Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata

Rape victim: ধর্ষণে অভিযুক্ত দাদা, পরে পিছপা তরুণী

বুধবারের এই ঘটনাপ্রবাহ আনন্দপুর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলাকে ঘিরে। পুলিশ যদিও এ দিন জানিয়েছে, এর পরে আদালতই সিদ্ধান্ত নেবে।

ছবি প্রতীকী

ছবি প্রতীকী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২১ ০৮:১৫
Share: Save:

নিজের দাদা দিনের পর দিন তাঁকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক তরুণী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। আলিপুর আদালতে তোলা হলে ধৃতকে এক দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠান বিচারক। আজ, বৃহস্পতিবার তরুণীর গোপন জবানবন্দিরও দিন দিয়েছে আদালত। কিন্তু তার পরেই আদালতে চিঠি দিয়ে তরুণী জানালেন, তিনি এই মামলাটি নিয়ে আর এগোতে চান না!

বুধবারের এই ঘটনাপ্রবাহ আনন্দপুর থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলাকে ঘিরে। পুলিশ যদিও এ দিন জানিয়েছে, এর পরে আদালতই সিদ্ধান্ত নেবে। যে অভিযোগ ঘিরে মামলাটি রুজু হয়েছে, সেটি অত্যন্ত গুরুতর। বিচারকের নির্দেশ মেনেই ধৃতকে আজ, বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হবে। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, পরিবারের জন্যই হয়তো তরুণী পিছিয়ে যেতে চাইছেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ আনন্দপুর থানায় হাজির হন ওই তরুণী। তাঁর অভিযোগ, তাঁর দাদা গত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দফায় দফায় তাঁকে ধর্ষণ করেছে। পরিবারের লোকজনকে বিষয়টি জানালে কেউ বিশ্বাস করেননি। বাধ্য হয়ে তরুণী নিজেই পুলিশের দ্বারস্থ হন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারায় (ধর্ষণ) মামলা রুজু করে সোমবার রাতেই তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা করায় পুলিশ। তার পরেই অভিযুক্তকে ধরতে তরুণীর বাড়িতে যান তদন্তকারীরা। যদিও তরুণী জানান, তিনি থানায় যাচ্ছেন বলতেই বাড়ি ছাড়ে দাদা। মোবাইল টাওয়ার লোকেশন দেখে টিটাগড় থেকে মঙ্গলবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়।

তরুণী দাবি করেন, তাঁদের বাবা-মা মারা গিয়েছেন। তিনি একটি বিমা সংস্থায় চাকরি করেন। বাড়িতে তিনি একাই থাকেন। তাঁর দাদা পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। সে চাকরিসূত্রে ভিন্ রাজ্যে থাকে। তবে গত প্রায় দেড় বছর ধরে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চলায় সে কলকাতায় বোনের কাছে চলে আসে। গত জানুয়ারিতে তাঁকে দাদা প্রথম ধর্ষণ করে বলে তরুণীর অভিযোগ। এর পরে বেশ কয়েক দফায় বিষয়টি গত মে মাস পর্যন্ত চলে। আত্মীয়দের জানালেও তাঁর কথা কেউই বিশ্বাস করেননি বলে তরুণীর দাবি।

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত যুবক দাবি করেছে, বোনের অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন সে মেনে নিতে পারছিল না। সম্প্রতি বোনের সঙ্গে এক যুবকের সম্পর্কও সে মেনে নিতে পারেনি বলে ধৃতের দাবি। সেই রাগেই বোন তাকে ফাঁসাচ্ছেন বলে অভিযোগ যুবকের। পুলিশ অবশ্য দু’পক্ষের বক্তব্যই খতিয়ে দেখছে।

অভিযোগকারিণীর মামলা তুলে নেওয়ার আবেদন শুনে মনোরোগ চিকিৎসক জয়রঞ্জন রাম এবং অনিরুদ্ধ দেব দু’জনেই জানাচ্ছেন, এই ধরনের ঘটনায় ক্ষমতাশালীর ক্ষমতা প্রদর্শনের একটা বিষয় কাজ করে বলে বহু ক্ষেত্রেই তা সামনে আসে না। এলেও যিনি নিগ্রহের শিকার হয়েছেন, তিনি মিথ্যা বলছেন বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে তেমন কোনও বিষয় কাজ করছে কি না, দেখা দরকার বলে জানান তাঁরা। তাঁদের আরও বক্তব্য, বাড়ির বাইরে গেলে নিরাপত্তা নিয়ে বহু ভাবনাচিন্তা হয়, কিন্তু এই ধরনের ঘটনা যে বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের দ্বারাও ঘটতে পারে, তা তদন্তকারী সংস্থাগুলির অপরাধ পরিসংখ্যান দেখলেই স্পষ্ট হয়।

রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কমিশন বিষয়টি নজরে রেখেছে। তবে আদালতই তদন্ত এগোনোর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। সত্যি যা-ই হোক, সেটা সামনে আসা দরকার।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Rape Victims
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy