তিন বাংলাদেশি যাত্রীকে নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে হুলস্থুল বেঁধে গেল রবিবার সকালে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ওই তিন যাত্রীর মধ্যে এক মহিলা ও তাঁর ছোট ছেলের মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। সেই কারণেই বিমানে উঠতে দেওয়া হয়নি তাঁদের।
পুলিশ সূত্রের খবর, চট্টগ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের জিন্নাত আরা তাঁর দুই ছেলে ৩০ বছরের মহম্মদ ইলিয়াস এবং ২৪ বছরের মহম্মদ শাহদাদ হোসেনকে নিয়ে রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছন। বাংলাদেশের এক বেসরকারি বিমানসংস্থার উড়ানে চট্টগ্রাম যাবেন বলে বিমানবন্দরেই টিকিট কাটেন।
সূত্রের খবর, সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বিমানবন্দরে ঢোকার পর থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন জিন্নাত ও শাহদাদ। অভিযোগ, অন্য যাত্রীদের ধরে চিৎকার জুড়ে দেন তাঁরা। বিমানসংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দু’জনের আচরণ দেখে সতর্ক হয়ে যান নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ কর্মীরা। বিমানসংস্থা এবং অভিবাসন অফিসারদের ডেকে পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হয়, জিন্নাত ও শাহদাদকে বিমানে উঠতে দেওয়া সমীচীন হবে কি না।
সকাল ১১টা নাগাদ বিমানটি ছাড়ার কথা ছিল। ওই দু’জনের আচরণ দেখে তাঁদের বিমানে তোলা ঝুঁকির হয়ে যাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট অফিসারেরা। জানানো হয়, মাঝ আকাশে দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ আচমকা অশান্ত হয়ে উঠলে বড়সড় সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঠিক হয়, তাঁদের বিমানে উঠতে দেওয়া হবে না। বিপাকে পড়ে যান ইলিয়াস।
এখানেই শেষ নয়। ইলিয়াস মা ও ছোট ভাইকে নিয়ে বিমানবন্দরের বাইরে এসে চেয়ারে বসেন। দেশে ফেরার ব্যবস্থা করতে তিনি ফোনে কথা বলতে থাকেন। সেই সুযোগে জিন্নাত ও শাহদাদ সেখান থেকে পালিয়ে যান। ইলিয়াস তা লক্ষ্য করেন একটু পরে। মা ও ভাইকে খুঁজে না পেয়ে তিনি স্থানীয় থানায় গিয়ে সাহায্য চান। ইলিয়াসের অনুরোধে পুলিশও খুঁজতে শুরু করে তাঁদের। শেষে পুরনো টার্মিনাল বিল্ডিং-এর কাছে একটি ঝোপের ভিতরে খুঁজে পাওয়া যায় ওই দু’জনকে। ইলিয়াসের কাছে থাকা ওষুধ খাইয়ে সাময়িক ভাবে শান্ত করা হয় তাঁদের। ইলিয়াস পুলিশকে জানান, মানসিক রোগের চিকিৎসার জন্যই মা ও ভাইকে নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, ২৬ হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কেটেছিলেন ইলিয়াস। ফেরত পেয়েছেন ৮ হাজার টাকা। বিমানে মা ও ভাইকে নিয়ে যাওয়ার উপায় নেই দেখে বিমানবন্দর থানার পুলিশই গাড়ির ব্যবস্থা করে দেয় ইলিয়াসকে। তাতে করে এ দিন মা ও ভাইকে নিয়ে ইলিয়াস বনগাঁ রওনা হয়ে যান। সেখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে যাবেন চট্টগ্রামের বাড়িতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy