Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Man Beaten to Death in Bowbazar

বৌবাজারে পিটিয়ে খুন: নিজেকে রক্ষী বলে দাবি এক ধৃতের! কোর্টের প্রশ্ন, পুলিশ ডাকেননি কেন?

গণপিটুনিকাণ্ডে পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বুধবার ধৃত ১৫ জনকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁদের মধ্যেই শঙ্কর বর্মণ নামে এক ধৃত নিজেকে নিরাপত্তারক্ষী বলে দাবি করলেন আদালতে।

বৌবাজারের সেই হস্টেল।

বৌবাজারের সেই হস্টেল। —ফাইল চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ১৭:৩৬
Share: Save:

বৌবাজারে গণপিটুনিতে মৃত্যু-মামলায় এক ধৃত নিজেকে নিরাপত্তারক্ষী বলে দাবি করলেন আদালতে। তাঁর দাবির প্রেক্ষিতে পাল্টা পুলিশের আইনজীবীর প্রশ্ন, তা হলে পুলিশ ডাকা হল না কেন? নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে তিনি কেন গণপিটুনির ঘটনা থামাতে পারলেন না?

গণপিটুনিকাণ্ডে পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ায় ১০ জুলাই, বুধবার ধৃত ১৫ জনকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁদের মধ্যেই শঙ্কর বর্মণ (২৭) নামে এক ধৃত আদালতে দাবি করেন যে, তিনি হস্টেলেরই নিরাপত্তারক্ষী। এক সময়ে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন তিনি। ঘটনাচক্রে, তাঁরই মোবাইল চুরি গিয়েছিল ঘটনার দিন। এর পরেই পুলিশের আইনজীবী তাঁর ‘নৈতিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পুলিশের আইনজীবীর বক্তব্য, নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে তাঁর উচিত ছিল পুলিশ ডাকা। কিন্তু তিনি পুলিশ ডাকেননি। শুরুতেই পুলিশ ডাকলে গণপিটুনির ঘটনা আটকানো যেত। নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে তিনি সেই কাজে ব্যর্থ হয়েছেন।

অভিযুক্তদের আইনজীবী অবশ্য আদালতে দাবি করেন যে, গোটা ঘটনায় তাঁর মক্কেলদের কার কী ভূমিকা, তা-ই এখনও স্পষ্ট হয়নি। সেই কারণেই তাঁদের জামিন পাওয়া উচিত। আদালত যদিও সেই যুক্তি মানতে চায়নি। ঘটনার রাতেই গ্রেফতার হওয়া ১৪ জনকে জনকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। উত্তরবঙ্গ থেকে সম্প্রতি এক জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁকেও বুধবার আদালতে পেশ করা হয়েছিল। তাঁকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

আগের শুনানিতে আদালত জানিয়েছিল যে, ধৃতদের মধ্যে যাঁদের পরীক্ষা রয়েছে, তাঁরা পরীক্ষা দিয়েই আদালতে হাজির হতে পারবেন। সেই মতো ধৃতদের মধ্যে তিন জন বুধবার পরীক্ষা দিয়েছেন। তার পরেই তাঁদের আদালতে হাজির করানো হয়।

গত শুক্রবার বৌবাজারের হস্টেলে ইরশাদ আলম নামে ৩৭ বছরের যুবককে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। তিনি বেলগাছিয়ার বাসিন্দা। চাঁদনি চক এলাকায় একটি মোবাইলের দোকানে কাজ করে সংসার চালাতেন। অভিযোগ, বৌবাজারে উদয়ন হস্টেলের সামনের রাস্তায় শুক্রবার সকালে তাঁকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল। সূত্রের খবর, আগের দিন ওই হস্টেলের এক জনের মোবাইল চুরি গিয়েছিল। ইরশাদকে দেখে ছাত্রদের সন্দেহ হয় এবং তাঁরা তাঁকে ফুটপাথ থেকে টেনেহিঁচড়ে ভিতরে নিয়ে যান। অভিযোগ, হস্টেলের ভিতরে তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে বৌবাজার থানার পুলিশ পৌঁছলে প্রথমে দরজা খোলা হয়নি। পরে সেখানে পৌঁছয় মুচিপাড়া থানার পুলিশ। তার পর দরজা খোলা হলে পুলিশ ইরশাদকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, ‘হাইপোভলিউমিক শক’-এর কারণে মৃত্যু হয়েছে যুবকের। হৃদ্‌যন্ত্র-সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত বা ‘ফ্লুইড’ (তরল পদার্থ) না পৌঁছলে এই শারীরিক অবস্থা তৈরি হয়। মনে করা হচ্ছে, শরীরে একাধিক আঘাতের কারণে এ রকম হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Man Beaten to Death Bowbazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE