কাফিল খান ফাইল চিত্র।
চারটি বাক্য বদলে দিয়েছে তাঁর জীবন।
‘তু ডঃ কাফিল হ্যায়?’
‘তু নে সিলিন্ডারস কা অ্যারেঞ্জমেন্ট কিয়া থা?’
‘তোহ তু সোচতা হ্যায় সিলিন্ডারস লা কে তু হিরো বন জায়েগা?’
‘দেখতা হুঁ তুঝে...’
এর পরবর্তী ঘটনাক্রম বছর ছত্রিশের এক শিশুরোগ চিকিৎসককে তাঁর পেশা থেকে বহু দূরে— কখনও কাঠগড়ায়, কখনও বা গরাদের পিছনে ঠেলে দিয়েছে। নিজের লেখায় এমনটাই দাবি সেই চিকিৎসকের। অথচ তার আগে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বাবা রাঘব দাস (বি আর ডি) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ চিকিৎসক কাফিল খানের জীবন ছিল রাজনীতি থেকে বহু দূরে, জানাচ্ছেন স্বয়ং লেখক।
কাফিলের কথায়, “আমার জীবনে রাজনীতি মেশে ২০১৭ সালের ১০ অগস্টের তিন দিন পরে।” রাজ্য সরকার পরিচালিত বি আর ডি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগীদের জন্য সরবরাহ করা তরল অক্সিজেনের অভাবে পর পর শিশু-মৃত্যুর কথা তত দিনে গোটা দেশ জেনে গিয়েছে। ওয়ার্ড আর আইসিইউ-তে ভর্তি শিশুদের মৃত্যু ঠেকাতে ঘটনার রাতেই সতীর্থদের নিয়ে কী ভাবে কাজে নেমেছিলেন তিনি? কী ভাবে ৫৪ ঘণ্টায় তাঁরা জোগাড় করেছিলেন ৫০০টি সিলিন্ডার? তা সত্ত্বেও অক্সিজেনের অভাবে খাবি খেয়ে মারা যায় ৬৩টি শিশু। ছোট্ট দেহগুলি নিয়েও কী ভাবে চলছিল রাজনীতি? কাফিলের কলমে সে সব উঠে এসেছে ‘দ্য গোরক্ষপুর হসপিটাল ট্র্যাজেডি’ নামক বইটিতে।
১৩ অগস্ট, সকাল ৭টা। ফোন বেজে উঠল কাফিলের। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, ‘মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ পরিদর্শনে আসছেন। তাড়াতাড়ি আসুন।’ প্রাতরাশ সেরে হাসপাতালে পৌঁছন কাফিল। সকাল সাড়ে ৮টা। সাংবাদিকদের হাতছানি, শয়ে শয়ে ক্যামেরার শাটারের শব্দ এড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে তখন সেখানে উত্তাল উপস্থিতি বিরোধীদের। কাফিলের চোখে পড়ে, এক রাজনৈতিক নেতার তত্ত্বাবধানে হাসপাতালে মহড়া চলছে। রোগীর অভিভাবক, তাঁদের সম্ভাব্য উত্তর, ওষুধের জোগান, কর্মী আনানো, পিকু-র পরিচ্ছন্নতা থেকে বর্জ্যের সাফাই— সব রকম ব্যবস্থাপনাই ছিল সেই মহড়ার অঙ্গ।
ছাপার অক্ষরে সে সব ধরা রয়েছে আত্মজীবনীমূলক বইটিতে। যেখানে উঠে এসেছে কাফিলের সঙ্গে পরিবারের সম্পর্কের ব্যক্তিগত টুকরো কথাও। কাফিলের দাবি, বইয়ে থাকছে অসংখ্য প্রামাণ্য নথিও। গত চার বছরে উত্তরপ্রদেশ সরকারের আদেশে তাঁর দু’বার সাসপেনশন অর্ডার হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন তিন বার। বইয়ে রয়েছে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট এবং দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বিবরণ। কাফিলের অভিযোগ, রায় তাঁর পক্ষে গেলেও এখনও অন্ধকারে লড়ে চলেছেন তিনি।
সময়ের চাকা ঘোরার প্রতীক্ষা পর্বের এই কাহিনি প্রকাশ পাবে ২ জানুয়ারি, কলকাতা প্রেস ক্লাবে। অনুষ্ঠানটির আয়োজক ‘মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার’। বইয়ের প্রকাশ অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত কাফিল ফোনে জানালেন, ‘‘যখন ঠিক পথ নির্বাচনের সময় আসে, তখন হৃদয়ের ডাক শুনি। লড়াইয়ের শেষ দেখতে চাই। এই বইয়ের মাধ্যমে সকলের কাছে সত্যটা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy