Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
christmas

Christmas Celebration: প্রশাসনের ছাড়ে আতঙ্কের মেঘ বর্ষশেষে

ওমিক্রনের কথা মাথায় রেখেই মহারাষ্ট্র, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটক প্রশাসন বর্ষবরণের যাবতীয় উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো সমস্ত জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে।

বেপরোয়া: যাবতীয় বিধি উড়িয়ে ভিড় উপচে পড়েছে বড়দিনের আগের সন্ধ্যায়। নিউ মার্কেটে।শুক্রবার।

বেপরোয়া: যাবতীয় বিধি উড়িয়ে ভিড় উপচে পড়েছে বড়দিনের আগের সন্ধ্যায়। নিউ মার্কেটে।শুক্রবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৩৮
Share: Save:

বড়দিন ও বর্ষশেষের উৎসব উপলক্ষে শুক্রবার থেকে রাতের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু এ দিন দুপুর থেকেই জনজোয়ারে ভাসল পার্ক স্ট্রিট এবং ধর্মতলা চত্বর। রাত যত বেড়েছে, ওই এলাকায় ততই বেড়েছে উৎসবমুখী জনতার ভিড়। মাস্ক পরে থাকার দায়িত্বও অধিকাংশ মানুষ পালন করেননি বলে অভিযোগ। ফলে আজ, শনিবার বড়দিনের সন্ধ্যার পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত পুলিশ-প্রশাসন। চিকিৎসকদের প্রশ্ন, ‘‘করোনার নতুন স্ট্রেন পাঁচ-ছ’গুণ বেশি সংক্রামক জেনেও কেন লক্ষাধিক মানুষকে পথে নামার সুযোগ দেওয়া হল?’’

অথচ, ওমিক্রনের কথা মাথায় রেখেই মহারাষ্ট্র, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও কর্নাটক প্রশাসন বর্ষবরণের যাবতীয় উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো সমস্ত জমায়েত নিষিদ্ধ করেছে। ইতিমধ্যেই দেশের মধ্যে সর্বাধিক ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ে চিন্তিত মহারাষ্ট্র প্রশাসন। চিকিৎসকদের প্রশ্ন, ‘‘যেটা ওরা পারে, এ রাজ্য পারে না কেন?’’

আর পারে না বলেই বড়দিনের আগের দুপুরে পার্ক স্ট্রিটের দু’পাশের ফুটপাতে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। তার মধ্যে দিয়েই এগিয়েছে রেস্তরাঁর দীর্ঘ লাইন। জওহরলাল নেহরু রোড থেকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত গাড়ির গতি অত্যন্ত শ্লথ ছিল। ভিড় নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন পুলিশকর্মীরা। অ্যালেন পার্ক সংলগ্ন রাস্তায় তৈরি হয়ে যাওয়া সেলফি জ়োনে মাস্ক পরার ব্যাপারই নেই। সেখানে হাজির কলেজপড়ুয়া স্বাতী কর্মকারের যুক্তি, ‘‘মাস্ক পরলে কি মুখের ছবি ভাল আসে?’’ ভিড়ের মধ্যেই বাঁশি বাজিয়ে মাস্ক পরতে বলে যাচ্ছিলেন এক পুলিশকর্মী। কিন্তু সে কথা কেউ কানে তুললে তো! জনতা যতই বিধিভঙ্গ করুক, তাদের নিয়ন্ত্রণে পুলিশি বন্দোবস্তের অভাব নেই।

কলকাতা পুলিশের প্রায় তিন হাজার কর্মীকে এই সময়ের নিরাপত্তার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে। পার্ক স্ট্রিট এবং ধর্মতলা চত্বর জুড়ে রয়েছে সাদা পোশাকের নজরদারি দল। টহল দেবে মহিলা বাহিনী ‘উইনার্স’ এবং ‘শক্তি যান’। গোটা পার্ক স্ট্রিটকে মল্লিকবাজার পর্যন্ত ছ’টি জ়োনে ভাগ করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক-এক জন ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারকে। দায়িত্বে থাকছেন ১২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার। যুগ্ম-কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারেরাও থাকছেন নজরদারিতে। শুধুমাত্র পার্ক স্ট্রিটেই রয়েছে ১১টি নজর-মিনার। শহরে থাকছে ৯০টি পুলিশ পিকেট এবং ১০০টি পুলিশ সহায়তা বুথ।

ভিড়ের কথা শুনে বিস্মিত কার্ডিয়োথোরাসিক শল্য চিকিৎসক কুণাল সরকারের মন্তব্য, ‘‘ওমিক্রনের ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা পাঁচ-ছ’গুণ বেশি জেনেও এত মানুষকে রাস্তায় নামতে দেওয়া হচ্ছে কেন?’’ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের বক্তব্য, ‘‘ভারতে ওমিক্রন কতটা ছড়িয়ে গিয়েছে, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। এটা দুর্ভাগ্য যে, ভিড় এড়িয়ে কী ভাবে উৎসব পালন করতে হয়, এখনও আমরা তা শিখলাম না।’’ শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলছেন, ‘‘শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নতুন স্ট্রেনে। বহু রোগী, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী কী ভাবে লড়ছেন, সেটা ছেলেমেয়েদের বোঝানোর এটাই সময় ছিল। জীবনে হাঁফিয়ে উঠেছেন বলে যাঁরা আনন্দে মাতছেন, তাঁদের বলতে চাই, এক দিন ১২ ঘণ্টা পিপিই কিট পরে কাটান। বুঝবেন হাঁফিয়ে যাওয়া কাকে বলে!’’

অন্য বিষয়গুলি:

christmas Park Street Omicron corona Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy