Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কোটি টাকা খরচ করেও বন্ধ মাতৃসদন

বাম আমলে প্রসূতি পরিষেবা দেওয়ার জন্য সল্টলেক ১০ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে ইই ব্লকে মাতৃসদনটি তৈরি হয়। পরে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা ২০১৫ সালে মাতৃসদনটি নতুন করে সংস্কারের পরিকল্পনা করে।

চকচকে: ভর্তি পরিষেবা এখানে বন্ধই়। নিজস্ব চিত্র

চকচকে: ভর্তি পরিষেবা এখানে বন্ধই়। নিজস্ব চিত্র

নীলোৎপল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ০৩:১৭
Share: Save:

দায়িত্ব দেওয়ার মতো লোক খুঁজে পেতেই প্রায় তিন বছর কেটে গিয়েছে! তাই কোটি টাকা খরচ করে সংস্কারের পরেও বন্ধ পড়ে বিধাননগর পুরসভা পরিচালিত সল্টলেক ইই ব্লকের মাতৃসদন হাসপাতালে রোগী ভর্তির পরিষেবা।

বিধাননগরের বাসিন্দাদের একটা ব়ড় অংশের অভিযোগ, এ নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। তাই বেশকয়েকবার উদ্বোধনের পরেও এখনও রোগী পরিষেবা মেলেনা মাতৃসদনটি থেকে। এমনকি সদনের ভিতরে নয়া পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ কতটা এগিয়েছে, খোদ পুরসভাই তা জানে না বলে অভিযোগ। বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় অবশ্য বলছেন, ‘‘কাজ বহুদিনই শেষ হয়ে গিয়েছে। অবশেষে মাতৃসদনটির দায়িত্ব দেওয়ার মতো লোকও পাওয়া গিয়েছে। দ্রুত ওখানে কাজ শুরু হবে।’’

বাম আমলে প্রসূতি পরিষেবা দেওয়ার জন্য সল্টলেক ১০ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে ইই ব্লকে মাতৃসদনটি তৈরি হয়। পরে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা ২০১৫ সালে মাতৃসদনটি নতুন করে সংস্কারের পরিকল্পনা করে। প্রসূতি পরিষেবার পাশাপাশি মাতৃসদনটিকে সম্পূর্ণ হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তুলতে প্রায় এক কোটি ২৭ লক্ষ টাকা খরচের সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, সেইমতো মাতৃসদনটির শয্যার সংখ্যা বাড়িয়ে ১০ থেকে ৬০ করা হয়। নীচের অংশে বহির্বিভাগের পাশাপাশি রোগীদের বসার জায়গা এবং ক্যান্টিন তৈরি করা হয়। দোতলায় তৈরি করা হয় গাইনোকোলজি ওয়ার্ড এবং তিনতলায় পেডিয়াট্রিক ইউনিট। ভবনটির চারতলায় তৈরি করা হয় ডায়ালেসিস ইউনিট এবং মেডিসিন ইউনিট। রয়েছে চারটি শয্যার আইসিইউ-ও।

অভিযোগ, কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও শুধুমাত্র লোক নিয়োগ করতে না পারায় গত তিন বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে মাতৃসদনটি। এর জেরে ইই ব্লকের পাশাপাশি সমস্যায় পড়ছেন দত্তাবাদ, সুকান্তনগর, কুলিপাড়া এলাকার বাসিন্দারা। দত্তাবাদের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘আমার এক আত্মীয়ের সন্তান হয়েছিল ওই মাতৃসদনে। কিন্তু, আমার নিজেরে মেয়েকে ওখানে ভর্তি করাতে পারিনি। ওখানে তো এখন আর ভর্তিই নেয় না।’’ ইই ব্লকেরই বাসিন্দা, পেশায় কলেজের শিক্ষক শক্তিধর রায় আবার বললেন, ‘‘রাজ্য জুড়ে স্বাস্থ্য পরিষেবার বর্তমান হালের বিপরীতে ভাল কিছু করতে সল্টলেকের এই মাতৃসদনগুলো তৈরি হয়েছিল। ভাল পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল তৈরির নামে প্রথমে পরিষেবা বন্ধ করে কাজ শুরু হল, তারপরে রোগী পরিষেবাই বন্ধ করে দিল পুরসভা। কাউন্সিলর নিজেও কিছু করেন না।’’

ওই মাতৃসদনটি বিধাননগর পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে অন্তর্গত। স্থানীয় কাউন্সিলর সুধীর সাহা বললেন, ‘‘আমি জানি না। যা বলার মেয়র পারিষদ স্বাস্থ্য প্রণয় রায় বলবেন।’’ আর প্রণয়বাবুর দাবি, ‘‘মাতৃসদনটির নীচের তলায় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে ভর্তি করিয়ে চিকিৎসা হয় না। দিনকয়েকের মধ্যেই সম্পূর্ণ ভাবে কাজ করবে ওই মাতৃসদন।’’ অভিযোগ, এরকম প্রতিশ্রুতি আগেও শোনা গিয়েছে। কাজ হয়নি। প্রণয়বাবু বললেন, ‘‘আসলে সুপার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার মতো লোক পাচ্ছিলাম না। এখন স্বাস্থ্য ভবনের পাঠানো এক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Salt Lake Matri Sadan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE