ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগে গ্রেফতার গৃহশিক্ষক। প্রতীকী ছবি।
হাতের লেখা করে নিয়ে আসার কথা বলেছিলেন গৃহশিক্ষক। চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াটি জানিয়েছিল, সরস্বতী পুজো থাকায় তা করা হয়নি। আর সেই ‘অপরাধে’ ওই ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। চাদর দিয়ে মাথা ঢেকে কেব্ল দিয়ে তার শরীরে একের পর এক আঘাত করে কালশিটে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ফুলবাগান থানা এলাকার এই ঘটনায় ওই পড়ুয়ার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত গৃহশিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম রবিন সিংহ।
পুলিশ সূত্রের খবর, ফুলবাগান থানা এলাকার কাঁকুড়গাছি সংলগ্ন শিবকৃষ্ণ দাঁ লেনে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকে বছর দশের আয়ুষ সিংহ। বেলেঘাটার একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সে। সম্প্রতি আয়ুষের পড়ার জন্য রবিনকে রাখা হয়। দিন কুড়ি আগে থেকে তাকে পড়াতে শুরু করেন রবিন। পড়ানোর পাশাপাশি আয়ুষের হাতের লেখা ভাল করা যায় কি না, গৃহশিক্ষককে তা-ও দেখতে বলেছিলেন অভিভাবকেরা। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে নিজেদেরই আর একটি ফ্ল্যাটে আয়ুষের পড়ার ব্যবস্থা করেছিলেন তার বাবা উত্তম সিংহ। রবিবার উত্তম বলেন, ‘‘বাড়িতে সকলের মধ্যে পড়াতে অসুবিধা হবে ভেবে কাছেই আমাদের অন্য একটি ফ্ল্যাটে ছেলের পড়ার ব্যবস্থা করি। সেখানেই প্রতিদিন আমার মেয়ে আয়ুষকে দিয়ে আসত। পড়া শেষ হলে ছেলে একাই বাড়ি ফিরত।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার বিকেল ৫টা নাগাদ দিদির সঙ্গে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে যায় আয়ুষ। রবিন পড়াতে এলে দিদি ফিরে আসে। এর পরে সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ একাই ফেরে আয়ুষ। তখন তার চোখ-মুখ ফোলা ছিল বলে অভিযোগ। পরে দেখা যায় তার পিঠ, হাত-সহ পায়ের বিভিন্ন জায়গায় কালশিটের দাগ। রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে পিঠে, পায়ের একাধিক জায়গায়। তার মা বেবি সিংহ বলেন, ‘‘ছেলে বাড়ি ফিরতেই দেখি চোখ-মুখ ফোলা। চোখ দিয়ে জল পড়ছে। কী হয়েছে জানতে চাইলে প্রথমে ছেলে কিছু বলতে চায়নি। পরে খেতে বসলে দেখি, ওর হাত কাঁপছে। এর পরে জোর করতেই জানায়, হাতের লেখা না করায় গৃহশিক্ষক ওকে মারধর করেছেন।’’ বেবির অভিযোগ, ছেলের জামা খুলে তিনি দেখেন, হাত থেকে শুরু করে পিঠ এবং পায়ে তার দিয়ে মারার দাগ।
আয়ুষকে এর পরেই স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পাশাপাশি ফুলবাগান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে রবিবার গ্রেফতার করা হয় রবিনকে। ঘটনার পর থেকে ওই পড়ুয়া আতঙ্কে রয়েছে। এ দিন বেবি বলেন, ‘‘শনিবারের পর থেকে ছেলে ভয়ে ভয়ে রয়েছে। বাড়ি থেকে বেরোনো তো দূর, কারও সঙ্গে ঠিক মতো কথাও বলছে না। পিঠে হাত দিলেই ব্যথায় কেঁদে উঠছে।’’ এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy