অনলাইনের মারণ খেলায় হার-জিত কোনও বড় কথা নয়। নিজের ভিতরের শক্তিকে জাগিয়ে, নিজস্ব পরিচিতি প্রতিষ্ঠাই আসল বিজয়ীর লক্ষণ। কিন্তু সেটা কী ভাবে সম্ভব, এ বার তারই কাউন্সেলিং করাতে চলেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশন। মূলত নীল তিমির মতো মারণ খেলার গ্রাস থেকে পড়ুয়াদের বাঁচাতে এই কাউন্সেলিং শিবিরের আয়োজন বলে জানাচ্ছেন সংগঠনের কর্তারা।
শনিবার ১৮ নভেম্বর রোটারি সদনে সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে কাউন্সেলিং। চলবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এই সংগঠনের অধীনে থাকা কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর এবং বর্ধমান জেলার মোট ২২৫টি স্কুল এতে অংশ নেবে। প্রতিটি স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মধ্যে মোট তিন জন পড়ুয়া এবং এক জন শিক্ষক তাঁদের স্কুলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন।
অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশনের সভাপতি সুজয় বিশ্বাস জানান, নীল তিমির গ্রাস থেকে পড়ুয়াদের বাঁচাতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে আগেই সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কাউন্সিল। সেই মতো স্কুলগুলি নিজেদের পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণও দিয়েছিল। কিন্তু পড়ুয়াদের জন্য মিলিত ভাবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কাউন্সেলিং-এর ব্যবস্থা এই প্রথম। প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজটি করবেন, দু’জন মনস্তত্ত্ববিদ, এক জন ইন্টারনেট বিশেষজ্ঞ। সংগঠনের সম্পাদক নবারুণ দে জানান, কাউন্সেলিং-এর শেষে প্রতিটি স্কুলের তিন পড়ুয়া এবং এক শিক্ষক নিজেদের স্কুলে ফিরে অন্যদের এই কাউন্সেলিং করাবেন।
যদিও এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, কাউন্সেলিং-এর জন্য শুধু নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদেরই কেন বেছে নেওয়া হল। সংগঠনের যুক্তি, উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা নীচের ক্লাসের পড়ুয়াদের তুলনায় দ্রুত কাউন্সেলিং-এর পদ্ধতি ধরতে পারবে এবং তা ছোটদের শেখাতেও পারবে। যেটা, নীচের ক্লাসের পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে অতটা সহজ হবে না। তবে নীল তিমির গ্রাস থেকে পড়ুয়াদের বাঁচাতে শুধু শিবির থেকে কাউন্সেলিং করে আসা পড়ুয়াদের উপরেই ভরসা করলে যে হবে না, মানছেন অনেকেই। তাদের ক্ষেত্রেও মনস্তত্ত্ববিদের পরামর্শও প্রয়োজন। উঠে আসছে আরও একটি প্রশ্ন, যেহেতু দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা প্রায় দোরগোড়ায়, তাই এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে তাদের জড়ানো কতটা যুক্তিযুক্ত? সংগঠনের পক্ষ থেকে এই প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি।
অনলাইনের মারণ খেলায় পড়ুয়াদের আসক্তি বাড়ায় চিন্তিত শিক্ষামহল। যে কারণে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর ইউনেস্কোর সঙ্গে যৌথ ভাবে কলকাতার বহু স্কুলে অনলাইনে মারণ খেলার কুপ্রভাব সম্পর্কে পড়ুয়াদের সচেতন করার কাজও শুরু করেছে। একাকিত্ম, সব কিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখার প্রবণতা যে পড়ুয়াদের মধ্যে রয়েছে, তারাই এই খেলার প্রতি আসক্ত বলে সমীক্ষায় ধরা পড়েছে। তাই বাংলা মাধ্যমের স্কুলগুলিতেও এই ধরনের খেলা থেকে মুখ ঘোরাতে জোর দেওয়া
হচ্ছে খেলাধুলোয়। একই পথে হেঁটে অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশন ইতিমধ্যেই খেলাধুলা এবং শারীরচর্চায় বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছে। পাশাপাশি প্রয়োজন সঠিক কাউন্সেলিং, যে কারণে এই উদ্যোগ বলে জানাচ্ছেন সুজয়বাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy