প্রতীকী ছবি।
গলির মোড়ের কল-পা়ড়ে অন্য দিনের মতোই স্নান করতে গিয়েছিলেন ‘ভাইজান’! হঠাৎ এলাকার পরিচিত চার যুবক তাঁর দিকে এগিয়ে যান। দু’পাশে দু’জন করে ঘিরে ধরেন। এর পরেই চলে চপার দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ! তাঁর চিৎকারে ছুটে আসেন আশপাশের বাসিন্দারা। কয়েক পা দূরের ঘরে তখন ঘুমিয়ে ছিলেন ছোট ভাই। দাদার চিৎকারে ঘুম ভেঙে ছুটে বেরিয়ে আসেন। দাদাকে ঘিরে থাকা চার জনের মধ্যে এক জন এগিয়ে এসে তাঁকেও কোপ দিতে যান। তবে, আশপাশের লোক চলে আসায় চপার হাতে পালিয়ে যায় চার জন।
‘গ্যাঙস অব ওয়াসিপুর’ থেকে ‘বুলেট রাজা’ একাধিক হিন্দি সিনেমার পরিচিত দৃশ্যের সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া গেলেও ঘটনাটি ঘটেছে খোদ কলকাতায়। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ জোড়াসাঁকো থানা এলাকার কলাবাগানের বাসিন্দা বছর চব্বিশের মহম্মদ তনবিরকে চপার দিয়ে কোপানোর অভিযোগ ওঠে এলাকারই চার যুবকের বিরুদ্ধে। আহতের পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।
রক্তাক্ত অবস্থায় তনবিরকে পুলিশ উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি জরুরি বিভাগে ভর্তি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তনবিরের হাতে, পায়ে এবং কাঁধে চোট লেগেছে। ক্ষত গভীর হওয়ায় কয়েক ইউনিট রক্ত দিতে হয়েছে। তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে অস্ত্রোপচার করতে হবে।
তনবিরের ভাই এহসান আলি এ দিন জানান, অভিযুক্ত চার যুবক তাঁদের পূর্ব পরিচিত। ফল ব্যবসায়ী তনবিরের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরেই নানা কারণে তাঁদের সঙ্গে বচসা চলছে। গত সপ্তাহে তারা তনবিরের বাড়িতেও হামলা চালায়। তনবিরকে না পেয়ে তাঁর মাকে মারধর করে বলেও অভিযোগ। এহসানের কথায়, ‘‘পুরনো শত্রুতার জেরেই দাদাকে খুনের চেষ্টা। আগেও পরিবারের অনেক ক্ষতি করেছে ওরা।’’ হাসপাতালের বিছনায় শুয়ে তনবির বলেন, ‘‘যারা চপার দিয়ে মারল তারা পরিচিত। বাড়ির আশপাশেই থাকে। আগেও আমার পরিবারের নানা ক্ষতি করেছে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, তনবিরের সঙ্গে মিস্টার নামে স্থানীয় এক যুবকের দীর্ঘদিন ধরে সমস্যা রয়েছে। এর আগেও একাধিক বার দু’জনের মধ্যে গোলমাল হয়েছে। এমনকি তনবিরের অন্য এক ভাইকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। এলাকার অধিকাংশ যুবকেরা দু’জনের ‘দলে’ বিভক্ত। সে বার কয়েক জন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতার হস্তক্ষেপে ঝামেলা মিটে যায়। তবে, কয়েক মাস আগে তনবিরের ভাইকে মারধর করে মিস্টারের দলের ছেলেরা। এর পরেই সমস্যা চরমে ওঠে। একে অপরের বা়ড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু হয়। এ দিন কলাবাগান এলাকায় গিয়ে অবশ্য মিস্টারকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy