রবিবার গোলপার্ক থেকে রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনীদের মিছিল। — নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামল রামকৃষ্ণ মিশন। রবিবার দুপুরে গোলপার্ক থেকে নন্দন পর্যন্ত দীর্ঘ মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। তাতে পা মিলিয়েছেন রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রাক্তনীরা। ছিলেন তাঁদের পরিবারের সদস্যেরাও। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের অধিকাংশই কালো পোশাক পরেছিলেন। মিছিল মৌনী হলেও প্রতিবাদীদের হাতে প্ল্যাকার্ডে বিচার চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান লেখা ছিল।
রবিবার রামকৃষ্ণ মিশনের এই মৌনী মিছিলের উদ্দেশ্য ছিল একটাই— আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ এবং অপরাধীদের কঠোর শাস্তি। রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যেরা দুপুরে গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশনের সামনে থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। যাত্রা শুরু হয় শঙ্খধ্বনি দিয়ে। গড়িয়াহাট, রাসবিহারী, ভবানীপুর ছুঁয়ে মিছিলের গন্তব্য ছিল নন্দন।
প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ নীরবেই হাঁটেন প্রতিবাদীরা। তবে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডেই লেখা ছিল তাঁদের প্রতিবাদের বার্তা। ‘সবুর করো মা গো তোমার সব সন্তান অন্ধ নয়, মৌনী আছি তার মানে আমরা সবাই অন্ধ নই’, ‘আমরা মৌনী নই, বাক্রুদ্ধ’, ‘কন্যা রে তোর চিতার শপথ, ওই আগুনেই পুড়বে শোষক’, ‘ছি ছি ধিক্কার তাকে, অপরাধীকে যে লুকিয়ে রাখে’— স্লোগানের বিবিধ বার্তায় ছেয়ে ছিল মিছিল।
রবিবারের এই কর্মসূচির আয়োজকদের তরফে উৎসব রায় বলেন, ‘‘এই পদযাত্রা কোনও সংগঠনের নয়, অন্তরের দাবিতে, বিবেকের তাড়নায় আমরা রামকৃষ্ণ মিশনের প্রাক্তনীরা প্রতিবাদ জানাতে এসেছি। আরজি করের ঘটনায় আমরা কেউ মৌনী নই, আমরা বাক্রুদ্ধ। আমরা বলতে চাই, নৃশংস এই ঘটনার নেপথ্যে লুকিয়ে থাকা মুখগুলি প্রকাশ্যে আসুক। অপরাধীরা সাজা পাক। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, ‘একটি জাতির উন্নতির সর্বোত্তম থার্মোমিটার হল, নারীদের প্রতি তার আচরণ।’ আমাদের আশা, সমাজ যেন সে কথা ভুলে না যায়। মা-বোনেদের নিরাপত্তা যেন সুরক্ষিত হয়।’’
উল্লেখ্য, গত ৯ অগস্ট কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে এক কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকেরা কর্মবিরতি পালন করেছেন। কর্মবিরতি পালিত হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও। বর্তমানে ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। বিচারের দাবিতে প্রায় প্রতি দিনই শহরের কোথাও না কোথাও প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজিত হচ্ছে। রবিবার কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত আরও একটি নাগরিক মিছিল হয়েছে আরজি করের প্রতিবাদে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy