অবহেলা: সাঁতরাপাড়ার এই পুকুরটি দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল হয়ে পড়েছিল। —নিজস্ব চিত্র।
এলাকার আবর্জনা, বাড়ি ভাঙার বর্জ্য সব কিছুই ফেলা হত সেখানে। বহু বছরের এই অভ্যাসে বদলে গিয়েছিল পুকুরের চেহারা। এক সময়ে প্রায় এক বিঘা জায়গা জুড়ে ছিল এলাকার পুরনো ওই পুকুর। ময়লা ফেলতে ফেলতে বুজে গিয়েছিল সেই পুকুর। জল তো ছিলই না। বরং সেই জায়গায় দখল নিয়েছিল ঝোপঝাড়-আগাছা। বাইরে থেকে হঠাৎ কেউ এলাকায় ঢুকলে মনে করতেন কোনও জঙ্গল। মশা, সাপ এবং বিষাক্ত পোকার ভয়ে বাড়ির দরজা জানালা বন্ধ রাখতেন পুকুরের আশপাশের বাসিন্দারাও।
কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে সম্প্রতি সেই পুকুরের ছবিটা বদলেছে। দু’ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত সাঁতরাপাড়ার বুজে যাওয়া এই পুকুরটির সংস্কারের দাবি নিয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের এই আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর পুষ্পালি সিংহ।
পুরসভা সূত্রে খবর, পুকুর সংস্কারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্প থেকে পনেরো লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। এর পরের পর্যায়ে পুকুর সৌন্দর্যায়নের জন্য
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদ তহবিল থেকে পাওয়া গিয়েছিল আরও পনেরো লক্ষ টাকা। কলকাতা পুরসভার এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, ‘‘একশো দিনের কর্মী দিয়ে পুকুরটির সংস্কার করানো হয়েছিল। ওই জায়গা এতটাই আবর্জনায় ভরে গিয়েছিল যে পরিষ্কার করতে ১২০ লরি জঞ্জাল সরানো হয়েছিল। আরও অনেকগুলি বেহাল পুকুর রয়েছে এক নম্বর বরোর অধীন। ধীরে ধীরে সেই পুকুরগুলির সংস্কার করবে পুরসভা। তবে এ কাজে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে স্থানীয় কাউন্সিলরদের।’’
পুরসভা সূত্রে খবর, দীর্ঘ বছর পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকা ওই পুকুরের জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ করেছিলেন একশো দিনের প্রকল্পের কর্মীরা। এর পরেই শুরু হয়েছিল নতুন করে পুকুর খনন। সংস্কার করা পুকুরটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চার দিকে উঁচু করে গ্রিল তুলে দেওয়া হয়। শালবল্লা দিয়ে বাঁধানো পুকুরের চার দিকেও নিচু ফেন্সিং লাগানো হয়। পেভার ব্লক বসিয়ে পুকুরের চার দিক বাঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে। লাগানো হয়েছে আলো। ঘাটে নামার সিঁড়ির সামনে তোরণ তৈরি হয়েছে টালির চারচালা আকারের। টাইলসে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সিঁড়ি, রেলিং এবং পিলারের থাম।
পুকুরের পাড়ে লাগানো হয়েছে গাঁদা, টগর, জবা-সহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছ। পুষ্পালিদেবী জানান, স্থানীয় বাসিন্দারাই পুকুর পাড়ে ফুল ও আনাজের চাষ করছেন।
স্থানীয় এক বাসিন্দার বক্তব্য, উদ্যোগটা খুবই সদর্থক। তবে সংস্কার হওয়া পুকুরটির রক্ষণাবেক্ষণের ভারও নিতে হবে পুরসভাকেই। ইতিমধ্যেই পুকুরের জল ও পেভার ব্লকে শুকনো পাতা জমতে শুরু করেছে। পুষ্পালিদেবী বলেন, ‘‘এলাকার অনেকগুলি পুকুরের অবস্থাই ভাল নয়। একে একে সংস্কারের চেষ্টা করছি। সাঁতরাপাড়ার এই পুকুর যাতে একশো দিনের কর্মীরা নিয়মিত সাফাই করেন সে ব্যাপারেও নির্দেশ দেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy