এ ভাবেই পুড়ে ছাই পরপর ঝুপড়ি।
সকাল সাড়ে সাতটা। ঘরে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছিল একরত্তি ধৃতি বড়ুয়া। সঙ্গে ছিলেন দিদিমা। হঠাৎ টালির চালের কড়িবড়গায় জ্বলে ওঠে আগুন। মুহূর্তে ঘর ভরে যায় কালো ধোঁয়ায়। ধৃতিকে কোলে তুলে বাইরে বেরোতে যান তার দিদিমা মিনা বড়ুয়া। কিন্তু ততক্ষণে গোটা ঘরে আগুন ধরে গিয়েছে।
বিছানা, জামাকাপড়, আলমারি, কাঠের দরজা দাউ দাউ করে জ্বলছে। কালো ধোঁয়ায় বেরোনোর দরজাও দেখতে পাচ্ছিলেন না মিনা। অবশেষে তিনি শাড়ির আঁচলে ধৃতিকে জড়িয়ে কোনও মতে বাইরে আসেন। পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মোমিনপুরের বড়ুয়াপাড়া বস্তিতে। ঘটনায় সাতটি ঘর ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। কোনও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।
দমকল সূত্রে খবর, এ দিন ১৩ নম্বর ব্রনফেল্ড রো-এর একটি বন্ধ ঘরে প্রথমে আগুন লাগে। পাশাপাশি ঘর থাকায় দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে আরও ছ’টি ঘরে। আগুন লেগে যায় পাশের একটি গাছেও। স্থানীয়েরা জানান, ঘরগুলিতে মোট দশটি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। দমকলকে খবর দেওয়া হলেও দেরিতে আসায় স্থানীয় যুবক ও একবালপুল থানার পুলিশকর্মীরা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। সিলিন্ডার বাইরে বার করে আনা হয়। দমকলের এক অফিসার জানান, আশপাশে ৫০টি ঘর ছিল। সিলিন্ডার বার করা না হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ঘরের সব আসবাব, জামাকাপড় ছাই হয়ে গিয়েছে। দমকলের অনুমান, শট সার্কিট থেকেআগুন লাগে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মহম্মদ আলম বলেন, ‘‘ পরিদর্শনে এসেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
ধৃতিকে কোলে নিয়ে দিদিমা মিনা বড়ুয়া। সোমবার, মোমিনপুরে।
প্রাণে বেঁচে গেলেও আতঙ্ক কাটেনি মিনাদেবীর। বললেন, ‘‘ঘরের সমস্ত জিনিস পুড়ে গিয়েছে। কিন্তু আমার সব থেকে প্রিয় মানুষকে বাঁচাতে পেরেছি। এটাই স্বস্তির।’’ তিনি জানান, এলাকার মানুষ এবং পুলিশ যে ভাবে সাহায্য করেছে, সেটা সচরাচর দেখা যায় না। এলাকার ছেলেরাই প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সুস্থ রয়েছে ধৃতিও।
—নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy