বিক্রম ও রুক্মিণী।— ফাইল চিত্র।
গত ২৯ এপ্রিল লেকমলের কাছে গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে মডেল সোনিকা সিংহ চৌহানের। সে দিন গাড়ির চালকের আসনে ছিলেন অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। সোনিকার মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। আদালতে হাজিরা দিয়ে জামিনে ছাড়া পেয়ে যান বিক্রম। গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে। এর মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সে দিনের ঘটনা এবং পরবর্তীতে বিক্রমের ভূমিকা নিয়ে পক্ষে, বিপক্ষে উঠেছে নানান প্রশ্ন। এ বার মুখ খুললেন সোনিকার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী, মডেল-অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। সোনিকার সমাধিস্থলে গিয়ে বিক্রম নাটক করছেন বলেই মনে করেন রুক্মিণী। ফেসবুকে পোস্ট করা তাঁর বক্তব্য তুলে ধরা হল তাঁরই বয়ানে।
আরও পড়ুন, সোনিকাকে এক বার দেখার জন্য সব কিছু করতে পারি: সাহেব ভট্টাচার্য
ডিয়ার বিক্রম চট্টোপাধ্যায়,
আমি আপনাকে চিনি না। কিন্তু আপনাকে যে খুঁজে পেয়েছি, এটাই ভাল লাগছে। আমি প্রার্থনা করছি, যে শারীরিক ও মানসিক আঘাত আপনি পেয়েছেন তা থেকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। যদিও আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে, আপনি আদৌ সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে। যে ভাবে আপনি ওর সমাধিস্থলে গিয়ে নাটক করেছেন, তা আবার সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে— তাতে বলতেই হচ্ছে এত নিম্নরুচি আমি অনেক দিন পরে দেখলাম। আমার বন্ধুর সমাধিস্থলে গিয়ে আপনি মানবিকতা দেখাচ্ছেন, অথচ ওর বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না? যে বাবা-মা সদ্য তাঁদের একমাত্র সন্তানকে হারিয়েছেন তাঁদের একটা ফোন পর্যন্ত করতে পারেননি? হয়তো ওর বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলে বা ফোন করলে সেটা প্রচারে আসত না। আমি নিশ্চিত আপনি সেটা চাইলেও ওর বাবা-মা সেটার অনুমতি দিতেন না। সুতরাং আপনার খারাপ হওয়া ভাবমূর্তি ভাল করার জন্য এটা নিরর্থক প্রচেষ্টা।
সোনিকার সমাধিস্থলে বিক্রম। ছবি: টেলিগ্রাফের সৌজন্যে।
এত দিন এই ঘটনাটি নিয়ে কিছু লিখিনি তার কারণ ২৯ এপ্রিল, ২০১৭-এর অভিশপ্ত শনিবার নয়। লিখিনি কারণ, যখন শুনলাম ও বেঁচে নেই শুনে আপনি আবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তখন মনে হয়েছিল, ওর না থাকা মানুষ হিসেবে আপনারও দুঃখের কারণ।…।
ও যে দিন চলে গেল, ওর বরফের মতো শরীর ছুঁয়ে মনে হচ্ছিল কতটা প্রাণশক্তি ছিল ওর মধ্যে। সব কিছু ফেলে রেখে ও চলে গেল…।
আরও পড়ুন, নিরপেক্ষ তদন্ত হোক মেয়ের মৃত্যুর, সিপিকে চিঠি দিলেন সোনিকার বাবা
ও আমার কাছে কী ছিল, সেটা বলার জায়গা এটা নয়। আমরা কী কী শেয়ার করতাম, সেটাও আমার মধ্যেই থাক। আমি তো ওর নামটাও এখানে লিখলাম না। আসলে যে পোস্টে আপনার নাম রয়েছে সেখানে ওর নাম আমি লিখতে চাই না। আপনাকে এতটাই ঘৃণা করি। আপনি যা করছেন তা মানুষের সহ্য সীমার বাইরে। আপনার ব্যবহারে শুধু দুঃখ পেয়েছি এমন নয়, আমরা যারা ওকে ভালবাসতাম তারা রেগে গিয়েছি।
যাই হোক..আমার মধ্যে যেটুকু ক্ষমতা আছে সেই জায়গা থেকে অফিশিয়ালি আমি জানাচ্ছি, আপনি মানসিক ভাবে অসুস্থ। যেভাবে ওর সমাধিস্থলে গিয়ে আপনি ‘নাটক’ করেছেন তা কুরুচিকর ও অমানবিক।
রুক্মিণী ও সোনিকা। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
আপনার সো কলড কেরিয়ারের জন্য শুভেচ্ছা। দয়া করে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।
ও হ্যাঁ, জন্মদিনের শুভেচ্ছা দেরি করে জানাচ্ছি।
আপনি পরের জন্মে যাতে একটু মানবিক হতে পারেন তার জন্য শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। কারণ এ জন্মে সেটা আর সম্ভব নয়। আপনি বাসটা অলরেডি মিস করেছেন।
শারণ আন্টি, দুঃখিত। সে দিন বিকেলে যা প্রমিস করেছিলাম সেটা রাখতে পারিনি। আমাকে লিখতেই হল। পারলে আমাকে ক্ষমা কোরো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy