স্বামীর অকালমৃত্যুর পরে পাঁচ বছর বয়সি ছোট মেয়েকে নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে থাকতে শুরু করে ২৭ বছরের তরুণী। ৩২ বছরের সেই প্রেমিক পাঁচ বছরের ওই শিশুটির হাত-পা বেঁধে তার উপরে নিয়মিত যৌন নির্যাতন চালাত। মেয়েটির মা সব জানলেও কিছু বলত না। ২০২৩ সালে দক্ষিণ কলকাতার একটি এলাকার এই ঘটনায় শুক্রবার মেয়েটির মা ও তার প্রেমিককে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দিল শিয়ালদহ আদালতের বিশেষ পকসো কোর্ট। সাজা শুনিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস।
দোষী যুবককে ছ’বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। ওই টাকা অনাদায়ে আরও ১০ মাস জেলে থাকতে হবে।
নির্যাতিতার মাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। যা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। নিজের মেয়েকে ঠিক মতো দেখাশোনা না করায় ওই তরুণীকে আরও এক হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। সেই সঙ্গে নির্যাতিতাকে এক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য বিচারক ডিএলএসএ-কে নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত সূত্রের খবর, ওই তরুণী ছোট মেয়েকে নিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে থাকলেও তার বড় মেয়ে ওই এলাকাতেই ঠাকুরমার সঙ্গে থাকত। তরুণীর প্রেমিক অনেক দিন ধরেই পাঁচ বছরের মেয়েটিকে যৌন হেনস্থা করছিল। ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর নির্যাতিতা শিশুটি স্কুলে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে তার ঠাকুরমার কাছে গিয়ে সব কথা জানায়। ঠাকুরমা স্থানীয় থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ২৯ ডিসেম্বর পুলিশ গ্রেফতার করে অভিযুক্ত যুবককে। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ চার্জশিট দেয়।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী অসীম কুমার বলেন, ‘‘সাক্ষ্য দেওয়ার সময়ে নির্যাতিতা নাবালিকা জানায়, মাকে সব কথা বললেও মা শুনত না।’’ অসীম জানান, এর পরেই তিনি মাকেও এই মামলায় যুক্ত করার জন্য আবেদন জানান। বিচারক মাকে গ্রেফতার করে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে মা জামিন পেলেও তার প্রেমিক জামিন পায়নি। এ দিন সাজা ঘোষণার পরেই নির্যাতিতার মাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। এই মামলায় মোট ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)