ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে শহর কলকাতায়। সেই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মাস কাউন্সেলিংয়ের পরামর্শ দিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শনিবার ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচির শেষে বৌবাজারে ঘটে যাওয়া গণপিটুনির ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
মেয়র বলেন, ‘‘এটা ক’দিন ধরেই হচ্ছে। বিভিন্ন গুজবকে কেন্দ্র করে গণপিটুনি দেওয়া হচ্ছে। মানুষ নিজের ধৈর্য হারিয়ে ফেলছে। আমি গণপিটুনি দেব কেন? আমার যদি কোনও অভিযোগ থাকে, তা হলে আমি পুলিশকে জানাব। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করবে। তদন্ত করবে। যদি অভিযোগ সত্যি হয়, তা হলে অপরাধীর শাস্তি হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আইন নিজের হাতে নেওয়া একটা মারাত্মক বিষয়। কেউ ছেলেধরার নামে মারছে, কেউ ডাইনি অপবাদে মারছে। এখানে দেখলাম, মোবাইল চোর বলে মারছে।’’
আইন হাতে তুলে নেওয়ার এই প্রবণতা কি এ কথা প্রমাণ করে যে, পুলিশ-প্রশাসনের উপর সাধারণ মানুষ আস্থা হারাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ফিরহাদ বলেন, ‘‘মানুষ ধৈর্য হারিয়ে ফেলছে, পুলিশ পর্যন্ত যাওয়ার মানসিকতাই নেই। ঘটনা ঘটেছে, এক্ষুনি কিছু করতে হবে। এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক এক সঙ্কেত। আমি সাধারণ মানুষকে বলব, আইন নিজের হাতে নেবেন না। এটা পুলিশের ব্যর্থতা নয়। তার জন্য একটা মাস কাউন্সেলিং দরকার। মারাটা একটা হুজুগ হয়ে যাচ্ছে। যাদবপুরেও এমন একটা ঘটনা ঘটেছিল। কেন করা হচ্ছে? একটা সিভিলাইজ়ড সোসাইটিতে থাকি, হয়তো আমার ফোন হারিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি এতটাই অধৈর্য যে, কাউকে মারতে শুরু করে দিলাম, এটা হতে পারে না।আজ আমি কাউকে মারছি, কাল আমি কোথাও গেলে অন্যেরা আমাকে মারবে। এ ভাবে চললে সমাজ শেষ হয়ে যাবে। মাস কাউন্সেলিং এই জন্যই প্রয়োজন।’’
প্রসঙ্গত, কলকাতা বৌবাজারের উদয়ন হস্টেলে শুক্রবার এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানতে পারে, মোবাইল চোর সন্দেহে ইরশাদ আলমকে মারধর করা হয়েছিল। তাঁকে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে গিয়ে সেখানকার আবাসিকেরা মারধর এবং হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ পৌঁছে যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিল। কিন্তু সেখানে যুবকের মৃত্যু হয়। সেই ঘটনায় শুক্রবারই হস্টেলের ১৪ জন আবাসিককে গ্রেফতার করেছিল মুচিপাড়া থানার পুলিশ। বৌবাজারের হস্টেলে যুবককে পিটিয়ে মারার ঘটনায় ধৃত ১৪ জনকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। শনিবার তাঁদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। পুলিশের তরফে ১৪ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হয়। আদালত জানিয়েছে, আপাতত আগামী ৪ জুলাই পর্যন্ত ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে। উল্লেখ্য, গত কয়েক দিনে রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় ছেলেধরা সন্দেহে গণ-নিগ্রহের শিকার হয়েছেন কয়েক জন। শনিবার সকালে সল্টলেকে মোবাইল চোর সন্দেহে পিটিয়ে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy