Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

রণবীর-অনুষ্কার ভেলভেট আবেগে ভাসল শহর

বিকেল তখন সাড়ে চারটে। আনন্দবাজার পত্রিকার দফতর থেকে বেরিয়ে কলকাতার গরমকে বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে গাড়ি ছুটল সিটি সেন্টার টু-এর দিকে। আড়াই হাজার মানুষ তখন সেখানে অধীর অপেক্ষায়। চার দিকে শুধু একই আওয়াজ, ‘উই ওয়ন্ট রণবীর, উই ওয়ন্ট অনুষ্কা’। দুধ সাদা লেয়ার গাউন আর ঝোলা দুলে অনুষ্কা শর্মা তখন যেন ‘বম্বে ভেলভেট’য়ের জ্যাজ গায়িকা রোজি। আর রণবীর কপূর খোলামেলা মেজাজে কালো ট্রাউজার, টি শার্ট আর জ্যাকেটে অগুনতি ফ্যানেদের উদ্দেশে ফ্লাইং কিস ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে যাচ্ছেন।

খুনসুটি। নতুন ছবির প্রচারে আনন্দবাজার পত্রিকার দফতরে রণবীর-অনুষ্কা। ক্যামেরাবন্দি করলেন রণজিৎ নন্দী।

খুনসুটি। নতুন ছবির প্রচারে আনন্দবাজার পত্রিকার দফতরে রণবীর-অনুষ্কা। ক্যামেরাবন্দি করলেন রণজিৎ নন্দী।

স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৫ ০৩:০৮
Share: Save:

বিকেল তখন সাড়ে চারটে।

আনন্দবাজার পত্রিকার দফতর থেকে বেরিয়ে কলকাতার গরমকে বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা না করে গাড়ি ছুটল সিটি সেন্টার টু-এর দিকে। আড়াই হাজার মানুষ তখন সেখানে অধীর অপেক্ষায়। চার দিকে শুধু একই আওয়াজ, ‘উই ওয়ন্ট রণবীর, উই ওয়ন্ট অনুষ্কা’।

দুধ সাদা লেয়ার গাউন আর ঝোলা দুলে অনুষ্কা শর্মা তখন যেন ‘বম্বে ভেলভেট’য়ের জ্যাজ গায়িকা রোজি। আর রণবীর কপূর খোলামেলা মেজাজে কালো ট্রাউজার, টি শার্ট আর জ্যাকেটে অগুনতি ফ্যানেদের উদ্দেশে ফ্লাইং কিস ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে যাচ্ছেন। রক্ষীদের নিষেধ উড়িয়ে দিয়ে ফ্যানেদের সঙ্গে একের পর এক সেলফি, গ্রুপফি তুলতে তুলতে মঞ্চে লাফিয়ে উঠলেন তিনি। কলকাতার মানুষ বরাবরই তাঁকে আর তাঁর ছবিকে ভালবেসেছে। কলকাতার এই ভালবাসার জন্যই তিনি নিজে বাংলা শিখেছেন। মঞ্চে এসেই তাই আধা বাংলায় বলে উঠলেন, ‘কলকাতা, তোমরা কেমোন আছে?’’ অনুষ্কাও কম যান না। তিনি বললেন, ‘‘কলকাতা তোমরা ফাটাফাটি! এই শহরকে আমি ঘুরে দেখতে চাই।’’

এক দিকে রণবীর-ক্যাটরিনার সম্পর্ক নিয়ে চর্চার শেষ নেই। অন্য দিকে বিরাট কোহলি আর অনুষ্কাকে নিয়েও মিডিয়া মুখর। এই অবস্থায় ‘বম্বে ভেলভেট’-এ রণবীর আর অনুষ্কার চুম্বনদৃশ্য নিয়ে তোলপাড় বলিউড। কিন্তু তা নিয়ে এই জুটি আদৌ চিন্তিত নন। উল্টে ছবির সংলাপ বলার অনুরোধ আসতেই অনুষ্কা রণবীরের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলেন, ‘‘তুমনে অগর মুঝে কভি অকেলে ছোড়া তো কাট দুঙ্গি তুঝে।’’ এটাই নাকি এ ছবিতে তাঁর প্রিয় সংলাপ। অনুষ্কার চ্যালেঞ্জ লুফে নিলেন রণবীর। কাছে গিয়ে বললেন, ‘‘মহব্বত, বুড়ি বিমারি লগি তুঝে তো?’’ অনুষ্কার চেরি রঙের ঠোঁটে তখন দুষ্টু হাসি। জবাব এল, ‘‘লাগি তুঝে তো তেরি জিম্মেদারি, মহব্বত বুড়ি বিমারি।’’

ভেলভেট-আবেগে ভাসল শহর। কথার ফাঁকেই ভক্তদের আবদার মেটাচ্ছিলেন ওঁরা। অটোগ্রাফ দেওয়াতে যেন কোনও ক্লান্তি নেই। রণবীর বরং বলছিলেন, ‘‘এক জন অভিনেতা যদি অটোগ্রাফ দিতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যান তা হলে তাঁর অভিনয় ছেড়ে দেওয়া উচিত।’’ বেশ পরিণত লাগছিল এই ‘বদতমিজ দিল’কে। আর হবে নাই বা কেন? ভাবুক প্রেমিক থেকে রণবীর ‘বম্বে ভেলভেট’-এ একজন ফাইটারের ভূমিকায়। বললেন, ‘‘অনুরাগ কাশ্যপের টিম ন’বছর ধরে এই ছবিটা নিয়ে কাজ করেছে। তার পরে আমরা ছবিটা করেছি। অভিনয় করতে গিয়ে তিন মাসের ট্রেনিংও নিয়েছি।’’ একই টেনশন অনুষ্কার মধ্যেও। বললেন, ‘‘জ্যাজ গায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করা বেশ কঠিন ব্যাপার। আমি বেসুরো নই। কিন্তু আমার উচ্চারণ যাতে আমার প্লেব্যাক সিঙ্গারের সঙ্গে মেলে, সেটার জন্য আমি জ্যাজ শিখেছি।’’

কলকাতার জনতা কেবলই চাইছে, রণবীর আর অনুষ্কা একটু নাচুন! কিন্তু মুম্বইয়ের উড়ান ছাড়তে তখন আর মাত্র এক ঘণ্টা বাকি। বারবার মঞ্চ থেকে উদ্যোক্তারা অনুরোধ করছেন, রণবীর আর অনুষ্কাকে যেন ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দর্শক তাঁদের যেতে দিলে তো! অবশেষে জয় হল কলকাতারই। ‘বম্বে ভেলভেট’এর সাউন্ড ট্র্যাকে নেচে উঠলেন রণবীর-অনুষ্কা। নাচতে নাচতে হাঁটু গেড়ে বসে অনুষ্কার হাতে চুমুও খেলেন রণবীর। হাতে গোলাপফুল নিয়ে এ শহরকে বিদায় জানালেন জনি বলরাজ আর রোজি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE