ছবি: সংগৃহীত
এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই বৃত্তির টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দু’মাস পেরিয়ে গেলেও রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কয়েক লক্ষ সংখ্যালঘু পড়ুয়া এখনও সেই টাকা না পাওয়ায় বিপাকে। যদিও রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান পি বি সেলিম বলছেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতির জন্য বৃত্তি পেতে দেরি হয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই ৩১ লক্ষ পড়ুয়ার জন্য বৃত্তির টাকা ছাড়া হয়েছে। বাকি পড়ুয়াদের টাকাও শীঘ্রই ছাড়া হবে। আশা করছি, দিন দশেকের মধ্যেই বৃত্তির টাকা পড়ুয়ারা হাতে পেয়ে যাবেন।’’
গত বছর রাজ্যের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের প্রায় ৩৭ লক্ষ পড়ুয়া তিন রকমের বৃত্তির টাকা পেয়েছিলেন। এর জন্য রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছিল প্রায় ৬০০ কোটি টাকা। ২০২০ সালে বৃত্তির জন্য যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদের চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে সেই টাকা পেয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তা এখনও হাতে পাননি পড়ুয়ারা। রাজ্যের মাদ্রাসা ছাত্র সংগঠনের সভাপতি সাজিদুর রহমানের অভিযোগ, ‘‘রাজ্যের লক্ষ লক্ষ সংখ্যালঘু পড়ুয়া বৃত্তির টাকা না পেয়ে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি। কোভিড পরিস্থিতিতে তাঁদের পরিবার আর্থিক ভাবে বিপন্ন। এই অবস্থায় ওই টাকা পেলে তাঁরা উপকৃত হবেন। বৃত্তির টাকা যাতে অবিলম্বে হাতে আসে, সে বিষয়ে নিগমকে চিঠি লিখে জানিয়েছি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে বেশির ভাগ সময়ে সেই আবেদন গ্রাহ্য হচ্ছে না। পরে সংশোধন করে পাঠালেও তা মঞ্জুর হচ্ছে না। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যও নিগমকে বলেছি।’’ নিগমের তরফে এই অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, মুসলিম, পার্সি এবং শিখ সম্প্রদায়ের মেধাবী পড়ুয়াদের জন্য দেওয়া হয় তিন রকম বৃত্তি। ‘প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ’ দেওয়া হয় প্রথম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের। পড়ুয়ার খরচ বিবেচনা করে এই বৃত্তিতে বছরে ১১০০ টাকা থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে পড়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার পরিবারের বার্ষিক আয় হতে হবে সর্বাধিক দু’লক্ষ টাকা। এ ছাড়া, একাদশ শ্রেণি থেকে গবেষণারত পড়ুয়াদের জন্য রয়েছে ‘পোস্ট ম্যাট্রিক স্কলারশিপ’। রাজ্যের স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানে উচ্চ মাধ্যমিক, আইটিআই, ডিপ্লোমা, স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এম ফিল, বিএড করছেন— এমন পড়ুয়ারাই এই বৃত্তি পাবেন। বৃত্তির পরিমাণ বছরে সর্বাধিক ১৬,৫০০ টাকা।
পেশাদার ও কারিগরি পাঠক্রমের পড়ুয়াদের জন্য রয়েছে ‘মেরিট কাম মিনস স্কলারশিপ’, যা পাবেন রাজ্য সরকার স্বীকৃত কোনও প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর বা অন্য কোনও কারিগরি বিষয়ে পাঠরত পড়ুয়ারা। এ ছাড়া আইআইটি, আইআইএম, এনআইটি, এনআইএফটি, আইআইএফটি ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনার সুযোগ পেলেও বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে। এ ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের পরিবারের বার্ষিক আয় সর্বাধিক আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy