প্রথমে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিক পরিচয়ে ফোন! তার পরে কখনও পুলিশ, কখনও আবার সিবিআই আধিকারিকের ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ফোন সাইবার প্রতারকদের। শেষে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। সম্প্রতি এই একই কায়দায় বেশ কয়েকটি সাইবার প্রতারণার অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। এ বার এই কায়দায় ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করার অভিযোগে অন্যতম চক্রীকে গ্রেফতার করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। উঠে এসেছে একটি চিনা গ্যাংয়ের যোগের তত্ত্বও।
সম্প্রতি বারাণসীর বাসিন্দা অনুজকুমার যাদবকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। প্রথমে টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার আধিকারিকের পরিচয়ে এবং তার পরে সিবিআই আধিকারিকের ভুয়ো পরিচয়ে ফোন করা হয়েছিল তাঁকে। অভিযোগ, প্রতারকেরা তাঁকে ডিজিটাল গ্রেফতার করে ৯৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ওই মামলার তদন্তে একটি প্রতারণা চক্রের সন্ধান পায় বারাণসী সাইবার অপরাধদমন শাখা। গ্রেফতার করা হয় ১১ জন অভিযুক্তকে। তালিকায় রয়েছেন উত্তরপ্রদেশের বহরাইচ জেলার বাসিন্দা নিজ়াম আহমেদ। তিনিই এই চক্রের মূল পান্ডা বলে সন্দেহ পুলিশের। পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের এই চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করতেন নিজ়ামই।
বারণসীর অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার শ্রুতি শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, প্রতারকেরা প্রথমে তাঁদের শিকারকে বেছে নিতেন। তার পরে ওই শিকারকে ফোন করে বলা হত, তাঁর নামে তোলা সিম থেকে অপরাধমূলক কাজকর্ম চলছে। সে কথায় শিকার এক বার প্রভাবিত হয়ে গেলেই তাঁর থেকে টাকা হাতিয়ে নিতেন প্রতারকেরা। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এই চক্রের মূল পান্ডার সঙ্গে একটি চিনা গ্যাংয়েরও যোগ পাওয়া গিয়েছে। যদিও এ বিষয়ে এখনই সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য করতে চাইছে না পুলিশ।
তবে অতিরিক্ত ডিসিপি শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের এই সাইবার প্রতারকদের দল নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত ‘ড্রাগন এসএমএস’ নামে একটি অ্যাপের মাধ্যমে। নিজ়ামের মোবাইল ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও বেশ কয়েক জন জড়িত রয়েছে বলে সন্দেহ বারাণসী সাইবার অপরাধদমন শাখার। ওই এজেন্টরা নিজ়ামকে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বানানোর কাজে সাহায্য করতেন বলেও খবর।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি সাইবার প্রতারণার টাকা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বদলে দেওয়ার অভিযোগে ইনদওর থেকে এক ডাক্তারি পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ওই ঘটনাতেও উঠে এসেছিল চিনা গ্যাংয়ের যোগের তত্ত্ব। পুলিশের সন্দেহ, একটি চিনা গ্যাংয়ের হয়ে ওই কাজ করছিলেন বছর তেইশের ওই এমবিবিএস পড়ুয়া। সেপ্টেম্বর মাসে বেঙ্গালুরুতে ৬ কোটি টাকার একটি সাইবার প্রতারণা মামলাতেও উঠে এসেছিল চিনা গ্যাংয়ের যোগের অভিযোগ। তবে এই চিনা গ্যাংয়ের নেপথ্যে কারা রয়েছেন, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও তথ্য প্রকাশ্যে আসেনি।