Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sovan Chatterjee

পিঠে বিশ্বাসঘাতকতার ঘা, বৈশাখী সঙ্গে বলেই বেহালায়, রোড-শোয়ে বলে দিলেন শোভন

শোভন মঙ্গলবার দাবি করেছেন, ২০০১ সালের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বালিগঞ্জে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।

বেহালায় শোভন এবং বৈশাখী।

বেহালায় শোভন এবং বৈশাখী। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:২৫
Share: Save:

বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় সঙ্গে ছিলেন বলেই তিনি বেহালায় গিয়েছিলেন। তাঁর পিঠে এখনও বিশ্বাসঘাতকতার দগদগে ঘা! মঙ্গলবার বিকালে নিজের এলাকায় রোড শো করতে করতে জানিয়ে দিলেন বেহালা পূর্বের বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘বৈশাখী সঙ্গে রয়েছেন বলে আমি বেহালায় আসতে পেরেছি। মানুষের কাছে এসেছি। আমার পিঠটা খুললে এখনও দগদগে ঘা দেখতে পাবেন। বিশ্বাসঘাতকতার ঘা।’’ প্রায় সাড়ে তিন বছর পর মঙ্গলবার শোভন বেহালায় গেলেন। হুডখোলা জিপে বিজেপি-র হয়ে রোড শো করতে। তাঁর সঙ্গে, যথারীতি, ছিলেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি শোভনকে বললেন ‘আধুনিক বেহালার রূপকার’।

শোভন আদৌ ভোটে দাঁড়াতে চান না বলে জানিয়েছেন বৈশাখী। কিন্তু তার পাশাপাশিই তাঁর বক্তব্য, ‘‘আধুনিক বেহালার রূপকার হচ্ছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। আমি মনে করি, বিজেপি ওঁকে টিকিট দিলে ওঁর বেহালা পূর্বেই দাঁড়ানো উচিত। বেহালার মানুষই ওঁকে জেতাবে।’’ তিনি নিজে কি ভোটে দাঁড়াবেন? বৈশাখীর জবাব, ‘‘আমি ভোটে দাঁড়াব কি না, সেটা সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ঠিক করবেন। কিন্তু যিনিই দাঁড়াবেন, আমরা তাঁর হয়ে প্রচার করব। তাঁকে জেতানোর জন্য লড়ব।’’

শোভন-বৈশাখী বেহালায় রোড শো করতে আসছেন শুনে শোভনের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘মানুষ যত একসঙ্গে শোভন-বৈশাখীকে দেখবেন, তত তৃণমূলের ভোট কমবে।’’ সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শোভন বলেন, ‘‘আমি তো আগেই বলেছি, আমার জন্য কেউ পায়ের পাতা পর্যন্ত ভেজালে আমি তার জন্য নাক পর্যন্ত জল নিয়ে নেব। আমি নীতিগত প্রশ্নে আপস করিনি। সম্মানের ব্যাপারে, উন্নয়নের প্রশ্নে আপস করিনি। যে উন্নয়ন বেহালায় করে দেওয়া গিয়েছে, কে দাঁড়াবেন, সেটা বড় কথা নয়, কিন্তু বেহালা পূর্ব এবং পশ্চিমে আর তৃণমূলের বিধায়ক থাকবে না।’’ রত্নার মন্তব্য প্রসঙ্গে শোভনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি নিজের স্ত্রী-কে যে ভাবে দেখতে চেয়েছিলাম আর যে ভাবে দেখেছি, সেটা আমার ভাল লাগেনি। কেউ তো শখ করে ডিভোর্স করে না! আমি তাঁর জীবন থেকে চলে গিয়েছি। আমার পিঠটা খুললে দেখবেন দগদগে ঘা। বিশ্বাসঘাতকতার। বিট্রেয়ালের। বৈশাখী সঙ্গে রয়েছেন বলে আমি বেহালায় আসতে পেরেছি। মানুষের কাছে আসতে পেরেছি। নইলে মানুষ আমার অন্য পরিণতি দেখতে পেতেন।’’

প্রসঙ্গত, শোভন এখনও বেহালা পূর্বের বিধায়ক। মন্ত্রিত্ব, মেয়র পদ এবং দল ছা়লেও তিনি এখনও বিধায়ক এবং কাউন্সিলর পদ ছাড়েননি। সেই সূত্রেই তাঁর বেহালায় রোড শো করতে আসা। মঙ্গলবার বিকালে বেহালার ১৪ নম্বর বাস স্ট্যান্ড থেকে ঠাকুরপুকুরের থ্রি এ বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত তাঁরা রোড শো করেন। সময়কালের দিক দিয়ে দেখতে গেলে প্রায় সাড়ে তিন বছর পর শোভন বেহালায় গেলেন। তাঁর হুডখোলা জিপের চারদিক থেকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা অনবরত স্লোগান তুলেছেন, ‘শোভন’দা রাজপথে, তৃণমূল হুঁশিয়ার!’ স্লোগান উঠেছে, ‘জয় শ্রীরাম’, ‘ভারতমাতা কি জয়’!

রাজনীতির প্রসঙ্গে শোভন মঙ্গলবার দাবি করেছেন, ২০০১ সালের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বালিগঞ্জে দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। শোভনের কথায়, ‘‘আমি ওঁকে নিজের জায়গায় (বেহালা পশ্চিম কেন্দ্র) নিয়ে এসে ঘাড়ে করে জিতিয়েছিলাম। বহু অভিযোগ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। এখনও যে উন্নয়নের কাজ বেহালা জুড়ে চলছে, তা আমার ২০১৭ সালের পরিকল্পনা করে দেওয়া। কোটি কোটি টাকা খরচ করে বেহালায় পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করেছি। বেহালায় নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি।’’ মমতাকে নিয়ে তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘সমস্ত জায়গা থেকে চক্রান্ত করে যে ভাবে আত্মীয়তার সুযোগে সমস্ত পরীক্ষিত সৈনিকদের দলের বাইরে বার করে দিয়েছেন, আমরা নির্দিষ্ট করেই ভারতীয় জনতা পার্টির শরিক। যে দল আমাদের কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছে। কর্মী হিসেবে আমরা মনে করি আমরা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে মানুষের কাজ করার পথে এগিয়ে যাব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy