাঁরা ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করেন, সেই সময়কার সিসি ক্যামেরার ছবি সর্বসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধ্যক্ষের ঘরের ভিতরে তাঁদের উপরে শিক্ষক-চিকিৎসকদের আক্রমণের ছবি সামনে আনা হচ্ছে না।

পড়ুয়াদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন বিকেলে কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক বসে। পরে অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রতিদিনই স্বাস্থ্য ভবনকে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। পুরো বিষয়টি আজ কলেজ কাউন্সিলের সামনেও বলা হল। সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রতিদিনই শিক্ষক-চিকিৎসকেরা অনশন মঞ্চে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলবেন, বোঝাবেন।’’ নির্বাচন ছাড়াও পড়ুয়াদের আরও দু’টি দাবি রয়েছে। তা হল, কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার কার নির্দেশে তিন ঘণ্টা বন্ধ ছিল এবং অন্যান্য বিভাগেও পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছিল কেন, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। এবং যে শিক্ষক-চিকিৎসক পড়ুয়াদের গলা টিপে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছেন, তাঁকে শাস্তি দিতে হবে।

এ দিন অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘পরিষেবা বন্ধের বিষয়ে তদন্ত করতে সাত জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবারের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি। পড়ুয়াদের নিগ্রহের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি হয়েছে। পুলিশ ফাঁড়ি থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজও চাওয়া হয়েছে। এই দু’টি ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে। কিন্তু নির্বাচনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য ভবন।’’

কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকের পরে কয়েক জন শিক্ষক-চিকিৎসক অনশন মঞ্চে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু পড়ুয়ারা কোনও কথা মানতে রাজি হননি। তাঁদের তরফে অনিকেত কর বলেন, ‘‘স্যরেরা বলছেন, কলেজ কাউন্সিলে সকলেই নির্বাচনের দাবি মেনে নিয়েছেন। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না মিললে কিছু করার নেই। আমরা বুঝতে পারছি না, সেই অদৃশ্য কর্তৃপক্ষ কে? কলেজ কাউন্সিলে ছাত্রদের কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। তাই বৈঠকের কথা মানছি না।’’

মনোনীত স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব খারিজ করেন পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের নিয়মে বলা রয়েছে, কোনও রাজ্যে যদি রাজনৈতিক কারণে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়, তখনই সাময়িক ভাবে মনোনীত স্টুডেন্টস কাউন্সিল গঠন করা যায়। কিন্তু কলকাতা বা রাজ্যে তেমন পরিস্থিতি নয়। তাই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta Medical College and Hospital Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE