Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ভাঙছে বাড়ি, তবু বসবাস চলছেই

বাড়ির চার পাশে ছাদ থেকে দেওয়াল বেয়ে বেড়েছে নানা আগাছা। নীচের দিকে নেমে আসা বট, অশ্বত্থের ডাল মাথায় ঠেকছে। ভেতরে ঢুকতেই গা ছমছম! স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর দুয়েক আগে বাড়িটির একটা অংশ ভেঙে পড়ে।

জরাজীর্ণ: এমনই অবস্থায় রয়েছে খিদিরপুরের সেই বাড়ি। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

জরাজীর্ণ: এমনই অবস্থায় রয়েছে খিদিরপুরের সেই বাড়ি। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০৭:৩০
Share: Save:

উপরে সিপিএমের পার্টি অফিস। একতলায় কেরোসিনের দোকান। খিদিরপুরের চার নম্বর রামকমল স্ট্রিটের ওই দোতলা বাড়িটিকে কলকাতা পুরসভা ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত করে ২০১৩ সালে দু’বার নোটিস পাঠায়। তার পরেও সেখানে বসবাস করছেন তিন জন ভাড়াটে।

বুধবার দুপুরে বাড়িটিতে ঢুকতে গিয়েই থমকে যেতে হল। প্রায় দুশো বছরের পুরনো বাড়িটির নানা অংশ বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বাড়িটি ভুতুড়ে বলেই পরিচিত। তবু ওই জীর্ণ বাড়িতে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস চলছেই।

বাড়ির চার পাশে ছাদ থেকে দেওয়াল বেয়ে বেড়েছে নানা আগাছা। নীচের দিকে নেমে আসা বট, অশ্বত্থের ডাল মাথায় ঠেকছে। ভেতরে ঢুকতেই গা ছমছম! স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছর দুয়েক আগে বাড়িটির একটা অংশ ভেঙে পড়ে। পরে পুরসভার তরফে বাড়িটির আরও কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হয়। বাকি অংশও যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কায় কাঁটা প্রতিবেশীরা। এক প্রতিবেশীর কথায়, ‘‘ওই বাড়ির আশপাশ দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে হয়। প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কে থাকি। এই ধরনের বিপজ্জনক বাড়ি সংস্কারে মালিকের উদ্যোগী হওয়া উচিত।’’

কিন্তু এমন বিপজ্জনক অবস্থায় দিনের পর দিন বসবাস করছেন কেন ভাড়াটেরা? উত্তর দেননি তাঁরা। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর ষষ্ঠী দাস বলেন, ‘‘বাড়িটির মালিকানা নিয়ে শরিকি গণ্ডগোল চলছে। মালিকের তরফে নতুন করে সংস্কার করার বিষয়ে পুরসভার কাছে আবেদন করা হয়েছে। শরিকি সমস্যা মিটে গেলেই বাড়ি ভেঙে প্রোমোটিংয়ের কাজ শুরু হবে।’’

দোতলায় প্রায় ৬০ বছর ধরে খিদিরপুর সিপিএম জোনাল অফিস রয়েছে। স্থানীয় সিপিএম নেতা ফৈয়াজ খান বলেন, ‘‘বাড়িটি বিপজ্জনক হলেও আমাদের পার্টি অফিসের ঘরটি নিয়মিত সংস্কার করা হয়।’’ কিন্তু বিপজ্জনক বাড়ি হিসেবে ঘোষণা সত্ত্বেও অফিসের ঠিকানা বদল করছেন না কেন? প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর ফৈয়াজ খানের উত্তর, ‘‘বহু বছর ধরে রয়েছি। কোথায় আর যাব? আমরা নিয়মিত ভাড়া দিয়ে থাকছি।’’

বাড়ির মালিক অঞ্জন বন্দোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘বাড়ি ভেঙে সংস্কারের বিষয়ে প্রোমোটারের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। আশা করছি, দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE