স্কুল খোলার প্রথম দিনে ছাত্রীর হাতে ফুল দিয়ে আদর শিক্ষিকার। হাওড়া ময়দান সংলগ্ন একটি স্কুলে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
কোথাও শাঁখ বাজিয়ে, কোথাও স্কুলের গেট বেলুন দিয়ে সাজিয়ে পড়ুয়াদের বরণ করে নেওয়া হল। দীর্ঘ দিন বাদে স্কুল খোলায় প্রায় সব স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যেই দেখা গেল পুনর্মিলনের মেজাজ। মঙ্গলবার মূলত এমনই পরিবেশ ছিল শহরের সরকারি, সরকার-পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে। কিন্তু বহু বেসরকারি স্কুলেরই প্রথম দিনটা কাটল সাদামাটা ভাবে।
শহরের কয়েকটি বেসরকারি স্কুলে প্রথম দিনে উপস্থিতির হার ছিল চোখে পড়ার মতো কম। যার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কয়েকটি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, সিবিএসই বোর্ডের দ্বাদশ শ্রেণির মাইনর বিষয়ের পরীক্ষা শুরু হওয়ায় পরীক্ষার্থীরা ছাড়া কেউ স্কুলে আসেনি। তাই এত কম উপস্থিতি। কোথাও আবার বলা হয়েছে, করোনা সংক্রমণের আতঙ্কে অভিভাবকেরা সন্তানদের পাঠাননি। অন্য একটি স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের স্কুলে নিয়মিত অনলাইন ক্লাস হয়। তাই অনেকে তাতেই বেশি ভরসা রাখছেন।
লা মার্টিনিয়ার স্কুলের সচিব সুপ্রিয় ধর জানালেন, তাঁদের স্কুলে নবম এবং একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ২৫-৩০ শতাংশ স্কুলে এসেছিল। কেন এত কম পড়ুয়া? সুপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘এখনও পড়ুয়াদের প্রতিষেধক হয়নি। সম্ভবত সেই কারণেই অভিভাবকেরা স্কুলে পাঠাতে ভরসা পাননি।’’ একই কথা বলছেন ক্যালকাটা গার্লস স্কুলের অধ্যক্ষা বাসন্তী বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘নবম এবং একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ৫০ শতাংশ স্কুলে এসেছে। অভিভাবকেরা পাঠাতে চাইছেন না বলেই পড়ুয়ারা কম এসেছে।’’ সাউথ পয়েন্ট এবং শ্রীশিক্ষায়তন স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন তাদের স্কুলে দ্বাদশের বোর্ড পরীক্ষা থাকায় অন্য পড়ুয়াদের আসতে বারণ করা হয়েছিল। সাউথ পয়েন্টে এ দিন এসেছে দ্বাদশের ৫১ জন পরীক্ষার্থী।
তবে বেসরকারি স্কুলগুলির মধ্যে ব্যতিক্রমী ডন বস্কো পার্ক সার্কাস, ডিপিএস রুবি পার্কের মতো কিছু স্কুল। যেখানে মঙ্গলবার পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ছিল ভালই।
অন্য দিকে, ঠিক উল্টো ছবি দেখা গেল সরকারি স্কুলগুলিতে। যোধপুর পার্ক বয়েজ়ে শাঁখ বাজিয়ে পড়ুয়াদের অভ্যর্থনা জানানো হল। তাদের স্বাগত জানাতে খিদিরপুর অ্যাকাডেমির গেট সাজানো হল বেলুন এবং ফুল দিয়ে। কেষ্টপুরের দেশপ্রিয় বালিকা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষিকা নাজ়রিন নাহার জানাচ্ছেন, মেয়েদের হাত জীবাণুমুক্ত করিয়ে খেতে দেওয়া হয়েছে কেক।
স্কুল দেখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসছেন বলে এক সময়ে জানতে পারে মিত্র ইনস্টিউশন, ভবানীপুরের পড়ুয়ারা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আসেননি মুখ্যমন্ত্রী। দশম শ্রেণির এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসতে পারছি না। টিফিন ভাগ করে খেতে পারছি না। তবে এ সব করতে না পারলেও এত দিন পরে স্কুলে আসতে পেরেও খুব ভাল লাগছে।’’
ছেলেদের এই খুশির কথা মানছেন শিয়ালদহ টাকি বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক। তিনি জানাচ্ছেন, ছেলেরা খুব খুশি। তবে খেলাধুলো করতে না পেরে সামান্য মনখারাপ ছিল ওদের। খেলার পিরিয়ডে যোগব্যায়াম করেছে ওরা। পাঠাগারে গিয়ে বই পড়েছে। ওদের ফেরার আনন্দে পড়ুয়াদের মিষ্টি খাওয়ানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy