Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

মাঝেরহাটের দেরিতে ‘দায়ী’ রাজ্যই, এ বার পাল্টা সরব রেল

২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে রাজ্য সেটি নতুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, এক বছরের মধ্যে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে।

নির্মীয়মাণ: কাজ চলছে নতুন মাঝেরহাট সেতুর। বুধবার। ছবি: অরুণ লোধ

নির্মীয়মাণ: কাজ চলছে নতুন মাঝেরহাট সেতুর। বুধবার। ছবি: অরুণ লোধ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩১
Share: Save:

মাঝেরহাট সেতুর নির্মাণে ‘সময় নষ্ট’ হওয়ার অভিযোগ তুলে তার দায় রেলের উপরে চাপিয়েছিল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি ওই সেতুর তৈরির কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করতে চিঠি দিয়ে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের সহযোগিতা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার রেল কর্তৃপক্ষ পাল্টা দায়ী করল রাজ্য সরকারকে। লিখিত ভাবে গোটা বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ।

২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে রাজ্য সেটি নতুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছিলেন, এক বছরের মধ্যে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। নির্দেশিত সেই সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে গত সেপ্টেম্বর মাসে। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে চলতি বছর শেষ হওয়ার আগে সেতু তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করা যাবে কি না, তা নিয়ে নিশ্চিত নন প্রশাসনিক কর্তারা। রাজ্য বারবারই অভিযোগ করেছে, সেতুর নকশায় রেলের অনুমোদন দেরিতে পাওয়ার কারণে সময় নষ্ট হয়েছে বিস্তর। কিন্তু সম্প্রতি রেল জানিয়েছে, রাজ্য প্রথমে ‘বো-স্ট্রিং’ সেতু বানাতে চেয়েছিল মাঝেরহাটে। পরে স্থির করে, সেখানে ‘কেব্‌ল স্টেড’ সেতু বানানো হবে। রেলের দাবি, এই টালবাহানায় চার মাসেরও বেশি সময় নষ্ট হয়েছিল।

দ্বিতীয় বিষয়ে রেল জানিয়েছে, জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রোপথ মাঝেরহাট সেতুর সমান্তরালে চলছে। রাজ্য সরকারের ইঞ্জিনিয়ারেরা প্রথমে যে পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন, তাতে প্রস্তাবিত সেতুর উত্তর দিকের অ্যাপ্রোচ রোড মেট্রোপথের খুব কাছে চলে আসছিল। রেলের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও রাজ্য পরিকল্পনা সংশোধন করেনি। অবশেষে মুখ্যসচিবের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু তত দিনে দেড় মাসের বেশি সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

রেলের তৃতীয় অভিযোগ, সেতুর সুপারস্ট্রাকচারের যে খসড়া নকশা রাজ্যের পূর্ত দফতর তাদের দিয়েছিল, তাতে ২৯টি কারিগরি খুঁত ধরা পড়েছিল। গত জুলাই মাসে পূর্ত দফতর এবং রাজ্য নিযুক্ত নকশা প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয় রেল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু, ওই বৈঠকের প্রায় এক মাস পরে চূড়ান্ত নকশা জমা দেয় পূর্ত দফতর।

চতুর্থ ব্যাখ্যায় রেল জানিয়েছে, সেতু তৈরির বিলম্ব ঠেকাতে ৪ নভেম্বর পূর্ব রেলের দফতরে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের ডাকা হয়েছিল নির্মাণ এবং ‘লঞ্চিং স্কিম’ (স্তম্ভের উপরে ঠিক মাপে গার্ডারগুলি বসানো) সংক্রান্ত আলোচনার জন্য। ২২ নভেম্বর পূর্ত দফতরের সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা তাঁদের বক্তব্য জানিয়েছিলেন। চূড়ান্ত নকশা তৈরি করে সেটি রেলের অনুমোদনের জন্য ওই দিনই আগের সব নকশা রেল কার্যালয় থেকে ফেরত নেয় পূর্ত দফতর। কিন্তু রেলের অভিযোগ, চূড়ান্ত নকশা সম্পর্কে তারা এখনও রাজ্যের বক্তব্য পায়নি।

গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, ‘‘নকশা ও তাতে রেলের অনুমোদন সময়সাপেক্ষ। নিরাপত্তা সংক্রান্ত দিক থেকে এই বিধি মেনে চলা জরুরি। তবে জনগণের কথা ভেবে বাঁধা গতে কাজের পরিবর্তে রেলেরও উচিত এগিয়ে আসা। তা হলে সময় নষ্ট হত না। সব সময়ে কেন পূর্ত দফতরকেই রেলের কাছে যেতে হবে? মানুষের স্বার্থে জরুরি পর্যায়ে যে কাজ, তা দু’পক্ষের সমন্বয়ে হওয়া প্রয়োজন। রাজ্য তার ভূমিকা পালন করেছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Majerhat Flyover Rail State Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy