দুর্ঘটনার পরে সেই গাড়িটি। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
চলন্ত গাড়িতে পিছন থেকে ধাক্কা মেরেছিল বেপরোয়া ডাম্পার। ধাক্কার অভিঘাতে গাড়ির মুখ ঘুরে গিয়ে ডাম্পারের মুখোমুখি হয়ে যায়। সেই অবস্থাতেই গাড়িটিকে প্রায় ১৫০ মিটার ছেঁচড়ে নিয়ে গেল ডাম্পারটি। গাড়িতে চালকের আসনে তখন বসে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের এক আধিকারিক। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও দু’বছরের কন্যাসন্তান। শেষে স্থানীয় মানুষ ও কয়েক জন বাইকচালক এগিয়ে এসে ডাম্পারটিকে থামালে রক্ষা পান তাঁরা। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ নিউ টাউনের ইকো পার্কের তিন নম্বর গেটের কাছে নবাবপুর মোড়ে এই ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠেছে রাতের বিশ্ববাংলা সরণির নিরাপত্তা নিয়ে। অভিযুক্ত ডাম্পারচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অভিযোগ, গাড়িটিকে ধাক্কা মেরে পালানোর চেষ্টা করছিল ডাম্পারটির চালক। তাই ডাম্পার না থামিয়েই গাড়িটিকে ধাক্কা মারতে মারতে এগিয়ে যাচ্ছিল সেটি। সেই দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন পথচলতি বাইক-আরোহী এবং অন্য গাড়ির চালকেরা। বরাতজোরে রক্ষা পাওয়া গাড়িটির চালক, সৌম্য ঘোষ নামে ওই এটিসি আধিকারিক বলেন, ‘‘কোনওক্রমে রক্ষা পেয়েছি। ডাম্পারটি বেপরোয়া ভাবে পাশ কাটিয়ে এগোতে গিয়ে আমার গাড়িতে ধাক্কা মেরে পালানোর চেষ্টা করে। আমার গাড়ি উল্টো দিকে ঘুরে ডাম্পারের মুখোমুখি হয়ে যায়। তার পরে আমাদের ছেঁচড়ে নিয়ে যায় ডাম্পারটি। আমি ও মেয়ে হাতে চোট পেয়েছি।’’ ডাম্পারের ধাক্কায় তাঁর গাড়িটি দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ইকো পার্ক থানার পুলিশ ও নিউ টাউন ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। অভিযুক্ত চালক মনিরুল পাইককে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, নিউ টাউনের যাত্রাগাছির বাসিন্দা মনিরুল মাটি নিতে খালি ডাম্পার নিয়ে সিটি সেন্টার ২-এর দিকে যাচ্ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়নি বলেই পুলিশ সূত্রের খবর।
উল্লেখ্য, বিশ্ববাংলা সরণিতে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী বাইক দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি দুর্ঘটনাই ঘটেছিল রাতে এবং বেপরোয়া গতির কারণে। তার পরে দুর্ঘটনা রুখতে গত এক মাস ধরে রাতের নিউ টাউনে ট্র্যাফিক পুলিশকে রাস্তায় নামিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেট। পুলিশের দাবি, তাতে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেছে। যদিও রাতের পথে ট্র্যাফিক পুলিশের উপস্থিতিকে কি আদৌ গুরুত্ব দিচ্ছেন বেপরোয়া চালকেরা, এ দিনের দুর্ঘটনার পরে সে প্রশ্নও উঠছে।
বিধাননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘রাতে ট্র্যাফিক পুলিশ ওই রাস্তায় ডিউটিতে থাকে। তাতে বেপরোয়া চালকেরা খানিকটা সতর্ক হবেন। দুর্ঘটনা কমেছে, তবে অবশ্যই এই ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। ডাম্পারের গতিবিধির উপরেও নজর রাখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy