সাজগোজ: বুধবার শহরের তিনটি মেট্রোপথের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই উপলক্ষে ঢেলে সাজানো হয়েছে এসপ্লানেড স্টেশন চত্বর। ছবি রনজিৎ নন্দী।
শহরে মেট্রো পরিষেবা শুরু হওয়ার চার দশক পরে এই প্রথম আজ, বুধবার সশরীরে স্টেশনে হাজির হয়ে পরিষেবার সূচনা করবেন কোনও প্রধানমন্ত্রী। এর আগে নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর এবং জোকা-তারাতলা মেট্রোপথের সূচনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী করলেও তা ছিল ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান।
আজ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্লানেড থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত ৪.৮ কিলোমিটার, নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোপথের নিউ গড়িয়া থেকে রুবি পর্যন্ত ৫.৪ কিলোমিটার এবং জোকা-তারাতলা মেট্রোপথের মাঝেরহাট পর্যন্ত ১.২৫ কিলোমিটার সম্প্রসারিত অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। শহরের মেট্রো ক্ষেত্রে প্রায় ১১.৪৫ কিলোমিটার পথের সংযুক্তি ঘটবে। দ্রুত ওই সব মেট্রোপথে যাত্রী পরিষেবা শুরু করতে চান মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
এসপ্লানেড স্টেশনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি হিসাবে দু’প্রান্তের প্রবেশপথে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রায় ৬০ এবং ৩০ ফুট লম্বা দু’টি কাট-আউট বসানো হয়েছে। স্টেশন চত্বরে ১০০ মিটার লম্বা এবং ৩০ মিটার চওড়া অতিকায় চাঁদোয়া টাঙানো হয়েছে। কেন্দ্রের শাসক দলের জনপ্রতিনিধি, নেতা এবং অন্য আমন্ত্রিতদের সেখানেই বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকছেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদিও তিনি থাকতে পারছেন না বলে জানিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর।
সকাল ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে আসতে পারেন।
মেট্রো প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠান হবে মাটির প্রায় ২৮ মিটার নীচে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্ল্যাটফর্মে। সেখানেই দু’টি রেকের ভিতরে ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। প্ল্যাটফর্মে একটি মঞ্চ থাকছে। সেখান থেকেই পতাকা নেড়ে মেট্রোযাত্রার সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। উপর থেকে প্ল্যাটফর্মে নামার রেলিং ফুলের মালায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। সকাল ১০টা ৫০ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটার কথা।
শহরের নতুন তিনটি মেট্রোপথের সূচনা ছাড়াও দেশের একাধিক শহরের মেট্রো প্রকল্পের শিলান্যাসের জন্য ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্লানেড স্টেশনকে বেছে নেওয়ার মূলে অবশ্যই রয়েছে ওই মেট্রোর বৈশিষ্ট্য।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে নদীর নীচে সুড়ঙ্গপথে মেট্রো পরিষেবা চালু করা নিশ্চিত করতে গত কয়েক মাস ধরে তৎপরতা দেখিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। মেট্রো রেলের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নিরাপত্তা কমিশনার গত ডিসেম্বরে প্রকল্পের বিভিন্ন অসম্পূর্ণতা দেখে পরিদর্শন মাঝপথে স্থগিত রেখে ফিরে যান। তার পর থেকে উদ্বোধনের বিষয়টি মাথায় রেখেই সরকারি তরফে নাগাড়ে চেষ্টা চালিয়ে বকেয়া কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। জানুয়ারির চূড়ান্ত পরিদর্শনে ধরা পড়ে একাধিক খামতি। সে সব মিটিয়ে কী ভাবে পরিষেবা চালু করা যায়, তা নিয়ে দফায় দফায় খোঁজ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। বস্তুত, ২০১৮ সাল থেকে শহরের সব ক’টি মেট্রো প্রকল্পের নজরদারি করছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।
যদিও গত কয়েক মাস ধরে নাগাড়ে প্রস্তুতি চালিয়েও এসপ্লানেড স্টেশনের অগোছালো দশা ঘোচানো যায়নি। মেট্রোর তরফে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন অংশের সাফাই, নিরাপত্তার বেষ্টনী করতে গার্ডরেল নামানো-সহ নানা ব্যস্ততা চলে।
প্ল্যাটফর্মের পরিসর ছোট হওয়ায় ওই অনুষ্ঠানে সীমিত ব্যক্তির প্রবেশাধিকার থাকছে। বাইরে বসানো জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে আমন্ত্রিতদের সরাসরি অনুষ্ঠান দেখানো হবে।
জোকা মেট্রো মাঝেরহাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ার ফলে ওই মেট্রো শিয়ালদহ-বজবজ শাখার রেললাইনের সঙ্গে জুড়ে যাবে। কবি সুভাষ এবং রুবি পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু হওয়ার ফলে যাত্রীরা এর পরে হাওড়া থেকে সরাসরি রুবি পর্যন্ত মেট্রোয় সফর করতে পারবেন। হাওড়ায় সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ার প্রায় আট বছর পরে অবশেষে প্রকল্প উদ্বোধন হতে চলায় অনেকেই উৎফুল্ল। এ বার কলকাতার সঙ্গে হাওড়ার দূরত্ব কয়েক মিনিটে নেমে আসার অপেক্ষায় প্রহর গোনা শুরু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy