ছবি পিটিআই।
সকাল ৬টায় বর্ধমানের কাটোয়া থেকে গাড়িতে রওনা হয়ে দীপান্বিতা বিকেল চারটের উড়ান ধরতে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন সকাল আটটায়। সঙ্গে স্থানীয় মহকুমাশাসকের অনুমতিপত্র। দীপান্বিতা স্বামী গৌরব জৈনের সঙ্গে পুণেতে থাকেন। স্ত্রীকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতে লকডাউনের সকালে সাড়ে ছ’টায় কলকাতায় উড়ে এসেছিলেন গৌরব।
রাজ্য সরকারের অনুরোধে কলকাতা থেকে পুণের মধ্যে সরাসরি উড়ান বন্ধ। কী করে এলেন? গৌরব বলেন, ‘‘বুধবার সন্ধ্যায় পুণে থেকে হায়দরাবাদ পৌঁছে বিমানবন্দরে সারা রাত কাটিয়ে ভোরের উড়ানে কলকাতা।’’ ফেরার পথেও স্ত্রীকে নিয়ে হায়দরাবাদ হয়েই তিনি পুণেতে ফিরবেন।
লকডাউনে রাস্তায় আটকে যাওয়ার আশঙ্কায় বিকেল-সন্ধ্যার উড়ান ধরতেও অনেকে এ দিন ভোরের আলো ফোটার মুখে পৌঁছে গিয়েছেন বিমানবন্দরে। ইছাপুরের শর্মিষ্ঠা গোস্বামীর রায়পুরের উড়ান ছিল দুপুর তিনটেয়। তিনিও ভোর তিনটের সময়ে বাড়ি থেকে রওনা হন। বুধবারেই রায়পুর যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু, বুধবার দুপুরের উড়ান ধরতে পারেননি তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘রায়পুরে দিদির বাচ্চা হয়েছে। আমাকে সাহায্যের জন্য যেতেই হত। তাই আজকের টিকিট করিয়েছি।’’
বুধবার রাত পর্যন্ত লকডাউনের কলকাতা থেকে উড়ান চলাচল নিয়ে সংশয় ছিল। রাজ্য চায়নি। কিন্তু, উড়ান সংস্থাগুলি জানিয়ে দেয়, তারা উড়ান চালাবেই। রাতের দিকে রাজ্যের মনোভাবের পরিবর্তন হয়। রাত ১০টার পরে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয় ভলভো বাস পরিষেবা। বিমানবন্দর থেকে হাওড়া, শিয়ালদহ ও ধর্মতলা। নচেৎ বড়সড় সমস্যায় পড়তেন আহমেদ আলি। বেঙ্গালুরু থেকে সকালে কলকাতায় নেমে জানতে পারেন লকডাউনের কথা। চাকরি ছেড়ে চলে এসেছেন কলকাতায়। বাড়ি হলদিয়ায়। হাতে টাকাপয়সাও তেমন নেই। বিমানবন্দরে যে সাদা গাড়ি ছিল, তারা প্রায় পাঁচ হাজার টাকা চায়। আহমেদের কথায়, ‘‘এত টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই আমার।’’ শেষে ওই ভলভো বাসে করেই ধর্মতলা গিয়ে সেখান থেকে হলদিয়া রওনা দেবেন বলে ঠিক করেন।
বাস ছাড়াও ছিল হলুদ ট্যাক্সি ও সাদা গাড়ি। অন্য শহর থেকে কলকাতায় আসা যাত্রীদের সাহায্য করতে পুলিশকে দেখা যায় মাইক হাতে। বলা হয়, কোনও যাত্রী অসুবিধায় পড়লে পুলিশ সাহায্য করে দেবে। ট্যাক্সির লাইনেও যাতে দূরত্ব-বিধি মানা হয়, তা নজরে রেখেছিল পুলিশ। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার শেষ মুহূর্তে সাহায্য করেছে বলে যাত্রীদের সুবিধা হয়েছে।’’
বিমানবন্দরে এ দিন অ্যাপ-ক্যাবও পাওয়া গিয়েছে। যাদবপুরের বাসিন্দা অতনু ভট্টাচার্য চণ্ডীগড়ে এক আত্মীয়ের বিয়েতে যান ২৯ জুন। তিনি জানান, ফেরার টিকিট কাটার পরে লকডাউনের কথা জেনেছেন। এ দিন বিমানবন্দরে নেমে অ্যাপ-ক্যাব ধরে বাড়ি ফিরে যান অতনু। আবার চিনার পার্কের বাসিন্দা রুবিনা খাতুন বেঙ্গালুরু থেকে ফিরে বাড়িতে ফোন করে গাড়ি পাঠাতে বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আজ সকালে বেঙ্গালুরু থেকে উড়ান ধরার আগে জানতে পারি লকডাউনের কথা। আর কিছু করার ছিল না।’’
সারা দিনে এখন গড়ে ৯০টি উড়ান কলকাতা থেকে বিভিন্ন শহরে যাতায়াত করছে। তার মধ্যে বৃহস্পতিবার যাতায়াত করেছে ৮৪টি উড়ান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy