সাবধানতা: মঞ্চ মজবুত করতে লোহার কাঠামোর সঙ্গে বাঁধা হচ্ছে বাঁশ। মঙ্গলবার, ধর্মতলায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
নিরাপত্তার জন্য প্রায় ৮ ফুট পিছিয়ে গেল তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সভার মঞ্চ। মেদিনীপুরের ঘটনার প্রেক্ষিতে ‘মঞ্চ বিপর্যয়’ এড়াতে তৃণমূল নেতৃত্ব এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় সভাস্থলে গিয়ে দলের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। সেই সঙ্গে মঞ্চ বাঁধার কাজে কোনও গাফিলতি যেন না থাকে সে ব্যাপারেও সতর্ক করেন তিনি। এর পরেই জোরকদমে মঞ্চ খুলে ফের নতুন করে বাঁধার কাজ শুরু হয়।
সোমবারই মেদিনীপুরের কলেজিয়েট মাঠে প্রধানমন্ত্রীর ‘কৃষক কল্যাণ সমাবেশ’-এ মঞ্চ সংলগ্ন ছাউনির একাংশ ভেঙে পড়ে আহত হন ২৪ জন মহিলা-সহ অন্তত ৯০ জন। ওই ঘটনায় মঞ্চ তৈরির কাজে গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরেই সোমবার সন্ধ্যায় ২১ জুলাইয়ের মঞ্চের নিরাপত্তা নিয়ে সক্রিয় হয়ে ওঠে তৃণমূল। দ্রুত মঞ্চ পরিদর্শনে যান সুব্রতবাবু। সেখানে মঞ্চ তৈরির কাজে যুক্ত ডেকরেটর্স সংস্থার প্রধান সিদ্ধার্থ রায়চৌধুরীকে মঞ্চ ৮ ফুট পিছিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। লোহার খাঁচা তৈরি করে তার সঙ্গে বাঁশের বাঁধুনি আটকানোর নির্দেশও দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার সিদ্ধার্থবাবু বলেন, ‘‘বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট এবং চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের মুখে যতটা পর্যন্ত মঞ্চ ছিল সেই পর্যন্ত রাখলে সমস্যা হবে বলে জানিয়েছেন দাদা (সুব্রত বক্সী)। তাই সন্ধ্যায় মঞ্চের ওই অংশ খোলার কাজ শুরু হয়। পিছন দিকে ৮ ফুট বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি সবটা একই রকম রয়েছে।’’ হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত কেন? সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘রাস্তার মুখে ওই জায়গায় মঞ্চ হলে একটু সমস্যা হত। গাড়ি এবং মানুষের জটলা এড়াতেই নতুন পরিকল্পনা করা হয়েছে। যত সংখ্যক মানুষ আসবেন মনে হচ্ছে, তাতে নিরাপত্তার দিকে আরও বেশি করে জোর দিতেই হচ্ছে।’’ মেদিনীপুরের ঘটনার প্রসঙ্গ তোলায় সুব্রতবাবু বলেন, ‘‘এখানে মেদিনীপুরের ঘটনার কোনও প্রভাব নেই। প্রতিবারই নিরাপত্তার বিষয়টা মাথায় রেখে চলি আমরা।’’ তবে মঞ্চ প্রস্তুতকারীদের নাটবল্টু এবং বাঁশের বাঁধুনি ঠিকঠাক রাখার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান সুব্রতবাবু।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, জোরকদমে চলছে মঞ্চ তৈরি। কাঠামো জোরদার করতে লোহার কাঠামোর প্রতিটা সংযোগস্থলে লাগানো হচ্ছে নাটবল্টু। সঙ্গে বাড়তি সতর্কতা হিসেবে বাঁধা হচ্ছে বাঁশ। আগের বছরগুলোর মতো এ বারও মঞ্চের এক দিকে ৫ ফুট জায়গা নিয়ে তৈরি হচ্ছে দলনেত্রীর মঞ্চে ওঠার পথ। সেই পথে বসানো হয়েছে শক্ত কাঠের পাটাতন। মঞ্চ সংলগ্ন এলাকায় বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। মঞ্চ সংলগ্ন মণ্ডপে বসেই কড়া নজরে সবকিছু তদারকি করছেন তৃণমূল নেতারা।
মঞ্চের কাজ দেখেই এ দিন বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে আলোচনা সারতে সিইএসসি অফিসে ঢুকে যান সুব্রতবাবু। বেরিয়ে তিনি জানান, বিদ্যুতের খরচের বিল চাওয়া হয়েছে। বিল দেখেই খরচ মেটানো হবে। আপাতত মেদিনীপুরের ঘটনা ভুলে ২১ জুলাইয়ের সভা সার্থক করতেই ব্যস্ত তৃণমূল নেতৃত্ব। সুব্রতবাবুর সঙ্গী এক তৃণমূল নেতা বেরিয়ে যাওয়ার মুখে বললেন, ‘‘মেদিনীপুরের মতো কিছু হওয়ার আশঙ্ক নেই। এখানে সব কড়া হাতে সামলানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy