নতুন গাড়ি বা মোটরবাইক কেনার পরে তার রেজিস্ট্রেশন ফি এবং রোড ট্যাক্স জমা দেওয়ার জন্য আর পরিবহণ দফতরের অফিসে ছুটতে হবে না। সংশ্লিষ্ট ডিলারের অফিস বা দোকানে বসেই সঙ্গে সঙ্গে মেটানো যাবে তা। দালাল-রাজের রমরমা ঠেকাতেই নতুন এই পদক্ষেপ রাজ্য পরিবহণ দফতরের।
এ বিষয়ে রাজ্য পরিবহণ অধিকর্তা তপনকান্তি রুদ্র বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থায় নতুন গাড়ি কেনার পরে সেখানে বসেই সরাসরি রেজিস্ট্রেশন ফি ও ট্যাক্স দেওয়া যাবে। তাতে ক্রেতাদের অনেক সুবিধা হবে।’’ পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কলকাতা-সহ সংলগ্ন হাওড়া, হুগলি ও দুই ২৪ পরগনার চালু হয়ে গিয়েছে এই পরিষেবা। আস্তে আস্তে বাকি জেলাতেও চালু হয়ে যাবে।
এত দিন নতুন গাড়ি বা মোটরবাইক কেনার পরে তার রেজিস্ট্রেশন ফি ও ট্যাক্স দিতে যেতে হত আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে। সেখানে গিয়ে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ছোটাছুটি করে, লাইনে দাঁড়িয়ে তবে টাকা জমা দিয়ে রসিদ ও নথি নিতে হত। ঝামেলা এড়াতে এ সব কাজে দালালের দ্বারস্থ হতেন অনেকেই। বিষয়টি এমন জায়গায় দাঁড়িয়ে গিয়েছিল যে, দালালদের এড়িয়ে পরিবহণ দফতরে গিয়ে এ সব কাজ করা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
নতুন ব্যবস্থায় আর সেই সমস্যা থাকছে না। একাধিক ট্রাকের মালিক ও পরিবহণ ব্যবসায়ী অজয় ঘোষ বলেন, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে এমনও দেখা গিয়েছে যে, টাকা নিয়ে ফি ও ট্যাক্সের জাল রসিদ দিয়েছে দালালেরা। পরে ধরা পড়েছে। নতুন ব্যবস্থায় সেই সব প্রতারণা থেকেও রেহাই মিলবে।’’
কেমন এই নতুন ব্যবস্থা?
পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ই-বাহন’ নামে অনলাইন এক পরিষেবার মাধ্যমে ইতিমধ্যেই পরিবহণের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা চালু হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় গাড়ি বা মোটরবাইকের ডিলার ও ফ্যাঞ্চাইজিদের জন্য একটি পোর্টাল শুরু করেছে পরিবহণ দফতর। তার জন্য একটি ‘আই ডি’ ও ‘পাসওয়ার্ড’ সরবরাহ করছে তারা। নতুন গাড়ি কেনার পরে ক্রেতার কাছ থেকে সমস্ত তথ্য ও প্রয়োজনীয় টাকাপয়সা নিয়ে নিচ্ছেন ডিলার। তার পরে সেখান থেকেই ওই পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে পরিবহণ দফতরে জমা পড়ছে ফি এবং রাজস্ব। সঙ্গে সঙ্গেই মিলছে পরিবহণ দফতরের রসিদ ও নথি। ক্রেতার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে তা। কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে গাড়ি ডিলারেরা ইতিমধ্যেই নতুন পরিষেবায় কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
উত্তর ২৪ পরগনা পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, জেলার বিভিন্ন জায়গায় ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গিয়েছে নতুন পরিষেবা। বারাসতের ময়নার গাড়ির ডিলার বিশ্বনাথ দাস বলেন, ‘‘নতুন পোর্টালেই এখন সব করে দিচ্ছি। এতে ক্রেতা ও আমাদের দু’তরফেই সুবিধা হচ্ছে। সময় বাঁচছে, হয়রানিও হচ্ছে না।’’ পরিবহণ দফতরের ওই জেলার আ়ঞ্চলিক অধিকর্তা সিদ্ধার্থ রায় বলেন, ‘‘ক্রেতা-বিক্রেতার সুবিধার পাশাপাশি আমাদের দফতরের উপরেও চাপ কমেছে। সব চেয়ে বড় কথা, এখানে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy