Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

নিউ টাউন-কাণ্ডে পুনর্নির্মাণ কবে

নিউ টাউনের আইনজীবী রজত দে-কে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতাকে হেফাজতে নেওয়ার দু’দিন পরে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্তও ঘটনার পুনর্নির্মাণ হল না।

n অনিন্দিতা ও রজত

n অনিন্দিতা ও রজত

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০৩
Share: Save:

নিউ টাউনের আইনজীবী রজত দে-কে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতাকে হেফাজতে নেওয়ার দু’দিন পরে, মঙ্গলবার রাত পর্যন্তও ঘটনার পুনর্নির্মাণ হল না। এমনই দাবি পুলিশ সূত্রের। কেন দেরি হচ্ছে, তার জবাব না মিললেও সূত্রের খবর, জেরার মুখে অনিন্দিতা যা বলেছেন, সেই বক্তব্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সব দিক থেকে নিশ্চিত হয়ে তবেই ঘটনার পুনর্নির্মাণের পথে এগোবে পুলিশ।

মঙ্গলবারও দিনভর জেরা করা হয়েছে অনিন্দিতাকে। তাঁর আইনজীবী চন্দ্রশেখর বাগের অভিযোগ, দু’দিন ধরে তাঁকে অনিন্দিতার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন তিনি। পরে বলেন, ‘‘আমার মক্কেলকে আইনি পরামর্শ নিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছি।’’ মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ডেকে পাঠানোয় ওই আইনজীবী থানায় গিয়েছিলেন। আইনজীবীর দাবি, অনিন্দিতা তাঁকে জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি ছিল বলে লিখে দিতে পুলিশ চাপ দিচ্ছে। ওই আইনজীবীর আরও অভিযোগ, তাঁর মক্কেলের উপরে অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলে সূত্র মারফত তিনি খবর পেয়েছেন।

পুলিশকর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, তদন্তকারী অফিসার না থাকাকালীন অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর আইনজীবীকে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয় না। তদন্তকারী অফিসার থাকলে দেখা করতে দিতে আপত্তি ওঠার কথা নয়। তবে অনিন্দিতার উপরে কোনও শারীরিক নির্যাতন করা হয়নি। এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ বলেই পুলিশের একাংশের দাবি।

প্রশ্ন উঠেছে, অনিন্দিতা যদি স্বীকারোক্তি দিয়েই থাকেন, তা হলে পুনর্নির্মাণে সময় লাগছে কেন?

তদন্তকারীদের একাংশের মতে, এখনও বেশ কিছু তথ্য যাচাই করা বাকি। ধোঁয়াশা রয়েছে বহু জায়গায়। ঠিক কোন সময়ে ঘটনাটি ঘটেছিল, কে বা কারা রজতকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট, শরীরের ক্ষতচিহ্ন এবং অনিন্দিতার বয়ানে বারবার পরিবর্তন— সব মিলিয়ে বহু প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথমে স্বাভাবিক মৃত্যু, পরে আত্মহত্যা এবং শেষে খুনের ঘটনার তত্ত্ব উঠে আসে জেরায়। সব কিছু বিশ্লেষণ করে পুলিশ এখন প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করছে। সূত্রের খবর, এ দিন এই ঘটনায় আরও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।

খুনের পদ্ধতি এবং খুনির ‘মোটিভ’ নিয়ে প্রাথমিক একটি ধারণা তৈরি হলেও হত্যার পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের একাংশের মতে, অনিন্দিতা যে বয়ান দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী খুনের ঘটনার সঙ্গে তাঁর যোগসূত্র মিলেছে। কিন্তু ঠিক কী ভাবে ঘটনাটি ঘটেছে, তার বিশদ বিবরণ দিতে গিয়ে অনিন্দিতা যা বলেছেন, তাতে বেশ কিছু ধন্দ তৈরি হয়েছে।

রজতের শারীরিক অবস্থা, দেহের অবস্থান, শরীরের ক্ষত-সহ বিভিন্ন বিষয়েই ধন্দ তৈরি হয়েছে। রজতকে সাময়িক উত্তেজনার বশে, না কি পরিকল্পনা করে খুন করা হয়, সেটাই এই মুহূর্তে পুলিশের কাছে বড় প্রশ্ন। ওই ঘটনায় আরও কেউ যুক্ত ছিলেন কি না, তা অবশ্য এখনও রহস্যই।

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Crime Reconstruction Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE