অপেক্ষা: পূর্ণ হল অনশনের ১৩ দিন। রবিবার, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
•প্রথম পর্যায়ে লিভার থেকে আসে ফ্যাট ও গ্লাইকোজেন। পরবর্তী পর্যায়ে শরীরের বিভিন্ন অংশের চর্বি ভাঙতে শুরু করে। তার পরে শুরু হয় মাংসপেশি ভাঙা। এ সবের থেকেই শরীর কাজ চালানোর মতো খাবার জোগাড় করে।
•রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্ক কাজ করা বন্ধ করে দেয়। অনশনকারী অচৈতন্য হয়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণের একটি হল, রক্তে শর্করার অভাব।
•মাংসপেশি ভাঙার কারণে শরীরে মেলে কিটোন বডি। যা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর কিছুটা প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। কিছুটা থেকে যায় শরীরেই। সেই অবস্থায় অনশন চালিয়ে গেলে অনশনকারীর বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
যে সব অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে
•কিটোন বডির কারণে কিডনি, যকৃৎ, হৃৎপিণ্ড-সহ বিভিন্ন অঙ্গ।
•শর্করার অভাব ও অন্য কারণেও মস্তিষ্কের বড় ক্ষতি হতে পারে।
•অনিয়মিত রক্তচাপের কারণে হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিষ্কে আঘাত আসতে পারে।
এই ক্ষতি কি দীর্ঘস্থায়ী?
•এ জন্য প্রয়োজন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ। পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক এবং কিডনির মতো অঙ্গ কিছুটা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা আর পূরণ করা যায় না। সে ক্ষেত্রে ক্ষতির পরিমাণ জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ সব কিছু জেনে-বুঝেই অনশনকারীকে সতর্ক থেকে বাকি জীবন কাটাতে হবে।
অনশন ভাঙার পরে
•ঘুম ভাঙিয়ে হঠাৎ কাউকে ছুটতে বললে সে পড়ে যাবে। তেমনই, দীর্ঘ দিন খাবার না পেয়ে নিষ্ক্রিয় ছিল শারীরবৃত্তীয় সব প্রক্রিয়া। হঠাৎ করে সেই শরীরে স্বাভাবিক খাবার দিলে তারও বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। ডাক্তারি পরিভাষায় একে বলে ‘রি-ফিডিং সিন্ড্রোম’। তাই ঘুম ভেঙে আড়মোড়া ভাঙার মতোই অনশন ভাঙার পরে দু’-তিন দিনের বাড়তি সতর্কতা জরুরি।
কী ভাবে?
•রান্না করা খাবার এ সময়ে না দেওয়াই বাঞ্ছনীয়। দেওয়া যেতে পারে একমাত্র সহজপাচ্য খাবার। যার মধ্যে রয়েছে ফলের রস, ডাবের জল, গ্লুকোজ, মাল্টি ভিটামিন, জলে গুলে প্রোটিন পাউডার এবং বিভিন্ন ফুড সাপ্লিমেন্ট। তবে সবটাই দিতে হবে যথাযথ পর্যবেক্ষণের পরে এবং চিকিৎসকের মত নিয়ে।
তথ্যসূত্র: অরুণাংশু তালুকদার (কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক)
তথ্য সংগ্রহ: জয়তী রাহা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy