সৌরভ মণ্ডল
প্রায় দু’বছর আগে একটি বাগানবাড়ির কেয়ারটেকার দম্পতিকে খুনের কিনারা করল পুলিশ। গ্রেফতার করা হল এক জনকে। খোঁজ চলছে অন্য জনের। একটি মোবাইল চুরি চক্রের সূত্র ধরে এই কিনারা বলে খবর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালের ৩০ জুলাই নরেন্দ্রপুর থানার তিউরিয়ার একটি বাগানবাড়ি থেকে প্রদীপ বিশ্বাস (৪৮) ও আলপনা বিশ্বাস (৪২) নামে ওই দম্পতির ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। গলার নলি কেটে ট্রলি ব্যাগে তাঁদের দেহ ভরে চম্পট দিয়েছিল আততায়ীরা।
কিন্তু খুনের কিনারা না হওয়ায় তদন্তের ভার দেওয়া হয় সিআইডি-কে। তারাও ওই ঘটনার কিনারা করতে পারেনি। বারুইপুর পুলিশ জেলা সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগে মোটরসাইকেল চুরি চক্রের কয়েক জনকে ঢালুয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের জেরা করার সময়ে সৌরভ মণ্ডল নামে এক জন ওই ঘটনার কথা স্বীকার করে।
তদন্তকারীদের দাবি, ওই বাগানবাড়ি থেকে কিছু দূরে সায়েদাবাদ এলাকায় থাকে সৌরভ। সে ও তার এক বন্ধু নিয়মিত ওই বাগানবাড়িতে যেত। বিশাল বৈরাগী নামে সৌরভের এক সঙ্গীর সঙ্গে আলপনার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বিষয়টি জানাজানি হলে প্রদীপের সঙ্গে বিশালের কয়েক বার বচসা বাধে। এর পরেই প্রদীপকে খুন করার ছক কষে বিশাল। ২০১৯-এর ২৮ জুলাই বিশাল ও সৌরভ খিদিরপুর থেকে বিদেশি ছুরি কিনে আনে। সৌরভের কাছে একটি ওয়ান শটার পিস্তলও ছিল। ২৮ জুলাই গভীর রাতে দরজা ভেঙে প্রথমে প্রদীপের উপরে হামলা চালায় বিশাল। তাঁর নলি কেটে দেয় সে। প্রদীপের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় পাশে শুয়ে থাকা আলপনার। স্বামীকে মেরে না ফেলার জন্য কাকুতিমিনতি করেন তিনি। সৌরভ ও বিশাল আলপনার মুখে কাপড় চেপে ও হাত-পা বেঁধে শৌচাগারে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। আলমারি খুলে তছনছ করে ঘটনাটিকে ডাকাতি করতে এসে খুন, এমন দেখানোর চেষ্টা করে তারা। তদন্তকারীদের আরও দাবি, ওই দু’জন মনে করেছিল, স্বামীর মৃত্যুর ঘটনা পুলিশকে বলে দেবেন আলপনা। তাই খুনের সাক্ষী আলপনারও নলি কেটে দেয় তারা। ঘরে থাকা ট্রলি ব্যাগে দেহ দু’টি ভরে বাইরে ফেলে দিতে চেয়েছিল আততায়ীরা। কিন্তু তখন ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ছিল। তাই দেহ ঘরে ফেলেই দু’জন পালায়।
বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “সৌরভকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। খুনের ঘটনা কবুল করেছে সে।” নরেন্দ্রপুর থানা ও বারুইপুর পুলিশ জেলার স্পেশ্যাল অপারেশন্স গ্রুপের অফিসারেরাও সৌরভকে লাগাতার কয়েক দিন ধরে জেরা করেছেন। তাকে সিআইডি-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে থানা সূত্রের খবর। ওই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত বিশালের খোঁজ চলছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy