গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কলেজে লেখাপড়ার সময়ে নিয়মিত মডেলিং করতেন গুসকরার হুসনে শবনম। অভিনয়ের জগতে পা রাখতে তাই কলকাতায় আসতে চেয়েছিলেন তিনি। দক্ষিণ কলকাতায় একটি বাড়ি ভাড়া নেওয়াও প্রায় ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু হাওড়া স্টেশনে নেমে হুসনে জানতে পারেন ওই মহিলা তাঁকে বাড়ি ভাড়া দেবেন না।
রুপোলি পর্দায় অভিনয়ের ইচ্ছে নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন বোলপুরের কাজল গুপ্ত (পরিবর্তিত নাম)। কিছু দিন পেয়িং গেস্ট হিসেবে কাটানোর পরে বন্ধুরা মিলে দক্ষিণ কলকাতাতেই একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কাজল অভিনয় করেন জেনেই তাঁকে আর ভাড়া দিতে চাননি ফ্ল্যাটের মালিক। শেষ পর্যন্ত রাতে ‘ঠিক’ সময়ে বাড়ি ফেরার এবং ‘সংযত জীবনযাপন’ করার ‘মুচলেকা’ দিতে হয়েছিল কাজলকে। তার পরেই মিলেছিল ফ্ল্যাট ভাড়া।
দু’টি ঘটনাই বছর তিনেক আগের। ২০১৯ সালেও এক নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রীর ফেসবুক পোস্ট দেখে জানা গেল পরিস্থিতি এখনও একই রকম। রুপোলি পর্দা নিয়ে উন্মাদনা থাকলেও সেই জগতে কাজ করা মহিলাদের সম্বন্ধে এখনও উদারমনা হতে পারেননি কলকাতারই অনেকেই
অভিনেত্রী তুহিনা দাস তাঁর ফেসবুক পোস্টে জানাচ্ছেন, সম্প্রতি একই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকেও। অভিনয় করেন বলেই, পছন্দমতো জায়গায় মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছেন না কাঁথির মেয়ে তুহিনা।
শবনম কিংবা কাজলের মতো তুহিনা একেবারেই নতুন মুখ নন। ইতিমধ্যেই বিশিষ্ট পরিচালকদের ছবিতে কাজ করেছেন তুহিনা। তাঁর কথায়, ‘‘প্রায় সাত বছর কলকাতায় আছি। বর্তমানে কসবা এলাকায় ভাড়া থাকি। কাজের সুবিধের কারণে চাইছিলাম গল্ফ গ্রিনের দিকে থাকতে।’’ তাঁর অভিযোগ, এক কামরার ফ্ল্যাটের জন্য মাসিক ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ‘‘এক মাসে ২০টারও বেশি ফ্ল্যাট দেখেছি। কেউ প্রচুর ভাড়া চাইছেন। কেউ বলছেন আমি অভিনয় করি বলেই আমাকে বাড়ি ভাড়া দেবেন না।’’
তুহিনা অবশ্য জানান, অভিনয়ের পেশায় থাকা মেয়েদের ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়ার ব্যাপারে ছুতমার্গ এলাকাভিত্তিক। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘দক্ষিণে এই সমস্যাটা রয়েছে। অথচ বাংলা ছবির আঁতুড়ঘর টালিগঞ্জেই। আমি নিউ টাউনে কিছু দিন ভাড়া ছিলাম। সেখানে এমন সমস্যা ছিল না।’’
তুহিনা যাঁর মাধ্যমে ফ্ল্যাট খুঁজছেন সেই ব্যক্তির কথায়, ‘‘তুহিনাকে অনেকগুলি ফ্ল্যাটই দেখিয়েছি। কিন্তু গল্ফ গ্রিনের অনেকেই অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ভাড়া দিতে চান না। কারণ তাঁদের জীবনযাত্রা।’’ বাড়ি ভাড়া দেন এমনই এক জন জ্যোতি চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘ভাড়াটের জীবনযাপনের কারণে অনেক সময়ে দায় এসে পড়ে বাড়ির মালিকের উপর। ফলে অনেকে অভিনয় জগতের লোকজনকে এড়িয়ে চলেন।’’
ভাড়াটের সঙ্গে বাড়িমালিকের যোগাযোগ করানোর কাজ করেন অভিজিৎ সাহা। তিনি বলেন ‘‘অনেক সময়ে দেখা যায় একা থাকবেন বলে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে পরে প্রতিদিন রাতেই ঘরে পার্টি কিংবা হইহুল্লোর চলে। যে কারণে মডেলিং কিংবা অভিনয়ের সঙ্গে জড়িতদের অনেকেই ভাড়া দিতে চান না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy