উদ্বোধনের অপেক্ষায় রিং রোড।—নিজস্ব চিত্র
যানজট নিয়ন্ত্রণে ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে অবশেষে পাঁচ নম্বর সেক্টরে রিং রোডের কাজ শেষ হল। কিছু দিনের মধ্যেই নতুন ওই রাস্তায় গাড়ি চলাচল করবে। কিন্তু যে কারণে ওই রিং রোড প্রকল্পের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা কতটা ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
জন্মলগ্ন থেকেই ৪৩২ একরের পাঁচ নম্বর সেক্টরে ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ ছিল। রাস্তা রয়েছে মাত্র ১৭ কিলোমিটার। অথচ ট্রাফিক দফতর সূত্রে খবর, প্রতি দিন কম করে ২০ হাজার গাড়ি যাতায়াত করে ওই এলাকায়। ফুটপাথ দখল এবং রাস্তার গাড়ির পার্কিং এর জেরে সমস্যা জটিল আকার নেয়।
সমস্যা মেটাতে ২০১২ সালে রিং রোড প্রকল্পের পরিকল্পনা করেন নবদিগন্ত শিল্পনগরী কর্তৃপক্ষ। প্রস্তাবিত প্রকল্পে পাঁচ নম্বর সেক্টরের এসডিএফ মোড় থেকে ভেড়ির ধার দিয়ে পুরনো ২১৫এ বাসস্ট্যান্ড হয়ে ওই আড়াই কিলোমিটার রাস্তা গিয়ে মিশবে রাজারহাট বক্স ব্রিজে। বর্তমানে রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে এবং এসডিএফ মোড় থেকে টেকনোপলিসের রাস্তা দু’টিই শিল্পপ্রযুক্তি তালুকের প্রাণকেন্দ্র।
নতুন আড়াই কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হলে পাঁচ নম্বর সেক্টরকে ঘিরে একটি বৃত্ত তৈরি হবে। তার সূত্র ধরেই কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা ছিল, শিল্পতালুকের মধ্যে গাড়ির যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করা। গাড়ি চলবে এলাকার চার ধার দিয়ে।
২০১২ সালের অগস্টে শিলান্যাস হয় ওই প্রকল্পের। কাজ শুরু হয় ২০১৩ সালে। কিন্তু মাঝে কয়েক মাস পরিবেশগত কিছু অনুমতি সংক্রান্ত প্রতিবন্ধকতায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সেই অনুমতি নিয়ে অবশেষে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে রিং রোড ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই ওই রাস্তা গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
তবে রিং রোড খুলে গেলেও যানজটের সমস্যা কতটা কমবে? শহরের মধ্যে গাড়ি চলাচল কতটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। কারণ রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়ে বরাবর চলছে মেট্রোর কাজ। ফলে শিল্পতালুকের প্রাণকেন্দ্র ওই রাস্তার আয়তন কমেছে। রিং রোড খুলে গেলেও আপাতত মূল পরিকল্পনা কার্যকরী করা মুশকিল হবে বলেই মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
শিল্পনগরীর এগ্জিকিউটিভ অফিসার বদ্রিনারায়ণ কর বলেন, “রিং রোডের কাজ শেষ। কিছু দিনেই গাড়ি চলাচল শুরু হবে। কিন্তু মেট্রোর কাজ চলছে রাজারহাট এক্সপ্রেসওয়েতে। ফলে যান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিয়ে বিধাননগর কমিশনারেটের ট্রাফিক দফতরের সঙ্গে আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” ফলে যানজট কতটা কমবে তা নিয়ে সমস্যা আপাতত রয়ে যাবে বলেই মনে করছেন অনেকে।
এই প্রকল্প নিয়ে অবশ্য অপেক্ষায় রয়েছেন আইটি কর্মীরা। তাঁদের বক্তব্য, প্রতিদিন ওই ছোট্ট পাঁচ নম্বর সেক্টর এলাকায় বিপুল পরিমাণ গাড়ি যাতায়াত করে। ফলে যানজটের জন্য শহরের মধ্যেই অনেক সময় নষ্ট হয়। নতুন রাস্তা হলে সমস্যা কমবে। তবে তাঁদের অভিযোগ, রাস্তা তৈরির পাশাপাশি দ্রুত একাধিক পার্কোম্যাট ও ফুড কোর্ট তৈরি করাও প্রয়োজন। তা হলে রাস্তা গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
নবদিগন্ত কর্তৃপক্ষ জানান, একটি বহুতল পার্কোম্যাটের কাজ শুরুর প্রক্রিয়া চলছে। ফুড কোর্টের বিষয়েও পরিকল্পনা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy