ক্ষুব্ধ: টাকা হাতে পথ অবরোধে স্থানীয় মহিলারা। বৃহস্পতিবার, ট্যাংরায়। নিজস্ব চিত্র
কারও হাতে দুশো, কারও আবার হাতে পাঁচশো টাকার নোট। তা তুলে ধরে সামনে দাঁড়ানো পুলিশকে ক্রমাগত দেখাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। চিৎকার করে তাঁরা দাবি তুলেছেন, ‘‘টাকা দিতে পারি, অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়া হোক।’’
বৃহস্পতিবার সকালে টানা দু’ঘণ্টা এমনই প্রতিবাদের মুখে পড়ল পুলিশ। শেষে ট্যাংরা থানা এবং লালবাজার থেকে বিশাল বাহিনী পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তার মধ্যেও বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে ঘিরে ধরে বলতে থাকেন, ‘‘অপহরণের ধারা কেন দেওয়া হয়নি, আগে তা-ই বলুন।’’ এক ব্যক্তি ট্যাংরা থানার ওসির আশ্বাস শুনে বলেন, ‘‘মন রাখতে হবে না। পুলিশ তার নিজের কাজ করুক।’’
মঙ্গলবার রাতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু ঘিরে আপাতত শোরগোল চলছে শহরের নানা মহলে। সেখানে মৃতের পরিবারের দাবি, রাত ১২টা নাগাদ ফেরার সময়ে তাঁদের বধূর পথ আটকায় একটি অ্যাম্বুল্যান্স। বধূকে হাত ধরে টেনে তাতে তোলার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। বধূর চিৎকার শুনে ছুটে যান পিছনে হেঁটে আসতে থাকা তাঁর শ্বশুর-সহ অন্য আত্মীয়েরা। তবে দাঁড়ানোর পরিবর্তে অ্যাম্বুল্যান্সের চালক গতি বাড়িয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাতেই পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় প্রৌঢ় শ্বশুরের। এর পরেই পুলিশ অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানোর (৩০৪) ধারায় মামলা রুজু করে। তবে অপহরণের চেষ্টার ধারা কেন দেওয়া হচ্ছে না তা নিয়েই এ দিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই প্রৌঢ়ের আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা।
এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ একদল লোক প্রথমে ক্রিস্টোফার রোড এবং গোবিন্দ খটিক রোডের সংযোগস্থলে বসে পড়েন। তাঁদের হাতেই ছিল নোট। অবরোধকারীদের অধিকাংশই ছিলেন মহিলা। যে মহিলাকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ, তিনি এবং তাঁর স্বামী-সহ অন্য আত্মীয়েরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এর জেরে গোবিন্দ খটিক রোডে পরপর দাঁড়িয়ে পড়ে গাড়ি। ঘটনাস্থলের কাছেই দু’টি স্কুল রয়েছে। স্কুলে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হয় পড়ুয়ারা। যান নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হয় পুলিশকে। সেই সময়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে যান ট্যাংরা থানার ওসি ও ঊর্ধ্বতন পুলিশ আধিকারিকেরা। বিক্ষোভকারীরা প্রথমে পুলিশের সঙ্গে কথাই বলতে চাননি।
মৃতের পুত্র সেখানেই বলেন, ‘‘পুলিশের উপরে আস্থা রেখেছিলাম আমরা। শুধু অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ নিতে না চাওয়াই নয়, বাবার মৃত্যুকালীন জবানবন্দিকে হাতিয়ার করা হয়েছে। যাঁর বুকের পাঁজর ভেঙে গিয়েছে, পায়ের হাড় ভেঙে ঝুলছে তিনি মৃত্যুর সময়ে কী বললেন তা নিয়ে কিছু ঠিক করা যায়?’’ পাশে দাঁড়ানো মৃতের পুত্রবধূ বলেন, ‘‘আমার চিৎকারেই বাবা ছুটে এসেছিলেন। অ্যাম্বুল্যান্স ধাক্কা দেওয়ার পরে প্রায় তিন ঘণ্টা আমি হাসপাতালেই বাবাকে নিয়ে বসে ছিলাম। জল খেতে চাওয়া ছাড়া তিনি সে ভাবে কিছুই বলতে পারেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy