বসেছে সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল। — নিজস্ব চিত্র।
রেলই একমাত্র মন্ত্রক যার সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ সরাসরি। তাই রেলকে আরও পরিবেশ বান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি, বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে রেল মন্ত্রকও। তারই অঙ্গ হিসেবে মেট্রোর কবি সুভাষ ও মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশন দু’টিকে গ্রিন স্টেশন হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা। গত ৯ সেপ্টেম্বর রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন্দ্র গোহাইঁ ওই দুই স্টেশনের সৌর বিদ্যুতের প্যানেলগুলি উদ্বোধন করেন। সেই দিন থেকেই মেট্রো কর্তৃপক্ষ ওই দুই স্টেশনে তৃতীয় লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়া বাকি সব কাজ করছেন নিজেদের তৈরি সৌর বিদ্যুৎ দিয়েই।
শুধু ওই দুই স্টেশনই নয়, সৌর বিদ্যুতের প্যানেল বসানো হয়েছে নোয়াপাড়া স্টেশনেও। সেখানে তৈরি হচ্ছে .০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আর কবি সুভাষ ও মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে তৈরি হচ্ছে যথাক্রমে .০৫ এবং .০৪ মেগাওয়াট। তিনটি স্টেশন মিলিয়ে তৈরি হওয়া মোট বিদ্যুৎ মেট্রো কর্তৃপক্ষ এখন নিয়মিত পাঠাচ্ছেন মূল গ্রিডে। বাকি স্টেশনগুলিতেও শীঘ্র যাতে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার শুরু করা হয়, তার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেট্রোর জেনারেল ম্যানেজার মূলচাঁদ চহ্বাণ।
হঠাৎ সৌর বিদ্যুৎ কেন? মেট্রো কর্তাদের বক্তব্য, এর লক্ষ্য দু’টি— এক দিকে খরচ বাঁচানো আর অন্য দিকে পরিবেশ-বান্ধব হওয়া। জানা গিয়েছে, দিনে .০৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরি করে ব্যবহার করার জন্য বছরে বিদ্যুৎ বিল বাবদ মেট্রোর খরচ বাঁচবে ৫০ লক্ষ টাকা।
মেট্রো সূত্রেই বলা হয়েছে, উৎপাদিত সৌর বিদ্যুতের পরিমাণ খুব একটা বেশি না হলেও শুধুমাত্র তা তৈরির কারণেই রোজ বাতাসে ৬৮৬ মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড কম ঢুকছে। ফলে মহানায়ক উত্তমকুমার ও কবি সুভাষ, এই দু’টি স্টেশন এখন পুরোপুরি পরিবেশ-বান্ধব।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গে রেল মন্ত্রকও রেলকে দূষণ মুক্ত করতে নানা পরিকল্পনা নিয়েছিল। সেগুলি সফল করতে ইতিমধ্যেই রেল বোর্ডে একটি পৃথক ডিরেক্টরেট তৈরি করা হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে ওই ডিরেক্টরেট রেলের বিভিন্ন জোনকে বেশি করে ‘গ্রিন এনার্জি’ তৈরি করার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছিল। মেট্রোর এই পরিকল্পনা তারই অঙ্গ।
মেট্রো সূত্রে খবর, মহায়ানক উত্তমকুমার স্টেশনে আলো, পাখা এবং অন্য কাজের জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন ১০০০ ইউনিট বিদ্যুৎ। আর কবি সুভাষ স্টেশনে প্রয়োজন ৮০০ ইউনিট। অর্থাৎ দুই স্টেশনের জন্য প্রয়োজন মোট ১৮০০ ইউনিট। মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই দুই স্টেশনের মাথায় সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য আলাদা আলাদা করে যে প্যানেল বসানো হয়েছে, তা থেকেই এখন প্রতিদিন ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ তৈরি হচ্ছে। ফলে মহানায়ক উত্তমকুমার এবং কবি সুভাষে আমরা নিজেদের তৈরি সৌর বিদ্যুৎ দিয়েই এখন কাজ চালাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy