Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ছানা মৃত, বুঝতেই পারছে না সিংহী

রাজ্য জু অথরিটি-র সদস্য-সচিব বিনোদকুমার যাদব জানান, সম্প্রতি শ্রুতি একটি ছানার জন্ম দিয়েছিল। জন্মের ক’দিন পর থেকেই শ্রুতির দুধ তৈরি হচ্ছিল না। ছানাকে ছেড়ে সরেও গিয়েছিল সে। চিড়িয়াখানার কর্মীরা কৃত্রিম দুধ খাইয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি। 

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪৪
Share: Save:

কোলের ছানা যে আর নেই, তা বুঝতেই পারছে না মা! দিব্যি খাচ্ছে, ঘুমোচ্ছে, মেঝেতে শুয়ে গড়াচ্ছে। সে শ্রুতি, আলিপুর চিড়িয়াখানার ভারতীয় সিংহী। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মারা গিয়েছে তার সদ্যোজাত ছানা।

রাজ্য জু অথরিটি-র সদস্য-সচিব বিনোদকুমার যাদব জানান, সম্প্রতি শ্রুতি একটি ছানার জন্ম দিয়েছিল। জন্মের ক’দিন পর থেকেই শ্রুতির দুধ তৈরি হচ্ছিল না। ছানাকে ছেড়ে সরেও গিয়েছিল সে। চিড়িয়াখানার কর্মীরা কৃত্রিম দুধ খাইয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও তা সফল হয়নি।

গত বছরের অক্টোবর মাসে হায়দরাবাদ থেকে ভারতীয় সিংহ-দম্পতি বিশ্বাস ও শ্রুতিকে আলিপুরে আনা হয়েছিল। গত বছর বিশেকের মধ্যে কলকাতায় কোনও সিংহশাবক জন্মায়নি। ফলে আলিপুরে বিশ্বাস ও শ্রুতির পরিবার বাড়বে, এই আশাতেই বুক বেঁধেছিলেন চিড়িয়াখানার কর্তারা।

শনিবার আলিপুর চিড়িয়াখানার এক কর্তা আক্ষেপ করে বলছেন, ‘‘ওটা ওরই যে সন্তান, শ্রুতি তা বুঝতেই পারল না! জন্ম থেকে ছানাটিও দুর্বল ছিল। মাত্র ৭৫০ গ্রাম ওজন ছিল ওর।’’ সাধারণত, সুস্থ সিংহশাবকের গড় ওজন হয় ১২০০ গ্রামের মতো। চিড়িয়াখানার অভিজ্ঞ কর্মীরা বলছেন, অনেক সময়েই পশুদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে পালকেরাই (কিপার) মায়ের যত্ন দিয়ে শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন।

জু অথরিটি সূত্রের খবর, বর্তমানে মায়ের দুধের মতো পশুদের জন্য কৃত্রিম দুধ বেরিয়ে গিয়েছে। তাতে প্রোটিন ও ফ্যাট বেশি থাকে। কোলোস্ট্রামও থাকে। সেই দুধ সিংহশাবকটিকে খাওয়ানো হয়েছিল। তবু শেষ রক্ষা হয়নি। শাবকটির লেজের দিকে একটি ক্ষতও নজরে এসেছে। সম্ভবত, শ্রুতির দাঁতের আঘাতে সেটি হয়েছে।

নিজের ছানাকে শ্রুতি এমন দূরে সরিয়ে দিল কেন? পশু-বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, বাঘ, সিংহের মতো ‘বিগ ক্যাট’-দের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা বিরল নয়। বিশেষত, প্রথম বার মা হওয়ার ক্ষেত্রে এমন আগেও দেখা গিয়েছে। চিড়িয়াখানার প্রাক্তন পশু-চিকিৎসক শিবাজী ভট্টাচার্যের মতে, সন্তান পালনের অভিজ্ঞতা না থাকলে এমন ঘটতে পারে। খাঁচায় থাকা পশুদের উপরে পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিও প্রভাব ফেলে। আশপাশে মানুষজন দেখে অনেক সময়েই ছানাটির সঙ্গে একাত্ম বোধ করতে পারে না পশুরা, দূরে সরিয়ে দেয়।

তবে প্রথম শাবকের মৃত্যুর পরেও আশা ছা়ড়তে নারাজ চিড়িয়াখানার কর্তারা। তাঁদের আশা, ফের কাছাকাছি আসবে পশুরাজ দম্পতি। খাঁচার ভিতরে ফের আসবে নতুন প্রাণ। আপাতত তারই অপেক্ষায় আলিপুর!

অন্য বিষয়গুলি:

Lioness Wildlife Alipore Zoo Death Cub
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE