এই বাড়িতেই শাশুড়িকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন জামাই। নিজস্ব চিত্র।
স্ত্রী শিল্পী আগরওয়ালকে খুনের আগে ব্যাপক বচসা এবং ধস্তাধস্তি হয় অমিত আগরওয়ালের সঙ্গে। সোমবার রাতে বেঙ্গালুরুর হোয়াইটফিল্ডের মহাদেবপুরমের অভিজাত ব্রিগেড মেট্রোপলিস অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয় শিল্পীর দেহ। কলকাতা পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে যখন বেঙ্গালুরু পুলিশ সেখানে পৌঁছয়, ফ্ল্যাটের তালা বন্ধ ছিল। তালা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকেই পুলিশের চোখে পড়ে গোটা ফ্ল্যাট লন্ডভন্ড।
বেঙ্গালুরু পুলিশের এক তদন্তকারী জানিয়েছেন, ‘‘আমরা ফ্ল্যাটে তালা ভেঙে ঢুকতেই দেখতে পাই গোটা হল জুড়ে জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে। গোটা ঘরে মারপিট, ধস্তাধস্তির চিহ্ন।” ফ্ল্যাটে ঢোকার মুখেও মারামারির চিহ্ন। তা থেকে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, শিল্পী হয়তো অমিতকে ফ্ল্যাটে ঢুকতে বাধা দিয়েছিলেন। অন্যদিকে রান্নাঘরেও সমস্ত জিনিস পত্র ছড়ানো ছিটানো পেয়েছে পুলিশ। রয়েছে ভাঙাচোরা তুবড়ানো বাসনপত্র। শোওয়ার ঘরের কাছে শিল্পীর দেহ পায় পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। তবে কী দিয়ে শ্বাসরোধ করা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
তদন্তকারীরা প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছেন, পেশায় চাটার্ড অ্যাকাউন্টান্ট অমিত এবং শিল্পীর মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার পর শিল্পী বেঙ্গালুরুতে থেকে যান। কলকাতায় চলে আসেন অমিত। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছিল বেঙ্গালুরুতেই। তাই প্রায়শই সেখানে যেতেন অমিত। পুলিশ শিল্পীর প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে, অমিত এবং শিল্পীর ছেলে থাকত শিল্পীর সঙ্গে। সেই ছেলেকে নিজের কাছে রাখার চেষ্টা করছিলেন অমিত। ছেলের সঙ্গে দেখা করার জন্য কয়েকমাস অন্তর বেঙ্গালুরুতে যেতেন অমিত। শিল্পীর প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, অমিত সেখানে গেলেই শিল্পীর সঙ্গে বচসা হত।
বেঙ্গালুরুর ফ্ল্যাটে স্ত্রীকে খুন করে তালাবন্ধ করে দেন অমিত। তারপর সোমবার বিকেলের বিমানে ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় ফেরেন। ছেলেকে নিজের ভাইয়ের কাছে রেখে ফুলবাগানে শ্বশুরবাড়িতে আসেন। সেখানেও শ্বশুর সুভাষ ঢনঢনিয়ার সঙ্গে বচসার সময় শাশুড়ি ললিতাকে গুলি করে খুন করেন অমিত। তারপর নিজেও আত্মহত্যা করেন। রেখে যান একটি চিরকূট। সেখান থেকে পুলিশ জানতে পারে, শাশুড়িকে খুন করার আগে বেঙ্গালুরুতে স্ত্রীকে খুন করে এসেছে অমিত। পুলিশের অনুমান শ্বশুর-শাশুড়ি সবাইকে খুন করার পরিকল্পনা নিয়েই এসেছিলেন অমিত। কিন্তু শ্বশুর কোনও মতে পালিয়ে যান। কিন্তু কেন খুন তা নিয়ে নিশ্চিত নয় পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, স্ত্রী শিল্পীর সঙ্গে চলা বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার সঙ্গে খুনের মোটিভের যোগ রয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্ত্রীকে খুনের সময় ফ্ল্যাটে ছিল না অমিতের ছেলে। তাকে অমিত বলেছিলেন, শিল্পী কলকাতায় গিয়েছেন জরুরি কাজে। সেই কথা বলেই ছেলেকে নিজের সঙ্গে কলকাতায় নিয়ে আসে অমিত।
আরও পড়ুন: জেটি ভেঙে লঞ্চ বন্ধ তিন মাস, দুর্ভোগ
আরও পড়ুন: বন্ধ লস্যির দোকানে ঝুলন্ত দেহ মালিকের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy