নিয়মভঙ্গ: হাওড়া স্টেশনে দড়ি টপকে চলছে যাতায়াত। বৃহস্পতিবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
সাড়ে সাত মাস পরে লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার প্রথম দিনই ভিড়ের চেহারা দেখে প্রবল আতঙ্কে ছিলেন তাঁরা। পরদিনই অবশ্য সেই আতঙ্কের জায়গায় দেখা গেল বিস্ময়। হাওড়া স্টেশনে রেলের কর্মীরা জানালেন, বৃহস্পতিবার ওই শাখায় যাত্রী-সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে! যা আবার শিয়ালদহ শাখার চিত্রের একেবারে বিপরীত। ওই শাখায় দ্বিতীয় দিনেও ভিড়ের চাপ কমেনি এতটুকু।
রেলের বক্তব্য, ট্রেন আসার বা ছাড়ার সময় বাদে ফাঁকাই ছিল হাওড়া স্টেশন। পূর্ব রেলের কর্তারা মনে করছেন, যাত্রীদের অনেকেই এখনও লোকাল ট্রেনে চড়তে চাইছেন না। তবে ট্রেনের সংখ্যা বাড়লে যাত্রী বাড়তে পারে বলে ধারণা তাঁদের। এ দিকে, যাত্রী কম হওয়ায় দ্বিতীয় দিনেই স্টেশন চত্বরে নিরাপত্তার কড়াকড়ি অনেকটা শিথিল হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু ব্যারিকেডও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আরপিএফ বা রেল পুলিশকর্মীর সংখ্যাও প্রথম দিনের তুলনায় ছিল অনেকটা কম।
বুধবারের ভিড় দেখে রেলকর্মীদের পাশাপাশি আতঙ্ক ছড়িয়েছিল যাত্রীদের মধ্যেও। ট্রেনের কামরায় তিন জনের আসনের মাঝেরটিতে ‘ক্রস’ চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়েছিল, যাতে কেউ না বসেন। কিন্তু অধিকাংশ যাত্রীই সেই নিয়ম মানেননি। তিন জনের আসনে চার জনও বসেছিলেন বহু ক্ষেত্রে।
এ দিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কম সংখ্যক যাত্রী নিয়েই ট্রেনগুলি যাওয়া-আসা করেছে। স্টেশন চত্বরে যাত্রীদের অপেক্ষার জায়গাতেও তেমন ভিড় ছিল না। ট্রেন আসার পরে যে হুড়োহুড়ি বুধবার দেখা গিয়েছিল, এ দিন তা-ও দেখা যায়নি।
এ দিন সকাল ৯টা ২০ মিনিটের হাওড়া-মেদিনীপুর লোকাল, ৯টা ৫০-এর কাটোয়া লোকাল, ১০টার ব্যান্ডেল লোকাল বা ১০টা ১০ মিনিটের শেওড়াফুলি লোকাল আসার পরে যে ভিড় স্টেশন চত্বরে হবে বলে ভাবা হয়েছিল, তা হয়নি। শেওড়াফুলি লোকাল ধরে আসা, তারকেশ্বরের বাসিন্দা প্রসূন ঘোষ বললেন, ‘‘এই সময়ে ট্রেনে যতটা ভিড় হয়, আজ তা হয়নি। আমরা তো বসেই এলাম। অনেকে এখনও লোকাল ট্রেন এড়িয়ে চলছেন।’’
প্রসূনবাবুর মতো অধিকাংশ যাত্রীই জানিয়েছেন, দিনের ব্যস্ত সময়ে লোকাল ট্রেনে যে ভিড় দেখা যায়, এ দিন তা ছিল না। সমর মান্না নামের এক নিত্যযাত্রী বললেন, ‘‘স্টেশনগুলি থেকে যাত্রী কম ওঠায় ভিড় ততটা হয়নি। আমরাও নিশ্চিন্তে এসেছি। হুড়োহুড়ি একদম নেই।’’
হাওড়ার সিনিয়র স্টেশন ম্যানেজার আনন্দ বর্ধনের কথায়, ‘‘বেলা ১১টা নাগাদ স্টেশনে এবং প্ল্যাটফর্মে ঠাসাঠাসি ভিড় থাকে। এ দিন কিন্তু তা দেখিনি। যাত্রী-সংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গিয়েছে।’’
এ দিকে, যাত্রী কম থাকায় প্রথম দিনের মতো অতটা তৎপর ছিলেন না রেলের কর্মীরাও। যাত্রীদের বেরোনোর ও ঢোকার জন্য ১ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত এলাকা তিন ভাগে ভাগ করা হলেও এ দিন দেখা যায়, বেশ কিছু ব্যারিকেড তুলে নেওয়া হয়েছে। রেল পুলিশ বা আরপিএফের সংখ্যাও তুলনায় কম। তবে এ দিনও স্টেশন চত্বরে ঘন ঘন জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়েছে। হাওড়া পুরসভার ১৪ জনের একটি দল স্টেশনের প্রবেশপথে প্রত্যেক যাত্রীর দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে তবে তাঁদের ঢুকতে দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy