—ফাইল চিত্র
প্রায় তলানিতে ঠেকে যাওয়া যাত্রী-সংখ্যা আবার ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী। গত তিন-চার দিনে কলকাতা বিমানবন্দর দিয়ে গড়ে প্রায় আট হাজার যাত্রী যাতায়াত করেছেন। এতে আশার আলো দেখছে উড়ান সংস্থাগুলি। ওই সংস্থাগুলির কর্তারা জানিয়েছেন, যাত্রী-সংখ্যা বৃদ্ধির এই ধারা বজায় থাকলে জুলাই মাসে গিয়ে তাঁরা প্রায় ২০ শতাংশ উড়ান বাড়াতে পারবেন।
উড়ান সংস্থাগুলির ওই কর্তাদের বক্তব্য, প্রতিটি উড়ানের ক্ষেত্রেই যাত্রীদের সঙ্গে আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট থাকাটা বাধ্যতামূলক। কেন্দ্রীয় সরকার এই নিয়ম পরিমার্জন করলে যাত্রী-সংখ্যা এক লাফে আরও অনেকটাই বাড়বে।” তাঁদের দাবি, আরটি-পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে বিস্তর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে অনেকেই উড়ানযাত্রা এড়িয়ে যাচ্ছেন। এক কর্তার কথায়, “দেশ জুড়ে দাবি উঠেছে, যে সব যাত্রীর প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ় নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাঁদের সেই শংসাপত্রের ভিত্তিতে যাত্রার অনুমতি দেওয়া হোক। তা হলেই জুলাই থেকে যাত্রী-সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে।”
কিন্তু, তেমনটা হলে কি সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও আবার বেড়ে যাবে না? এই প্রশ্নটাও উঠতে শুরু করেছে। দু’টি প্রতিষেধক নেওয়ার পরেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এমনকি মৃত্যুও হয়েছে, এমন উদাহরণ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তো দু’টি প্রতিষেধক নেওয়া যে কোনও যাত্রীই উড়ানে ওঠার সময়ে পজ়িটিভ থাকতে পারেন। তখন?
বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই মতে, সে ক্ষেত্রে আরটি-পিসিআর বিধি শিথিলের কথা ভাবা যেতেই পারে। এখন উড়ান ধরার আগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নমুনা দিয়ে নেগেটিভ সার্টিফিকেট পেয়ে বিমানে উঠতে হয়। এই সময়সীমা আরও দু’-তিন দিন বাড়িয়ে দিতে পারে সরকার। কারণ, উড়ান সংস্থাগুলির প্রধান অভিযোগ, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নমুনা দিয়ে সময়মতো রিপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না যাত্রীরা। কখনও সোমবারের উড়ানের জন্য ৭২ ঘণ্টা আগে নমুনা দিয়ে রিপোর্ট পাওয়ার পরে দেখা যাচ্ছে, সেই উড়ান সময় বদলে মঙ্গলবার ছাড়বে। তখন সেই রিপোর্টের কোনও মূল্য থাকছে না।
‘ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান মানব সোনির কথায়, “আরটি-পিসিআরের বদলে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা চালু করা হোক। কারণ, সেই রিপোর্ট পেতে বড়জোর এক ঘণ্টা লাগছে। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। তিন ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে পৌঁছে সেখানেই পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে আপনি বিমানে উঠে যেতে পারবেন। আর পরীক্ষার খরচও তুলনায় কম।”
এ ক্ষেত্রে একটি ঝুঁকি অবশ্য থেকেই যাচ্ছে। আগে টিকিট কেটে পরীক্ষা করিয়ে যদি দেখা যায় যাত্রী পজ়িটিভ, তখন টিকিটের পুরো টাকাটাই নষ্ট হতে পারে। এর পাল্টা যুক্তি হল, আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ক্ষেত্রেও তো তা হতে পারে। রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে টিকিট বাতিল করতে হতে পারে। উড়ান সংস্থাগুলি জানাচ্ছে, অনেকেই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে টিকিট কাটছেন।
‘ট্র্যাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া’র পূর্ব ভারতের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবির কথায়, ‘‘এই কারণে টিকিটের দামও বাড়ছে। শেষ মুহূর্তে টিকিট অনেক বেশি দাম দিয়ে কাটতে হচ্ছে। ফলে যাত্রী-সংখ্যাও কমছে।’’
তবে আশার কথা শুনিয়েছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তাঁদের হিসেব বলছে, গত ১ জুন কলকাতা দিয়ে যাতায়াত করেছেন সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি যাত্রী। ২ জুন এই সংখ্যাটা ছিল ১১ হাজারের বেশি। ৩ জুনও যাত্রী-সংখ্যা সাত হাজারের বেশি ছিল। তাঁদের আশা, যাত্রী-সংখ্যা এ ভাবে বাড়তে থাকলে জুলাইয়ের গোড়ায় গিয়ে আবার গমগম করবে বিমানবন্দর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy